আদিবাসীদের জোতজমা হস্তান্তরে বিধিনিষেধ আরোপের উদ্দেশ্য বা কারণ

 

    আদিবাসী রায়তদের জোতজমা হস্তান্তর করণের ক্ষেত্রে কতিপয় বিধিনিষেধ আরোপের পশ্চাতে অন্তর্নিহিত মূল উদ্দেশ্যাবলী ১৯৫০ সনের রাষ্ট্রীয় অর্জন ও প্রজাস্বত্ব আইনের ৯৭(৮) ধারার মাধ্যমে বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যায়িত করা হয়েছে। অত্র ধারায় বলা হয়েছে যে, এ প্রকার হস্তান্তরিত জমি সর্বাপর সরকারের ওপর ন্যস্ত হবে এবং সরকার তা এ আইনের ৯০ ধারার বিধান সাপেক্ষে অন্য একজন আদিবাসীর নিকট বন্দোবস্ত দেবে। বিশেষত আদিবাসীগণ যাতে নিজস্ব ঐতিহ্য জিইয়ে রেখে তাদের মৌলিক স্বার্থ রক্ষা করে চলতে সক্ষম হতে পারে, ইহাই হল এ ধরনের হস্তান্তরজনিত বিধিনিষেধ আরোপনের প্রধান উদ্দেশ্য।

    সর্বপরি আদিবাসী সম্প্রদায়ের লোকজনেরা চিরাচরিতভাবে স্বাভাবিকভাবে অনেকেই নিরক্ষর, সহজ ও সরল প্রকৃতির মনের অধিকারী হয়ে থাকে; পক্ষান্তরে আদিবাসীদের প্রতিবেশী লোকজনদের মধ্যে অধিকাংশই অত্যন্ত স্বার্থপর ও সুচতুর হিসেবে পরিলক্ষিত হয়। এতে করে যেকোন সুযোগ সন্ধানী লোকের খপ্পরে পড়ে কোন না কোন সময়ে একজন আদিবাসী শ্রেণীর রায়ত প্রায়শ প্রতারণার শিক্ষারগ্রস্ত হবার যথেষ্ট সম্ভাবনা থেকে যায়। বিধায় এসকল সুচতুর ব্যক্তিগণ যাতে কখনো কৌশল অবলম্বনপূর্বক কোনও আদিবাসীকে সহজে প্রতারিত করে তাদের জমিজমা হস্তগত করতে না পারে, তদ্দেশে এমনতার বিধিনিষেধ সংক্রান্ত আইনটি অতীব অত্যাবশ্যকীয়তার আলোকে প্রণীত হয়েছে।

 

সূত্র: বাংলাদেশের উপজাতিদের আইন- রামকান্ত সিংহ, ২০০৩

 

 

সৌজন্যে: প্যান লোকালাইজেশন প্রোজেক্ট