২৩। খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ আইন, ১৯৮৯

[১৯৮৯ সনের ২০নং আইন]

 

        যা ২রা ডিসেম্বর ১৯৯৭নং তারিখে সম্পাদিত পার্বত্য শান্তিচুক্তির প্রেক্ষাপটে ১৯৯৮ সনের ১০নং আইন দ্বারা সংশোধিত। খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ স্থাপনকল্পে প্রণীত আইন।

        যেহেতু খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা বিভিন্ন অনগ্রসর উপজাতি অধ্যুষিত একটি বিশেষ এলাকা, বিধায় উহার সর্বাঙ্গীন উন্নয়নকল্পে উহার জন্য একটি পরিষদ স্থাপনের বিধান করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়; সেহেতু এতদ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হল :

১। সংক্ষিপ্ত শিরনামা ও প্রবর্তন :

১) এ আইন খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ আইন, ১৯৯৮ নামে অভিহিত হবে।

২) সরকার, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা যে তারিখ হতে নির্ধারিত করবে, সেই তারিখে এ আইন বলবৎ হবে।

২। সংজ্ঞা : বিষয় ও প্রসংগের পরিপন্থী কোন কিছু না থাকলে এ আইনে-

ক) "অ-উপজাতীয়" অর্থ যিনি উপজাতীয় নহেন;

কক) "অ-উপজাতীয় স্থায়ী বাসিন্দা" অর্থ যিনি উপজাতীয় নহেন এবং যার পার্বত্য জেলায় বৈধ জায়গা-জমি আছে এবং যিনি পার্বত্য জেলায় মুনির্দিষ্ট ঠিকানায় সাধারণত বসবাস করেন;

খ) "উপজাতীয়" অর্থ খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলায় স্থায়ীভাবে বসবাসরত চাক্‌মা, ত্রিপুরা ও মারমা উপজাতির সদস্য;

গ) "চেয়ারম্যান" অর্থ পরিষদের চেয়ারম্যান;

ঘ) "তফসিল" অর্থ এ আইনের তফসিল;

ঙ) "পরিষদ" অর্থ খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ;

চ) "প্রবিধান" অর্থ এ আইনের অধীন প্রণীত প্রবিধান;

ছ) "বিধি" অর্থ এ আইনের অধীন প্রণীত বিধি;

জ) "স্থানীয় কর্তৃপক্ষ" অর্থ পৌরসভা, উপজেলা পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদ;

ঝ) "সদস্য" অর্থ পরিষদের সদস্য'

ঞ) "সার্কেল চীফ" অর্থ "মাং চীফ"।

৩। খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ স্থাপন :

১) এ আইন বলবৎ হবার পর যতশীঘ্র সম্ভব খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলায় এ আইনের বিধান অনুযায়ী পার্বত্য জেলা পরিষদ নামে একটি পরিষদ স্থাপিত হবে।

২) পরিষদ একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হবে এবং ইহার স্থায়ী ধারাবাহিকতা ও একটি সাধারণ সীলমোহর থাকবে এবং এ আইন ও বিধি সাপেক্ষে ইহার স্থাবর ও অস্থাবর উভয় প্রকার সম্পত্তি অর্জন করার, অধিকারে রাখার ও হস্তান্তর করার ক্ষমতা থাকবে এবং ইহার নামে ইহা মামলা দায়ের করতে পারবে বা ইহার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা যাবে।

৪। পরিষদের গঠন : ১) নিম্নরূপ সদস্য সমন্বয়ে পরিষদ গঠিত হবে, যথা- ক) চেয়ারম্যান; খ) একুশ জন উপজাতীয় সদস্য; গ) নয় জন অ-উপজাতীয় সদস্য; ঘ) তিন জন মহিলা সদস্য, যাদের মধ্যে দুজন উপজাতীয় এবং একজন অ-উজাতীয় মহিলা হবেন।

ব্যাখ্যা : দফা (ঘ)-তে উল্লেখিত উপজাতীয় মহিলা সদস্যগণের ক্ষেত্রে জেলার বিভিন্ন উপজাতির জন্য কোটা থাকবেনা।

        ২) চেয়ারম্যান ও অন্যান্য সদস্যগণ জনসাধারণ কর্তৃক প্রদত্ত প্রত্যক্ষ ভোটে এ আইন ও বিধি অনুযায়ী নির্বাচিত হবেন।

        ৩) একুশ জন উপজাতীয় সদস্যগণের মধ্যে- ক) নয়জন নির্বাচিত হবেন চাক্‌মা উপজাতি হতে; খ) ছয়জন নির্বাচিত হবেন ত্রিপুরা উপজাতি হতে; গ) ছয়জন নির্বাচিত হবেন মারমা উপজাতি হতে।

        ৪) চেয়ারম্যান উপজাতীয়গণের মধ্য হতে নির্বাচিত হবেন।

        ৪ক) চেয়ারম্যান পদের জন্য যেকোন উপজাতীয় মহিলা এবং উপধারা (৩) এ উল্লেখিত কোন উপজাতির জন্য নির্ধারিত সদস্য পদের জন্য যেকোন উপজাতীয় মহিলা এবং উপধারা (১গ) তে উল্লেখিত অ-উপজাতীয় সদস্য পদের জন্য যেকোন অ-উপজাতীয় মহিলা, বিধির বিধান সাপেক্ষে নির্বাচন প্রার্থী হতে পারবেন।

        ৫) কোন ব্যক্তি উপজাতীয় কিনা এবং হলে তিনি কোন উপজাতির সদস্য তা জেলার সার্কেল চীফ স্থির করবেন এবং এতদসম্পর্কে সার্কেল চীফের নিকট হতে প্রাপ্ত সার্টিফিকেট ব্যতীত কোন ব্যক্তি উপজাতীয় হিসেবে চেয়ারম্যান বা কোন উপজাতীয় সদস্য পদের জন্য প্রার্থী হতে পারবেন না।

        ৬) কোন ব্যক্তি অ-উপজাতীয় কিনা এবং হলে তিনি কোন সম্প্রদায়ের সদস্য তা সংশ্লিষ্ট মৌজার হেডম্যান বা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বা ক্ষেত্রমত পৌরসভার চেয়ারম্যান কর্তৃক এতদুদ্দেশে প্রদত্ত সার্টিফিকেটের ভিত্তিতে সার্কেল চীফ স্থির করবেন এবং এতদসম্পর্কে সার্কেল চীফের নিকট হতে প্রাপ্ত সার্টিফিকেট ব্যতীত কোন ব্যক্তি কোন অ-উপজাতীয় সদস্য পদের জন্য প্রার্থী হতে পারবেন না।

৫। চেয়ারম্যানের যোগ্যতা ও অযোগ্যতা :

১) কোন ব্যক্তি উপজাতীয় সদস্য নির্বাচিত হবার য্যেগ্য হলে তিনি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবার যোগ্য হবেন।

২) কোন ব্যক্তি উপজাতীয় সদস্য নির্বাচিত হবার বা থাকার যোগ্য না হলে তিনি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবার বা থাকার যোগ্য হবেন না।

৬। উপজাতীয় ও অ-উপজাতীয় সদস্যগণের যোগ্যতা ও অযোগ্যতা :

১) কোন ব্যক্তি বাংলাদেশের নাগরিক হলে, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার স্থায়ী বাসিন্দা হলে, কোন উপজাতির অন্তর্ভুক্ত হলে এবং তার বয়স পঁচিশ বৎসর পূর্ণ হলে, উপধারা (৩) এ বর্ণিত বিধান সাপেক্ষে তিনি তার উপজাতির জন্য নির্ধারিত আসনে উপজাতীয়দের সদস্য নির্বাচিত হবার যোগ্য হবেন।

২) কোন ব্যক্তি বাংলাদেশের নাগরিক হলে, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার স্থায়ী বাসিন্দা হলে, অ-উপজাতীয় হলে এবং তার বয়স পঁচিশ বৎসর পূর্ণ হলে, উপধারা (৩) এ বর্ণিত বিধান সাপেক্ষে তিনি অ-উপজাতির জন্য নির্ধারিত আসনে অ-উপজাতীয়দের সদস্য নির্বাচিত হবার যোগ্য হবেন।

৩) কোন ব্যক্তি উপজাতীয় বা অ-উপজাতীয় সদস্য নির্বাচিত হবার এবং থাকবার যোগ্য হবেন না, যদি-

ক) তিনি বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পরিত্যাগ করেন বা হারান;

খ) তাকে কোন আদালত অপ্রকৃতিস্থ বলে ঘোষণা করেন;

গ) তিনি দেওলিয়া ঘোষিত হবার পর দায় হতে অব্যাহতি লাভ না করে থাকেন;

ঘ) তিনি অন্যত্র স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলাপদ ত্যাগ করেন;

ঙ) তিনি নৈতিক স্খলনজতিন কোন ফৌজদারী অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে অন্যূন দু বৎসরের কারাদন্ডে দন্ডিত হন এবং তার মুক্তিলাভের পর পাঁচ বৎসরকাল অতিবাহিত না হয়ে থাকে;

চ) তিনি প্রজাতন্ত্রের বা পরিষদের বা অন্যকোন স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কোন কর্মে লাভজনক সার্বক্ষণিক পদে অধিষ্ঠিত থাকেন;

ছ) তিনি জাতীয় সংসদের সদস্য বা কোন স্থানীয় কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান বা সদস্য হন বা থাকেন;

জ) তিনি পরিষদের কোন কাজ সম্পাদনের বা মালামাল সরবরাহের জন্য ঠিকাদার হন বা ইহার জন্য নিযুক্তি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের অংশীদার হন বা পরিষদের কোন বিষয়ে তার কোন প্রকার আর্থিক স্বার্থ থাকে বা তিনি সরকার কর্তৃক নিযুক্ত অত্যাবশ্যক কোন দ্রব্যের দোকানদার হন; অথবা

ঝ) তার নিকট সোনালী ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, শিল্প ব্যাংক, শিল্পঋণ সংস্থা বা কৃষি ব্যাংক হতে গৃহীত কোন ঋণ মেয়াদোত্তীর্ণ অবস্থায় অনাদায়ী থাকে।

৭। চেয়ারম্যান ও সদস্যগণের শপথ : চেয়ারম্যান বা কোন সদস্য পদে নির্বাচিত ব্যক্তি তার কার্যভার গ্রহণের পূর্বে নিম্নলিখিত ফরমে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক এতদুদ্দেশে মনোনীত হাইকোর্ট বিভাগের কোন বিচারকের সম্মুখে শপথগ্রহণ বা ঘোষণা করবেন এবং শপথপত্র বা ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষরদান করবেন; যথা-

"আমি ................................................... পিতা বা স্বামী ............................ খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বা সদস্য নির্বাচিত হয়ে সশ্রদ্ধচিত্তে শপথ বা দৃঢ়ভাবে ঘোষণা করছি যে, আমি আইন অনুযায়ী ও বিশ্বস্ততার সহিত আমার পদের কর্তব্য পালন করব এবং আমি বাংলাদেশের প্রতি অকৃত্রিম বিশ্বাস ও আনুগত্য পোষণ করব"।

৮। সম্পত্তি সম্পর্কিত ঘোষণা : চেয়ারম্যান ও প্রত্যেক সদস্য তার কার্যভার গ্রহণের পূর্বে তার এবং তার কোন সদস্যের স্বত্ব, দখল বা স্বার্থ আছে এ প্রকার যাবতীয় স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির একটি লিখিত বিবরণ বিধি অনুসারে দাখিল করবেন।

ব্যাখ্যা : "পরিবারের সদস্য" বলতে চেয়ারম্যান বা সংশ্লিষ্ট সদস্যের স্বামী বা স্ত্রী এবং তার সঙ্গে বসবাসকারী এবং তার ওপর সম্পূর্ণভাবে নির্ভরশীল তার ছেলে-মেয়ে, পিতা-মাতা ও ভাইবোনকে বুঝাবে।

৯। চেয়ারম্যান ও সদস্যগণের সুযোগ সুবিধা : চেয়ারম্যান ও সদস্যগণের সুযোগ সুবিধা প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত হবে।

১০। পরিষদের মেয়াদ : পরিষদের মেয়াদ হবে উহার প্রথম অধিবেশনের তারিখ হতে পাঁচ বৎসর। তবে শর্ত থাকে যে, উক্ত মেয়াদ শেষ হওয়াসত্ত্বেও নির্বাচিত নূতন পরিষদ উহার প্রথম অধিবেশনে না বসা পর্যন্ত পরিষদ কার্য চালিয়ে যাবে।

১১। চেয়ারম্যান ও সদস্যগণের পদত্যাগ : ১) সরকারের উদ্দেশে স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযোগে চেয়ারম্যান এবং চেয়ারম্যানের উদ্দেশে স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযোগে যেকোন সদস্য স্বীয়পদ ত্যাগ করতে পারবেন।

        ২) পদত্যাগ গৃহীত হবার তারিখ হতে পদত্যাগ কার্যকর হবে এবং পদত্যাগকারীর পদশূন্য হবে।

১২। চেয়ারম্যান ইত্যাদির অপসারণ : ১) চেয়ারম্যান বা কোন সদস্য তার স্বীয়পদ হতে অপসারণযোগ্য হবেন, যদি তিনি-

ক) যুক্তিসংগত কারণ ব্যতিরেকে পরিষদের পর পর তিনটি সভায় অনুপস্থিত থাকেন;

খ) তার দায়িত্ব পালন করতে অস্বীকার করেন অথবা শারীরিক বা মানসিক অসামর্থের কারণে তার দায়িত্ব পালনে অক্ষম হত; অথবা

গ) অসদাচরণ বা ক্ষমতার অপব্যবহারের দোষে দোষী হন অথবা পরিষদের কোন অর্থ বা সম্পত্তির কোন ক্ষতিসাধন বা উহা আত্মসাতের জন্য দায়ী হন।

ব্যাখ্যা : এ উপধারায় 'অসদাচরণ' বলতে ক্ষমতার অপব্যবহার, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও ইচ্ছাকৃত কুশাসনও বুঝাবে।

        ২) চেয়ারম্যান বা কোন সদস্যকে উপধারা (১) এ বর্ণিত কোন কারণে তার পদ হতে অপসারণ করা যাবেনা, যদি না বিধি অনুযায়ী তদুদ্দেশে আহুত পরিষদের বিশেষ সভায় মোট সদস্য সংখ্যার অন্যূন তিন-চতুর্থাংশ ছোটে তার অপসারণের পক্ষে প্রস্তাব গৃহীত হয় এবং প্রস্তাবটি সরকার কর্তৃক অনুমোদিত হয়। তবে শর্ত থাকে যে, উক্তরূপ সিদ্ধান্ত গ্রহণের পূর্বে চেয়ারম্যান বা উক্ত সদস্যকে প্রস্তাবিত সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর জন্য যুক্তিসংগত সুযোগ দান করতে হবে।

        ৩) উপধারা (২) অনুযায়ী সিদ্ধান্ত অনুমোদিত হলে চেয়ারম্যান বা উক্ত সদস্য তার পদ হতে অপসারিত হয়ে যাবেন।

        ৪) এ আইনের অন্যান্য বিধানে যা কিছুই থাকুক না কেন, এ ধারা অনুযায়ী অপসারিত কোন ব্যক্তি পরিষদের অবশিষ্ট মেয়াদের জন্য কোনপদে নির্বাচিত হবার যোগ্য হবেন।

১৩। চেয়ারম্যান ও সদস্য পদশূন্য হওয়া : ১) চেয়ারম্যান বা কোন সদস্যের পদশূন্য হবে, যদি-

ক) তার নাম সরকারী গেজেটে প্রকাশিত হবার তারিখ হতে ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে তিনি ধারা ৭-এ নির্ধারিত শপথগ্রহণ। বা ঘোষণা করতে ব্যর্থ হন। হবে শর্ত থাকে যে, অনুরূপ মেয়াদ অতিবাহিত হওয়ার পূর্বে সরকার যথার্থ কারণে ইহা বর্ধিত করতে পারবে;

খ) তিনি ধারা ৫ বা ৬ এর অধীনে তার পদে থাকার অযোগ্য হয়ে যান;

গ) তিনি ধারা ১১ এর অধীনে তার পদত্যাগ করেন;

ঘ) তিনি ধারা ১২ এর অধীনে তার পদ হতে অপসারিত হন;

ঙ) তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

        ২) চেয়ারম্যান বা কোন সদস্য তার নির্বাচনের পর ধারা ৫ বা ৬ এর অধীনে অযোগ্য হয়ে গিয়েছেন কিনা সেসম্পর্কে কোন বিতর্ক দেখা দিলে নিষ্পত্তির জন্য প্রশ্নটি পরিষদের সচিব কর্তৃক খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলাজজের নিকট প্রেরিত হবে এবং জেলাজজ যদি এ অভিমত ব্যক্ত করেন যে, উক্ত চেয়ারম্যান বা সদস্য অনুরূপ অযোগ্য হয়ে গিয়েছেন, তাহলে তিনি স্বীয়পদে বহাল থাকবেন না এবং জজের উক্ত অভিমত ব্যক্ত করার তারিখ হতে চেয়ারম্যান বা সদস্যের পদটি শূন্য হবে।

        ৩) চেয়ারম্যান বা কোন সদস্যের পদশূন্য হলে তা সরকারী গেজেটে প্রকাশ করা হবে।

১৪। অস্থায়ী চেয়ারম্যান : চেয়ারম্যানের পদ কোন কারণে শূন্য হলে বা অনুপস্থিত বা নির্বাচিত চেয়ারম্যান তারপদে যোগদান না করা পর্যন্ত বা চেয়ারম্যান পুনরায় স্বীয় দায়িত্ব পালনে সমর্থ না হওয়া পর্যন্ত পরিষদের অন্যান্য সদস্য কর্তৃক নির্বাচিত কোন উপজাতীয় সদস্য চেয়ারম্যানরূপে কার্য করবেন।

১৫। আকষ্কিক পদশূন্যতা : পরিষদের মেয়াদ শেষ হবার ১৮০ (একশত আশি) দিন পূর্বে চেয়ারম্যান বা কোন সদস্যের পদশূন্য হলে পদটি শূন্য হবার ষাট দিনের মধ্যে উহা পূরণ করতে হবে এবং যিনি উক্ত পদে নির্বাচিত হবেন তিনি পরিষদের অবশিষ্ট মেয়াদের জন্য উক্ত পদে বহাল থাকবেন। তবে শর্ত থাকে যে, সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদের অধীন নিযুক্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনারের মতে যদি কোন বিশেষ কারণে এ উপধারায় নির্ধারিত মেয়াদের মধ্যে উক্ত নির্বাচন অনুষ্ঠিত করা সম্ভব না হয়, তাহলে উক্ত মেয়াদের শেষ দিনের পরবর্তি ১৮২০ দিনের মধ্যে উক্ত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

        ২) পরিষদ বাতিল হয়ে গেলে বাতিল থাকার মেয়াদ শেষ হবার তারিখের পূর্বে পরিষদ পুনর্গঠনের জন্য সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। [১৯৯২ সনে প্রণীত খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা স্থানীয় সরকার পরিষদ প্রথম সংশোধন আইনের দ্বারা সন্নিবেশিত এবং ১৯৯৭ সনের ৩নং আইন দ্বারা সংশোধিত]।

১৬(ক)। অন্তবর্তীকালীন পরিষদ [১৯৯৭ সনের ৩নং আইন দ্বারা সন্নিবেশিত] :

১) ধারা ১৬-এর অধীনে নির্ধারিত মেয়াদের মধ্যে পরিষদের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হলে উক্ত মেয়াদ সমাপ্তির তারিখে পরিষদ বাতিল হয়ে যাবে এবং উপধারা (২) এর অধীন গঠিত অন্তবর্তীকালীন পরিষদের ওপর পরিষদের যাবতয়ি ক্ষমতা ও দায়িত্ব ন্যস্ত হবে।

) একজন চেয়ারম্যান ও চার সদস্য সমন্বয়ে সরকার অন্তবর্তিকালীন পরিষদ গঠন করবে।

৩) ধারা ১৬ এর অধীনে নির্বাচিত নতুন পরিষদ কার্ডভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত অন্তবর্তীকালীন পরিষদ পরিষদের কার্য চালিয়ে যাবে।

৪) সরকার প্রয়োজনবোধে অন্তবর্তীকালীন পরিষদ পুনর্গঠন করতে পারবে।

৫) এ ধারার অধীন গঠিত অন্তবর্তিকালীন পরিষদের মেয়াদান্তে সাধারণ নির্বাচনের মাধ্যমে যে নতুন পরিষদ গঠিত হবে, উহার বা উহার পরবর্তী পরিষদের ক্ষেত্রে ধারা ১৬-এর শতাংশের কিছুই প্রযোজ্য হবেনা।

৬) এ আইনের অন্যান্য ধারায় যা কিছুই থাকুক না কেন, এ ধারায় বিধানাবলী কার্যকর হবে।

১৭। ভোটার হওয়ার যোগ্যত : পরিষদের নির্বাচনের জন্য কোনব্যক্তি ভোটার তালিকাভুক্ত হবার যোগ্য হবেন, যদি তিনি-

ক) বাংলাদেশের নাগিরক হন;

খ) অন্যূন আঠার বৎসর বয়স্ক হন;

গ) কোন উপযুক্ত আদালত কর্তৃক মানসিকভাবে অসুস্থ ঘোষিত না হন; এবং

ঘ) খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার স্থায়ী বাসিন্দা হন।

১৮। ভোটাধিকার : কোন ব্যকিত্র নাম ধারা ১৭-তে উল্লেখিত ভোটার তালিকায় আপাতত লিপিবদ্ধ থাকলে তিনি পরিষদের যেকোন নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন।

১৯। দু পদের জন্য একই সংগে প্রার্থী হওয়া নিষিদ্ধ : কোন ব্যক্তি একই সংগে চেয়অরম্যান এবং উপজাতয়ি সদস্য পদের জন্য নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না।

২০। নির্বাচন পরিচালনা : ১) সংবিধান অনুযায়ী গঠিত নির্বাচন কমিশন, অতপর নির্বাচন কমিশন বলে উল্লেখিত এ আইন ও বিধি অনুযায়ী চেয়ারম্যান ও সদস্যদের নির্বাচন অনুষ্ঠান ও পরিচালনা করবে।

        ২) সরকার, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা পরিষদের চেয়ারম্যার ও সদস্যদের নির্বাচনের জন্য বিধি প্রণয়ন করবে এবং অনুরূপ বিধিতে নিম্নবর্ণিত সকল অথবা যেকোন বিষয়ে বিধান করা যাবে, যথা-

ক) নির্বাচন এলাকা নির্ধারণ;

কক) নির্বাচন পরিচালনার উদ্দেশে রিটার্নিং অফিসার, সহকারী রিটার্নিং অফিসার, প্রিজাইডিং অফিসার এবং পোলিং অফিসার নিয়োগ এবং তাদের ক্ষতা ও দায়িত্ব;

খ) প্রার্থী মনোনয়ন, মনোনয়নের ক্ষেত্রে আপত্তি এবং মনোনয়ন বাছাই;

গ) প্রার্থীগণ কর্তৃক প্রদেয় জামানত এবং উক্ত জামানত ফেরত প্রদান বা বাজেয়াপ্ত করণ;

ঘ) প্রার্থীপদ প্রত্যাহার;

ঙ) প্রার্থীগণের এজেন্ট নিয়োগ;

চ) প্রতিদ্বন্দ্বীতা এবং বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বীতার ক্ষেত্রে নির্বাচন পদ্ধতি;

ছ) ভোটগ্রহণের তালিকা, সময় ও স্থান এবং নির্বাচন পরিচালনা সংক্রান্ত অন্যান্য বিষয়;

জ) ভোট দানের পদ্ধতি;

ঝ) ব্যালট পেপার এবং নির্বাচন সংক্রান্ত অন্যান্য কাগজপত্রের হেফাজত ও বিলিবন্টন;

ঞ) যে অবস্থায় ভোটগ্রহণ স্থগিত করা যায় এবং পুনরায় ভোট গ্রহণ করা যায়;

ট) নির্বাচনী ব্যয়;

ঠ) নির্বাচনে দুর্নীতিমূলক বা অবৈধ কার্যকলাপ ও অন্যান্য নির্বাচনী অপরাধ এবং উহার দণ্ড;

ড) নির্বাচনী বিরোধ এবং উহার বিচার ও নিষ্পত্তি; এবং

ঢ) নির্বাচন সম্পর্কিত আনুষঙ্গিক অন্যান্য বিষয়।

        ৩) উপধারা (২) (ঠ)-এর অধীন বিধিতে কারাদণ্ড, অর্থদণ্ড বা উভয়বিধ দণ্ডের বিধান করা যাবে, তবে কারাদণ্ডের মেয়াদ দু' বৎসরের অধিক এবং অর্থদণ্ডের পরিমাণ পাঁচ হাজার টাকার অধিক হবে না।

২১। চেয়ারম্যান ও সদস্যগণের নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ : চেয়ারম্যান ও সদস্য হিসেবে নির্বাচিত সকল ব্যক্তির নাম নির্বাচনের পর যথাশীঘ্র সম্ভব নির্বাচন কমিশন সরকারী গেজেটে প্রকাশ করবে।

২২। পরিষদের কার্যাবলী : প্রথম তফসিলে উল্লেখিত কার্যাবলী পরিষদের কার্যাবলী হবে এবং পরিষদ উহার তহবিলের সংগতি অনুযায়ী এ কার্যাবলী সম্পাদন করবে।

২৩। সরকার ও পরিষদের কার্যবলী হস্তান্তর ইত্যাদি : এ আইন অথবা আপাতত বলবৎ অন্যকোন আইনে যা কিছুই থাকুক না কেন সরকার পরিষদের সম্মতিক্রমে-

ক) পরিষদ কর্তৃক পরিচালিত কোন প্রতিষ্ঠান বা কর্ম সরকারের ব্যবস্থাপনায় ও নিয়ন্ত্রণে; এবং

খ) সরকার কর্তৃক পরিচালিত কোন প্রতিষ্ঠান বা কর্ম পরিষদের ব্যবস্থাপনায় ও নিয়ন্ত্রণে হস্তান্তর করার নির্দেশ দিতে পারবে।

২৪। নির্বাহী ক্ষমতা : ১) এ আইনের অধীন যাবতয়ি কার্যাবলী যথাযথভাবে সম্পাদনের জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছু করার ক্ষমতা পরিষদের থাকবে।

        ২) এ আইন বা বিধিতে ভিন্নরূপ বিধান না থাকলে পরিষদের নির্বাহী ক্ষমতা চেয়ারম্যানের ওপর ন্যস্ত হবে এবং এ আইন ও প্রবিধান অনুযায়ী চেয়ারম্যান কর্তৃক প্রত্যক্ষভাবে অথবা তার নিকট হতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত অন্যকোন ব্যক্তির মাধ্যমে প্রযুক্ত হবে।

        ৩) পরিষদের নির্বাহী বা অন্যকোন কার্য পরিষদের নামে গৃহীত হয়েছে বলে প্রকাশ করা হবে এবং উহা বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে প্রমাণিত হতে হবে।

২৫। কার্যাবলী নিষ্পন্ন : ১) পরিষদের কার্যাবলী পবিধান দ্বারা নির্ধারিত সীমার মধ্যে ও পদ্ধতিতে উহার বা উহার কমিটিসমূহের সভায় অথবা উহার চেয়অরম্যান, সদস্য, কর্মকর্তা বা কর্মচারী কর্তৃক নিষ্পন্ন করা হবে।

        ২) পরিষদের সকল সভায় চেযারম্যান এবং তার অনুপস্থিতিতে সভায় উপস্থিত সদস্যগণ কর্তৃক উপজাতয়ি সদস্যগণের মধ্য হতে নির্বাচিত অন্যকোন সদস্য সভাপতিত্ব করবেন।

        ৩) পরিষদের কোন সদস্যপদ শূন্য রয়েছে বা উহার গঠনে কোন ত্রুটি রয়েছে কেবল একারণে কিংবা পরিষদের বৈঠকে উপস্থিত হবার বা ভোট দানের বা অন্য কোন উপায়ে উহার কার্যধারায় অংশগ্রহণের অধিকার না থাকা সত্বেও কোন ব্যক্তি অনুরূপ কার্য করেছেন, কেবল একারণে পরিষদের কোন কার্য বা কার্যধারা অবৈধ হবেনা।

        ৪) পরিষদের প্রত্যেক সভার কার্যবিরণীর একটি করে অনুলিপি সভা অনুষ্ঠিত হবার তারিখের ১৪ (চৌদ্দ) দিনের মধ্যে সরকারের নিকট প্রেরণ করতে হবে।

২৬। পরিষদের সভায় মং চীফ ও চাকমা চীফের যোগদানের অধিকার : মং চীফ এবং চাকমা চীফ ইচ্ছা করলে বা আমন্ত্রিত হলে পরিষদের যেকোন সভায় যোগদান করতে পারবেন এবং পরিষদের কোন আলোচ্য বিষয়ে তার মতামত ব্যক্ত করতে পারবেন।

২৭। কমিটি : পরিষদ উহার কাজের সহায়তার জন্য প্রয়োজনবোধে কমিটি নিয়োগ করতে পারবে এবং উক্তরূপ কমিটির সদস্য সংখ্যা ও ইহার দায়িত্ব এবং কার্যধারা নির্ধারণ করতে পারবে।

২৮। চুক্তি : (১) পরিষদ কর্তৃক বা উহার পক্ষে পম্পাদিত সকল চুক্তি-

ক) লিখিত হতে হবে এবং পরিষদের নামে সম্পাদিত হয়েছে বলে প্রকাশিত হতে হবে;

খ) প্রবিধান অনুসারে সম্পদিত হতে হবে।

        ২) কোন চুক্তি সম্পাদনের অব্যবহিত পরে অনুষ্ঠিত পরিষদের সভায় চেয়ারম্যান চুক্তিটি সম্পর্কে উহাকে অবহিত করবেন।

        ৩) পরিষদ প্রস্তাবের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের চুক্তি সম্পাদনের জন্য পদ্ধতি নির্ধারণ করতে পরবে এবং চেয়অরম্যান চুক্তি সম্পাদনের ব্যাপারে উক্ত প্রস্তাব অনুযায়ী কাজ করবেন।

        ৪) এ ধারায় খেলাপ সম্পাদিত কোন চুক্তির দায়িত্ব পরিষদের ওপর বর্তাবে না।

২৯। নির্মাণ কাজ : পরিষদ প্রবিধান দ্বারা-

ক) পরিষদ কর্তৃক সম্পাদিতব্য সকল নির্মাণ কাজের পরিকল্পনা এবং আনুমানিক ব্যয়ের হিসাব প্রণয়ন করার বিধান করবে;

খ) উক্ত পরিকল্পনা ও ব্যয় কোন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক এবং কি শর্তে প্রযুক্তিগতভাবে এবং প্রশাসনিকভাবে অনুমোদিত হবে উহার বিধান করবে;

গ) উক্ত পরিকল্পনা ও ব্যয়ের হিসাব কার দ্বারা প্রণয়ন করা হবে এবং উক্ত নির্মাণ কাজ কার দ্বারা সম্পাদন করা হবে উহার বিধান করবে।

৩০। নথিপত্র, প্রতিবেদন ইত্যাদি : পরিষদ-

ক) সরকারের উপসচিব মসতুল্য একজন মুখ্য নির্বাহি কর্মকর্তা পরিষদের সচিব হিসেবে থাকবেন এবং এপদে নিয়োগের ক্ষেত্রে উপজাতীয় কর্মকর্তাদিগকে অগ্রাধিকার দেয়া হবে।

খ) প্রবিধানে উল্লেখিত বিষয়ের ওপর সাময়িক প্রতিবেদন ও বিবরণী প্রণয়ন ও প্রকাশ করবে;

গ) উহার কার্যবলী সম্পর্কে তথ্য প্রকাশের জন্য প্রয়োজনীয় বা সরকার কর্তৃক সময় সময় নির্দেশিত অন্যান্য ব্যবস্থাও গ্রহণ করতে পারবে।

৩১। পরিষদের সচিব : সরকারের উপসচিব সমতুল্য একজন মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা পরিষদের সচিব হিসেবে থাকবেন এবং এপদে নিয়োগের ক্ষেত্রে উপজাতয়ি কর্মকর্তাদিগকে অগ্রাধিকার দেয়া হবে।

৩২। পরষদের কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগ : ১) পরিষদের কার্যাদি সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের নিমিত্ত পরিষদ সরকারের অনুমোদনক্রমে বিভিন্ন শ্রেণীর কর্মকর্তা ও কর্মচারীর পদ সৃষ্টি করতে পারবে।

        ২) পরিষদ প্রবিধান অনুযায়ী তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর পদে কর্মচারী নিয়োগ করতে পারবে এবং তাদিগকে বদলী ও সাময়িক বরখাস্ত, অপসারণ বা অন্যকোন প্রকার শাস্তি প্রদান করতে পারবে। তবে শর্ত থাকে যে, উক্ত নিয়োগের ক্ষেত্রে জেলার উপজাতয়ি বাসিন্দাদের অগ্রাধিকার বজায় থাকবে।

        ৩) পরিষদের অন্যান্য পদে বিধি অনুযায়ী সরকার পরিষদের সহিত পরামর্শক্রমে কর্মকর্তা নিয়োগ করতে পারবে।

        ৪) উপধারা (৩)-এ উল্লিখিত কর্মকর্তাগণকে সরকার অন্যত্র বদলী করতে এবং বিধি অনুযায়ী সাময়িক বরখাস্ত, অপসারণ বা অন্যকোন প্রকার শান্তি প্রদান করতে পারবে।

৩৩। ভবিষ্যৎ তহবিল ইত্যাদি : ১) পরিষদ উহার কর্মকর্তা ও কর্মচারীগনের জন্য ভবিষ্যৎ তহবিল গঠন করতে পারবে এবং প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত হারে উক্ত তহবিলে চাঁদা প্রদান করার জন্য উহার কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণকে নির্দেশ দিতে পারবে।

        ২) পরিষদ ভবিষ্যৎ তহবিলে চাঁদা প্রদান করতে পারবে।

        ৩) পরিষদের কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারী তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করার কারণে অসুস্থ হয়ে বা আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করলে পরিষদ সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে উক্ত কর্মকর্তা বা কর্মচারীর পরিবারবর্গকে প্রবিধান অনুযায়ী গ্রাচ্যুইটি প্রদান করতে পারবে।

        ৪) পরিষদ উহার কর্মকর্তা বা কর্মচারীদের জন্য প্রবিধান অনুযায়ী সামাজিক বীমা প্রকল্প চালু করতে পারবে এবং উহাতে তাদেরকে চাঁদা প্রদানের নির্দেম দিতে পারবে।

        ৫) পরিষদ উহার কর্মচারীদের জন্য প্রবিধান অনুযায়ী বদান্য তহবিল গঠন করতে পারবে এবং উহা হতে উপধারা ৩-এ উল্লেখিত গ্রাচ্যুইটি এবং প্রবিধান অনুযায়ী অন্যান্য সাহায্য প্রদান করতে পারবে।

        ৬) উপধারা ৫-এর অধীনে গঠিত তহবিলে পরিষদ চাঁদা প্রদান করতে পারবে।

৩৪। চাকুরী প্রবিধান : পরিষদ প্রবিধান দ্বারা-

ক) পরিষদ কর্তৃক নিযুক্ত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের চাকুরীর শর্তাদি নির্ধারণ করতে পারবে;

খ) পরিষদ কর্তৃক নিয়োগ করা যাবে এরূপ সকল পদে নিয়োগের জন্য যোগ্যতা এবং নীতিমালা নির্ধারণ করতে পারবে;

গ) পরিষদ কর্তৃক নিযুক্ত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে শৃংখলামূলক ব্যবস্থাগ্রহণের জন্য তদন্তের পদ্ধতি নির্ধারিত করতে পারবে এবং তাদের বিরুদ্ধে শাস্তির বিধান ও শাস্তির তদন্তের পদ্ধতি নির্ধারণ করতে পারবে এবং তাদের বিরুদ্ধে শাস্তির বিধান ও শাস্তির বিরুদ্ধে আপীলের বিধান করতে পারবে।

ঘ) পরিষদের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালনের জন্য প্রয়োজনীয় বিধান করতে পারবে।

৩৫। পরিষদের তহবিল গঠন : ১) খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ তহবিল নামে পরিষদের একটি তহবিল থাকবে।

        ২) পরিষদের তহবিলে নিম্নলিখিত অর্থ জমা হবে; যথা- ক) জেলা পরিষদের তহবিলের উদ্ধৃত্ত অর্থ; খ) পরিষদ কর্তৃক ধার্যকৃত কর, রেইট, টোল, ফিস এবং অন্যান্য দাবী বাবদ প্রাপ্ত অর্থ; গ) পরিষদের ওপর ন্যস্ত এবং তৎকর্তৃক পরিচালিত সকল সম্পত্তি হতে প্রাপ্ত আয় বা মুনাফা; ঘ) সরকার বা অন্যান্য কর্তৃপক্ষের অনুদান; ঙ) কোন প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান; চ) পরিষদের অর্থ বিনিয়োগ হতে মুনাফা; ছ) পরিষদ কর্তৃক প্রাপ্ত অন্য যেকোন অর্থ; জ) সরকারের নির্দেশে পরিষদের ওপর ন্যস্ত অন্যান্য আয়ের উৎস হতে প্রাপ্ত অর্থ।

৩৬। পরিষদের তহবিল সংরক্ষণ, বিনিয়োগ ইত্যাদি : ১) পরিষদের তহবিলে জকামৃত অর্থ কোন সরকারী ট্রেজারীতে বা সরকারী ট্রেজারীর কার্য পরিচালনাকারী কোন ব্যাংকে রাখা হবে।

        ২) প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে পরিষদ উহার তহবিলের কিছু অংশ বিনিয়োগ করতে পাবে।

        ৩) পরিষদ ইচ্ছা করলে কোন বিশেষ উদ্দেশে আলাদা তহলিব গঠন করতে পারবে এবং প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে উক্ত তহবিল পরিচালনা করবে।

৩৭। পরিষদের তহবিলের প্রয়োগ : ১) পরিষদের তহবিলের অর্থ নিম্নলিখিত খাতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ব্যয় করা যাবে; যথা-

প্রথমত : পরিষদের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন ও ভাতা প্রদান;

দ্বিতীয়ত : এ আইনের অধীনে পরিষদের তহবিলের ওপর দায়ুক্ত ব্যয়;

তৃতীয়ত : এ আইন বা আপাতত বলবৎ অন্যকোন আইন দ্বারা ন্যস্ত পরিষদের দায়িত্ব সম্পাদন এবং কর্তব্য পালনের জন্য ব্যয়;

চতুর্থত : সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে পরিষদ কর্তৃক ঘোষিত পরিষদের তহবিলের ওপর দায়যুক্ত ব্যয়;

পঞ্চমত : সরকার কর্তৃক ঘোষিত পরিষদের তহবিলের ওপর দায়যুক্তি ব্যয়।

        ২) পরিষদের তহবিলের ওপর দায়যুক্ত ব্যয় নিম্নরূপ হবে; যথা- ক) পরিষদের চাকুরীতে নিয়েঅজিত কোন সরকারী কর্মচারীর জন্য দেয় অর্থ; খ) সরকারের নির্দেশে পরিষদ সার্ভিসের রক্ষণাবেক্ষণ, হিসাব-নিরীক্ষণ বা অন্য কোন বিষয়ের জন্য দেয় অর্থ; গ) কোন আদালত বা ট্রাইবুনাল কর্তৃক পরিষদের বিরুদ্ধে প্রদত্ত কোন রায়, ডিক্রি বা রোয়েদাদ কার্যকর করার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ; ঘ) বিধি দ্বারা দায়যুক্ত বলে নির্ধারিত অন্য যেকোন ব্যয়।

        ৩) পরিষদের তহবিলের ওপর দায়যুক্ত কোন ব্যয়ের খাতে যদি কোন অর্থ অপরিশোধিত থাকে, তাহলে যে ব্যক্তির হেফাজতে উক্ত তহবিল থাকবে ঐ ব্যক্তিকে সরকার আদেশ দ্বারা উক্ত তহবিল হতে যতদুর সম্ভব উক্ত অর্থ পরিশোধ করার জন্য নির্দেশ দিতে পারবে।

৩৮। বাজেট : ১) প্রতি অর্থ বৎসর শুরু হবার পূর্বে পরিষদ উক্ত বৎসরের সম্ভাব্য আয় ও ব্যয় সম্বলিত বিবরণী, অতপর বাজেট বলে উল্লেখিত বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে প্রণয়ন ও অনমোদন করবে এবং উহার একটি অনুলিপি সরকারের নিকট প্রেরণ করবে।

        ২) কোন অর্থ বৎসর শুরু হবার পূর্বে পরিষদ ইহার বাজেট অনুমোদন করতে না পারলে সরকার উক্ত বৎসরের জন্য একটি আয়ব্যয় বিবরণী প্রস্তুত করায়ে উহা প্রত্যয়ন করবে এবং এরূপ প্রত্যয়নকৃত বিবরণী পরিষদের অনুমোদিত বাজেট বলে গণ্য হবে।

        ৩) বিলুপ্ত।

        ৪) কোন অর্থ বৎসর শেষ হবার পূর্বে যেকোন সময় পরিষদ প্রয়োজন মনে করলে, সেই অর্থ বৎসরের জন্য প্রণীত বা অনুমোদিত বাজেট পুন:প্রণয়ন বা সংশোধন করতে পারবে এবং যথাশীঘ্র সম্ভব উহার একটি অনুলিপি সরকারের নিকট প্রেরণ করবে।

        ৫) এ আইন মোতাবেক গঠিত পরিষদ প্রথমবার যে অর্থ বৎসরে দায়িত্বভার প্রগণ করবে, সেই অর্থ বৎসরের বাজেট উক্ত দায়িত্বভার গ্রহণের পর অর্থ সৎসরটির বাকী সময়ের জন্য প্রণীত হবে এবং উক্ত বাজেটের ক্ষেত্রেও এ ধারার বিধানাবলী যতদূর সম্ভব প্রযোজ্য হবে।

৩৯। হিসাব : ১) পরিষদের আয়-ব্যয়ের হিসাব বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে ও ফরমে রক্ষণ করা যাবে।

        ২) প্রতিটি অর্থ সৎসর শেষ হবার পর পরিষদ একটি বার্ষিক আয় ও ব্যয়ের হিসাব প্রস্তুত করবে এবং পরবর্তী অর্থ বৎসরের ৩১শে ডিসেম্বরের মধ্যে উহা সরকারের নিকট প্রেরণ করবে।

        ৩) উক্ত বার্ষিক আয়-ব্যয়ের হিসাবের একটি অনুলিপি জনসাধারণের জন্য পরিষদ কার্যালয়ের কোন বিশিষ্ট স্থানে স্থাপন করতে হবে এবং উক্ত হিসাব সম্পর্কে জনসাধারণের আপত্তি বা পরাশর্ম পরিষদ বিবেচনা করবে।

৪০। হিসাব নিরীক্ষা : ১) পরিষদের আয়-ব্যয়ের হিসাব বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতেও বিধি দ্বারা নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের দ্বারা নিরীক্ষিত হবে।

        ২) নিরীক্ষাকারী কর্তৃপক্ষ পরিষদের সকল হিসাব সংক্রান্ত যাবতীয় বহি ও অন্যান্য দলিল দেখতে পারবে এবং প্রয়োজনবোধে পরিষদের চেয়ারম্যান ও যেকোন সদস্য, কর্মকর্তা ও কর্মচারীকৈ জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে।

        ৩) হিসাব নিরীক্ষার পর নিরীক্ষাকারী কর্তৃপক্ষ সরকারের নিকট একটি নিরীক্ষা প্রতিবেদন পেশ করবে এবং উহাতে অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে নিম্নবর্ণিত বিষয়াদির উল্লেখ থাকবে; যথা- ক) অর্থ আত্মাসাৎ; খ) পরিষদ তহবিলের লোকসান, অপচয় এবং অপপ্রয়োগ; গ) হিসাবরক্ষণে অনিয়ম; ঘ) নিরীক্ষাকারী কর্তৃপক্ষের মত যারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে উক্ত আত্মাসাৎ, লোকসান অপচয়, অপ্রয়োগ ও অনিয়মের জন্য দায়ী তাদের নাম।

৪১। পরিষদের সম্পত্তি : ১) পরিষদ প্রবিধান দ্বারা- ক) পরিষদের ওপর ন্যস্ত বা উহার মালিকানাধীন সম্পত্তির ব্যবস্থাপনা, রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়নের জন্য বিধান করতে পারবে;

        খ) উক্ত সম্পত্তির হস্তান্তর নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে।

        ২) পরিষদ- ক) উহার মালিকানাধীন বা উহার ওপর বা উহার তত্বাবধানে ন্যস্ত যেকোন সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা, রক্ষণাবেক্ষণ, পরিদর্শন ও উন্নয়ন সাধন করতে পারবে; খ) এ আইনের এদ্দশ্য পূরণকল্পে উক্ত সম্পত্তি কাজে লাগাতে পারবে; গ) দান, বিক্রয়, বন্ধক, ইজারা বা বিনিময়ের মাধ্যমে বা অন্যকোন পন্থায় যেকোন সম্পত্তি অর্জন বা হস্তান্তর করতে পারবে।

৪২। উন্নয়ন পরিকল্পনা : ১) পরিষদ উহার এখতিয়ারভুক্ত যেকোন হিষয়ে উহার তহবিলের সংগতি অনুযায়ী উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রস্তুত ও বাস্তবায়ন করতে পারবে।

        ২) উক্ত পরিকল্পনায় নিম্নলিখিত বিষয়ের বিধান থাকবে, যথা- ক) কি পদ্ধতিতে পরিকল্পনার অর্থ যোগান হবে এবং উহার তদারক ও বাস্তবায়ন হবে; খ) কার দ্বারা পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হবে; গ) পরিকল্পনা সম্পর্কিত অন্যান্য প্রয়োজনীয় বিষয়।

        ২ক) ধারা ২৩(খ) এর অধীন সরকার কর্তৃক পরিষদের নিকট হস্তান্তরিত কোন প্রতিষ্ঠান বা কর্মের ব্যাপারে পরিষদ এ ধারার উপধারা (১) এর আওতায় নিজস্ব তহবিল হতে বা সরকার কর্তৃক প্রদত্ত অর্থ হতে উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রস্তুত ও বাস্তবায়ন করতে পারবে।

        ৩) পরিষদ উহার উন্নয়ন পরিকল্পনার একটি অনুলিপি উহা বাস্তবায়নের পূর্বে সরকারের নিকট প্রেরণ করবে।

        ৪) পরিষদের নিকট হস্তান্তরিক কোন বিষয়ে জাতীয় পর্যায়ে সরকার কর্তৃক গৃহীত সকল উন্নয়ন কার্যক্রম পরিষদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ বা প্রতিষ্ঠান বাস্তবায়ন করবে।

৪৩। পরিষদের নিকট চেয়অরম্যান ইত্যাদির দায় : পরিষদের চেয়ারম্যান অথবা উহার কোন সদস্য, কর্মকর্তা বা কর্মচারী অথবা পরিষদ প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত বা পরিষদের পক্ষে কর্মরত কোন ব্যক্তির প্রত্যক্ষ গাফেলতি বা অসদাচরনের কারণে পরিষদের কোন অর্থ বাসম্পদের লোকসান, অপচয় বা অপপ্রয়োগ হলে উহার জন্য তিনি দায়ী থাকবেন এবং বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে সরকার তার এ দায়দায়িত্ব নির্ধারণ করবে এবং যে টাকার জন্য তাকে দায়ী করা হবে, সেই টাকা সরকারী দাবী (Public demand) হিসেবে তার নিকট হতে আদায় করা হবে।

৪৪। পরিষদ কর্তৃক আরোপনীয় কর এবং সরকারের অন্যান্য সূত্র হতে প্রাপ্ত আয় : পরিষদ সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে দ্বিতীয় তফসিলে উল্লেখিত সকল অথবা যেকোন কর, টোল এবং ফিস প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে আরোপ করতে পারবে এবং উক্ত তফসিলে নির্ধারিত সরকারের অন্যান্য সূত্র হতে রয়ালটির অংশবিশেষ আহরণ করতে পারবে।

৪৫। কর সম্পর্কিত ইত্যাদি : ১) পরিষদ কর্তৃক আরোপিত সকল কর, রেইট, টোল এবং ফিস প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে প্রজ্ঞাপিত হবে এবং সরকার ভিন্নরূপে নির্দেশ না দিলে উক্ত আরোপের বিষয়টি আরোপের পূর্বে প্রকাশ করতে হবে।

            ২) কোন কর, রেইট, টোল বা ফিস আরোপের বা উহার পরিবর্তনৈর কোন প্রস্তাব অনুমোদিত হলে পরিষদ যে তারিখ নির্ধারিণ করবে, সেই তারিখে উহা কার্যকর হবে।

৪৬। কর সংক্রান্ত দায় : কোন ব্যক্তি বা জিনিসপত্রের ওপর কর, রেইট, টোল বা ফিস আরোপ করা যাবে কিনা উহা নির্ধারণের প্রয়োজনে পরিষদ নোটিশের মাধ্যমে যেকোন ব্যক্তিকে প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করতে বা দলিলপত্র, হিসাব বহি বা জিনিসপত্র হাজির করার জন্য নির্দেশ দিতে পারবে।

৪৭। কর আদায় : ১) এ আইনে ভিন্নরূপ বিধান না থাকলে পরিষদের সকল কর, রেইট, টোল এবং ফিস প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত ব্যকিত্র দ্বারা এবং পদ্ধতিতে আদায় করা হবে।

            ২) পরিষদের প্রাপন্য অনাদায়ী সকল প্রকার কর, রেইট, টোল, ফিস এবং অন্যান্য অর্থ সরকারী দাবী (Public demand) হিসেবে আদায়যোগ্য হবে।

৪৮। কর নির্ধারণের বিরুদ্ধে আপত্তি : প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের নিকট ও প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত পন্থায় এবং সময়ের মধ্যে পেশকৃত লিখিত দরখাস্ত ছাড়া অন্য কোন পন্থায় এ আইনের অধীনে ধার্য কোন কর, রেইট, জোল বা ফিস বা এতদসংক্রান্ত কোন সম্পত্তির মূল্যায়ন অথবা কোন ব্যক্তির উহা প্রদানের দায়িত্ব সম্পর্কে কোন আপত্তি উত্থাপন করা যাবেনা।

৪৯। কর প্রবিধান : ১) পরিষদ কর্তৃক ধার্যকৃত সকল কর, রেইট, টোল বা ফিস এবং অন্যান্য দাবী প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে ধার্য, আরোপ এবং নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।

            ২) এ ধারায় উল্লিখিত বিষয় সম্পর্কিত প্রবিধানে অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে করদাতাদের করণীয় এবং কর ধার্যকারী ও আদায়কারী কর্মকর্তা অন্যান্য কর্তৃপক্ষের ক্ষমতা ও দায়িত্ব সম্পর্কে বিধান থাকবে।

৫০। পরিষদের কার্যাবলীর ওপর নিয়ন্ত্রণ : ১) এ আইনের উদ্দেশের সহিত পরিষদের কার্যকলাপের সামঞ্জস্য নিশ্চয়তা বিধানকল্পে সরকার প্রয়োজনে পরিষদেক পরামর্শ বা অনুশাসন করতে পারবে।

            ২) সরকার যদি এরূপ প্রমাণ পায় যে, পরিষদের দ্বারা বা পক্ষে কৃত বা প্রস্তাবিত কোন কাজকর্ম এ আইনের সহিত সংগতিপূর্ণ নহে অথবা জনস্বার্থের পরিপন্থী, তাহলে সরকার লিখিতভাবে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পরিষদের নিকট হতে তথ্য ও ব্যাখা চাহিতে পারবে এবং পরামর্শ বা নির্দেশ প্রদান করতে পারবে এবং পরিষদ উক্ত তথ্য ও ব্যাখ্যা সরবরাহ এবং পরামর্শ বা নির্দেশ বাস্তবায়ন করবে।

৫১। বিলুপ্ত।

৫২। বিলুপ্ত।

৫৩। পরিষদ বাতিলকরণ :

        ১) যদি প্রয়োজনীয় তদন্তের পর সরকার এরূপ অভিমত পোষণ করে যে, পরিষদ-

ক) উহার দায়িত্ব পালনে অসমর্থ অথবা ক্রমাগতভাবে উহার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে;

খ) উহার প্রশাসনিক ও আর্থিক দায়িত্ব পালনে অসমর্থ;

গ) সাধারণত এমন কাজ করে যা জনসার্স্থ বিরোধী;

ঘ) অন্য কোনভাবে উহার ক্ষমতার সীমা লংঘন বা ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে বা করছে; তাহলে সরকার সরকারী গেজেটে প্রকাশিত আদেশ দ্বারা পরিষদকে বাতিল করতে পারবে।

তবে শর্ত থাকে যে, উক্ত আদেশ প্রদানের পূর্বে পরিষদকে উহার বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর সুযোগ দিতে হবে।

        ২) উপধারা (১) এর অধীনৈ কোন আদেশ প্রকাশিত হলে-

ক) পরিষদের চেয়ারম্যান ও অন্যান্য সদস্যগণ তাদের পদে বহাল থাকবেন না;

খ) বাতিল থাকাকালীন সময়ে পরিষদের যাবতীয় দায়িত্ব সরকার কর্তৃক নিয়োজিত কোন ব্যক্তি বা কর্তৃপক্ষ পালন করবে।

        ৩) উক্ত বাতিলাদেশ সরকারী গেজেট প্রকাশিত হওয়ার ৯০ (নব্বই) দিনের মধ্যে এ আইন ও বিধি মোতাবেক পরিষদ পুনর্গঠিত হবে।

৫৪। যুক্ত কমিটি : পরিষদ অন্য কোন স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সহিত একত্রে উহার সাধারণ স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কোন বিষয়ের জন্য যুক্ত কমিটি গঠন করতে পারবে এবং অনুরূপ কমিটিকে উহার যোকোন ক্ষমতা প্রদান করতে পারবে।

৫৫। পরিষদ ও অন্যকোন স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বিরোধ : পরিষদ এবং অন্যকোন স্থানীয় কর্তৃপক্ষের মধ্যে কোন বিরোধ দেখা দিলে বিরোধীয় বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য সরকারের নিকট প্রেরিত হবে এবং এব্যাপারে সরকারের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে।

৫৬। অপরাধ : তৃতীয় তফসিলে বর্ণিত কোন করণীয় কাজ না করা এবং করণীয় নয় এ প্রকার কাজ করা, এ আইনের অধীনে দণ্ডনীয় অপরাধ হবে।

৫৭। দণ্ড : এ আইনের অধীনে কোন অপরাধের জন্য অনধিক পচিশত টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা যাবে এবং অপরাধ যদি অনবরতভাবে ঘটতে থাকে, তাহলে প্রথম দিনের অপরাধের পর পরবর্তি প্রত্যেক দিনের জন্য অপরাধীকে অতিরিক্ত অনধিক পাঁচশ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা যাবে।

৫৮। অপরাধ বিচারার্থে গ্রহণ : চেয়ারম্যান বা পরিষদ হতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তির লিখিত অভিযোগ ছাড়া কোন আদালত এ আইনের অধীনে কোন অপরাধ বিচারের জন্য গ্রহণ করতে পারবেন না।

৫৯। অভিযোগ প্রত্যাহার : চেয়ারম্যান বা এতদুদ্দেশে পরিষদ হতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তি এ আইনের অধীনে অপরাধ সংক্রান্ত কোন অভিযোগ প্রত্যাহার করতে পারবেন।

৬০। অবৈধভাবে পদার্পণ : ১) জনপথ ও সর্বসাধারণের ব্যবহার্য কোন স্থানে কোন ব্যক্তি কোন প্রকারে অবৈধভাবে পদার্পণ করবেন না।

        ২) উক্তরূপ অবৈধ পদার্পণ হলে পরিষদ নোটিশ দ্বারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অবৈধভাবে পদার্পণকারী ব্যক্তিকে তার অবৈধ পদার্পণ বন্ধ করার জন্য নির্দেশ দিতে পারবে এবং উক্ত সময়ের মধ্যে যদি তিনি এ নির্দেশ মান্য না করেন, তাহলে পরিষদ অবৈধ পদার্পণ বন্ধ করার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে এবং উক্তরূপ ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে অবৈধ পদার্পণকারী কোন প্রকারে ক্ষতিগ্রস্ত হলে' তজন্য তাকে কোন ক্ষতিপুরণ দেয়া হবেনা।

        ৩) অবৈধ পদার্পণ বন্ধ করার প্রয়োজনে গৃহীত ব্যবস্থার জন্য যে ব্যয় হবে, তা উক্ত পদার্পণকারীর ওপর আইনের অধীন ধার্যকর বলে গণ্য হবে।

৬১। আপীল : এ আইন বা কোন বিধি বা প্রবিধান অনুসারে পরিষদ বা উহার চেয়ারম্যানের কোন আদেশ দ্বারা কোন ব্যক্তি সংক্ষুব্ধ হলে তিনি উক্ত আদেশ প্রদানের ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগের নিকট উহার বিরুদ্ধে আপীল করতে পারবেন এবং এ আপীলের ওপর সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে।

৬২। জেলা পুলিশ : ১) আপাতত বলবৎ অন্যকোন আইনে যা কিছুই থাকুক না কেন, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পুলিশের সাবইন্সপেক্টর ও তদনিম্ন স্তরের সকল সদস্য প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে পরিষদ কর্র্তক নিযুক্ত হবেন এবং পরিষদ তাদের বদলী ও প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা পগ্রহণ করতে পারবে। তবে শর্ত থাকে যে, উক্ত নিয়োগের ক্ষেত্রে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার উপজাতীয় বাসিন্দাদের অগ্রাধিকার বজায় থাকবে।

        ২) পরিষদ কর্তৃক নিযুক্ত জেলা পুলিশের সকল কর্মকর্তা ও সদস্যদের চাকুরীর শর্তাবলী তাদের প্রশিক্ষণ, সাজসজ্জা, দায়িত্ব ও কর্তব্য এবং তাদের পরিচালনা অন্যান্য জেলা পুলিশের অনুরূপ হবে এবং এতদসংক্রান্ত বিষয়ে জেলা পুলিশের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য সকল আইন উপধারা (১)-এর বিধার সাপেক্ষে তাদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে।

        ৩) খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পুলিশের সকল স্তরের কোন কর্মকর্তা ও সদস্যগণ তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনের ব্যাপারে এতদসংশ্লিষ্ট অন্যান্য আইনের বিধান অনুযায়ী প্রয়োজনীয় অভিযোজনসহ পরিষদের নিকট দায়ী থাকবেন।

৬৩। পুলিশের দায়িত্ব : খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলায় অপরাধ সংঘটিত হলে ইহার তথ্য পরিষদের চেয়ারম্যানকে অবহিত করা এবং পরিষদের চেয়ারম্যান এবং ইহার কর্মকর্তাগণকে আইনানুগ কর্তৃত্ব প্রয়োগে সহায়তা দান করা সকল পুলিশ কর্মকর্তার দায়িত্ব হবে।

৬৪। ভূমি সংক্রান্ত বিশেষ বিধান : ১) আপাতত বলবৎ অন্য কোন আইনে যা কিছুই থাকুক না কেন-

ক) খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার এলাকাধীন বন্দোবস্তযোগ্য খাস জমিসহ যেকোন জায়গা জমি পরিষদের পূর্বানুমোদন ব্যতিরেকে ইজারা প্রদান, বন্দোবস্ত, ক্রয়, বিক্রয় বা অন্যবিধবাবে হস্তান্তর করা যাবেনা। তবে শর্ত থাকে যে, রক্ষিত (Reserved) বনাঞ্চল, কাপ্তাই জরবিদ্যুৎ প্রকল্প এলাকা, বেতবুনিয়া ভূউপগ্রহ এলাকা, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন শিল্প কারখানা ও সরকারের নামে রেকর্ডকৃত জমির ক্ষেত্রে এ বিধান প্রযোজ্য হবেনা।

খ) পরিষদের নিয়ন্ত্রণ ও আওতাধীন কোন প্রকারের জমি, পাহাড় ও বনাঞ্চল, পরিষদের সহিত আলোচনা ও উহার সম্মতি ব্যতিরেকে সরকার কর্তৃক অধিগ্রহণ ও হস্তান্তর করা যাবেনা।

        ২) হেডম্যান, চেইনম্যান, আমিন, সার্বেয়ার, কানুনগো ও সহকারী কমিশনার (ভূমি)- এর কার্যাদি পরিষদ তত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে।

        ৩) কাপ্তাই হ্রদের জলে ভাসা জমি (Fringe land) অগ্রাধিকার ভিত্তিতে জমির মূল মালিকদেরকে বন্দোবস্ত দেয়া হবে।

৬৫। ভূমি উন্নয়ন কর আদায় : আপাতত বলবৎ অন্য কোন আইনে যা কিছুই থাকুক না কেন, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার এলাকাভুক্ত ভূমি বাবদ আদায়যোগ্য ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ের দায়িত্ব পরিষদে ন্যস্ত থাকবে এবং আদায়কৃত কর পরিষদের তহবিলে জমা হবে।

৬৬। উপজাতীয় বিষয়ে বিরোধ নিষ্পত্তি সংক্রান্ত বিধান : ১) খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার বাসিন্দা এমন উপজাতীয়গণের মধ্যে সামাজিক, সাংস্কৃতিক বা উপজাতীয় বিষয়ে বিরোধ দেখা দিলে বিরোধটি নিষ্পত্তির জন্য স্থানীয় কারবারী বা হেডম্যানের নিকট উত্থাপন করতে হবে এবং তিনি সংশ্লিষ্ট উপজাতীয়গণের মধ্যে প্রচলিত রীতিনীতি অনুযায়ী বিরোধের নিষ্পত্তি করকেন।

        ২) কারবারী বা হেডম্যানের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে খাগড়াছড়ি মং চীফের নিকট আপীল করা যাবে।

        ৩) মং চীফের আপীল নিষ্পত্তির ব্যাপারে দায়িত্ব পালনে সহায়তা করার জন্য একজন ত্রিপুরা এবং একজন চাকমা পরামর্শদাতা থাকবেন এবং তারা সরকার কর্তৃক তিন বৎসরের জন্য মনোনীত হবেন।

        ৪) মং চীফের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম বিভাগের কমিশনারের নিকট আপীল করা যাবে এবং তার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হবে। তবে শর্ত থাকে যে, আপীল নিষ্পত্তির পূর্বে তিনি সংশ্লিষ্ট উপজাতি হতে তৎকর্তৃক মনোনীত অন্যূন তিনজন উপজাতীয় বিজ্ঞ ব্যক্তির সহিত পরামর্শ করবেন।

        ৫) পরিষদ প্রবিধান দ্বারা এ ধারায় উল্লেখিত বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য- ক) বিচার পদ্ধতি, খ) বিচারপ্রার্থী ও আপীলকারী কর্তৃক প্রদেয় ফিস নির্ধারণ করতে পারবে।

৬৭। পরিষদ ও সরকারী কার্যাবলীর সমন্বয় সাধন : পরিষদ এবং সরকারের কার্যাবলীর মধ্যে সমন্বয়ের প্রয়োজন দেখা দিলে এতদবিষয়ে সরকার বা পরিষদ পরস্পরের নিকট সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব উত্থাপন করতে পারবে এবং পারস্পরিক যোগাযোগ বা আলোচনার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় সমন্বয় সাধন করা হবে।

৬৮। বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা : ১) এ আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার পরিষদের সহিত পরামর্শক্রমে এবং সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা বিধি প্রণয়ন করতে পারবে।

        ২) বিশেষ করে এবং উপরিউক্ত ক্ষমতার সামগ্রিকতাকে ক্ষুন্ন না করে অনুরূপ বিধিতে নিম্নবর্ণিত সকল অথবা যেকোন বিষয়ে বিধান করা যাবে; যথা- ক) পরিষদের চেয়ারম্যান এবং সদস্যদের ক্ষমতা ও দায়িত্ব; খ) হিসাব রক্ষণাবেক্ষণ এবং নিরীক্ষণ; গ) পরিষদের কর্মকর্তা ও কর্মচারী এবং অন্যকোন ব্যক্তির দায়দায়িত্ব নির্ধারণ করার পদ্ধতি; ঘ) পরিষদের আদেমের বিরুদ্ধে আপীলের পদ্ধতি; ঙ) পরিষদ পরির্দশনের পদ্ধতি এবং পরিদর্শকের ক্ষমতা; চ) এ আইনের অধীন বিধি দ্বারা নির্ধারণ করতে হবে বা করা যাবে এরূপ যেকোন বিষয়।

        ৩) কোন বিধি প্রণীত হওয়ার পর পরিষদের বিবেচনায় যদি উক্ত বিধি খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার জন্য কষ্টকর বা আপত্তিকর বলে প্রতীয়মান হয়, তাহলে পরিষদ সংশ্লিষ্ট কারণ উল্লেখপূর্বক সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবসহ উক্ত বিধি পুনর্বিবেচনা, সংশোধন, বাতিল বা উহার প্রয়োগ শিথিল করার জন্য সরকারের নিকট আবেদন করতে পারবে এবং সরকার এ আবেদন বিবেচনাক্রমে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারবে।

৬৯। প্রবিধান প্রণয়নের ক্ষমতা : ১) এ আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে পরিষদ এ আইনের বা কোন বিধির বিধানের সহিত অসামঞ্জস্য না হয় এরূপ প্রবিধান প্রণয়ন করতে পারবে। তবে শর্ত থাকে যে, প্রণীত প্রবিধানের কোন অংশ সম্পর্কে সরকার যদি মতভিন্নতা পোষণ করে, তাহলে সরকার উক্ত প্রবিধান সংশোধনের জন্য পরিষদকে পরামর্শ দিকে বা অনুশাসন করতে পারবে।

        ) বিশেষ করে এবং উপরোক্ত ক্ষমতার সামগ্রিকভাবে ক্ষুন্ন না করে অনুরূপ প্রবিধানে নিম্নরূপ সকল অথবা যেকোন বিষয়ে বিধান করা যাবে; যথা-

ক) পরিষদের কার্যাবলী পরিচালনা,

খ) পরিষদের সভায় কোরাম নির্ধারণ,

গ) পরিষদের সভায় প্রশ্ন উত্থাপন,

ঘ) পরিষদের সভা আহবান,

ঙ) পরিষদের সভার কার্যবিবরণী লিখন,

চ) পরিষদের সভায় গৃহীত প্রস্তাবের বাস্তবায়ন;

ছ) সাধারণ সীলমোহরের হেফাজত ও ব্যবাহর,

জ) বিলুপ্ত,

ঝ) পরিষদের অফিসের বিভাগ ও শাখা গঠন এবং উহাদের কাজের পরিধি নির্ধারণ,

ঞ) কার্যনির্বাহ সংক্রান্ত যাবতয়ি বিষয়,

ট) পরিষদ কর্তৃক নিয়োগ করা যাবে এমন সকল পদে কর্মকর্তা ও কর্মচারীর নিয়োগ ও তাদের শৃংখলা,

ঠ) কর, রেইট, টোল এবং ফিস ধার্য ও আদায় সম্পর্কিত যাবতীয় বিষয়,

ড) পরিষদের সম্পত্তিতে অবৈধ পদার্পণ নিয়ন্ত্রণ,

ঢ) গবাদি পশু ও অন্যান্য প্রাণীর বিক্রয় রেজিষ্ট্রীকরণ,

ণ) এতিমখানা, বিধবা সদন এবং দরিদ্রদের ত্রাণ সম্পর্কিত অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের রেজিষ্ট্রীকরণ, ব্যবস্থাপনা এবং নিয়ন্ত্রণ,

ত) জনসাধারণের ব্যবহার্থ সম্পত্তির ব্যবস্থাপনা ও নিয়ন্ত্রণ,

থ) টিকাদান কর্মসূচী বাস্তবায়ন,

দ) সংক্রামক ব্যধি প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ,

ন) সমাজের বা ব্যক্তির জন্য ক্ষতিকর বা বিরক্তিকর কার্যকলাপ প্রতিরোধ,

প) বিপজ্জনক ও ক্ষতিকর ব্যবসায় বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ,

ফ) জনসাধারণের ব্যবহার্য ফেরীর ব্যবস্থাপনা ও নিয়ন্ত্রণ,

ব) গবাদী পশুর খোয়াড়ের ব্যবস্থাপনা ও নিয়ন্ত্রণ,

ভ) ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ,

ম) মেলা, প্রদর্শনী, প্রতিযোগিতামূলক খেলাধুলা, জনসমাবেশ অনুষ্ঠান ও নিয়ন্ত্রণ,

য) বাধ্যতামূলক শিক্ষাদান কর্মসূচী বাস্তবায়ন,

র) ভিক্ষাবৃত্তি, কিশোর অপরাধ, পতিতাবৃত্তি ও অন্যান্য অসমাজিক কার্যকলাপ প্রতিরোধ,

ল) কোন কোন ক্ষেত্রে লাইসেন্স প্রয়োজন হবে এবং কি কি শর্তে প্রদান করা হবে তা নির্ধারণ,

শ) এ আইনের অধীন প্রবিধান দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে বা করা যাবে, এরূপ যেকোন বিষয়।

        ৩) পরিষদের বিবেচনায় যে প্রকারে প্রকাশ করলে কোন প্রবিধান সম্পর্কে জনসাধারণ ভালভাবে অবহিত হতে পারবে, সেই প্রকারে প্রত্যেক প্রবিধান প্রকাশ করতে হবে।

৭০। বিলুপ্ত।

৭১। পরিষদের পক্ষে ও বিপক্ষে মামলা : ১) পরিষদের বিরুদ্ধে বা পরিষদ সংক্রান্ত কোন কাজের জন্য উহার কোন সমস্যা বা কর্মকর্তা বা কর্মচারীর বিরুদ্ধে কোন মামলা দায়ের করতে হলে মামলা দায়ের করতে ইচ্ছুক ব্যক্তিকে মামলার কারণ এবং বাদীর নাম ও ঠিকানা উল্লেখ করে একটি নোটিশ-

ক) পরিষদের ক্ষেত্রে পরিষদের কার্যালয়ে প্রদান করতে হবে বা পৌছায়ে দিতে হবে।

খ) অন্যান্য ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সদস্য, কর্মকর্তা বা কর্মচারীর নিকট ব্যক্তিগতভাবে বা তার অফিস বা বাসস্থানে প্রদান করতে হবে বা পৌছায়ে দিতে হবে।

        ২) উক্ত নোটিশ প্রদান বা পৌছানোর পর ৩০ (ত্রিশ) দিন অতিবাহিত না হওয়া পর্যন্ত কোন মামলা দায়ের করা যাবেনা এবং মামলার আরজিতে উক্ত নোটিশ প্রদান করা বা পৌছানো হয়েছে কিনা তার উল্লেখ থাকতে হবে।

৭২। নোটিশ এবং উহা জারীকরণ : ১) এ আইন, বিধি বা প্রবিধান পালনের জন্য কোন কাজ করা বা করা হতে বিরত থাকা যদি ব্যক্তির কর্তব্য হয়, তাহলে কোন সময়ের মধ্যে ইহা করতে হবে বা ইহা করা হতে বিরত থাকতে হবে, তা উল্লেখ করে তার ওপর একটি নোটিশ জারী করতে হবে।

        ২) এ আইনের অধীন প্রদেয় কোন নোটিশ গঠনগত ক্রটির কারণে অবৈধ হবেন।

        ৩) ভিন্নরূপ কোন বিধান না থাকলে এ আইনের অধীনে প্রদেয় সকল নোটিশ উহার প্রাপককে হাতে হাতে প্রদান করে অথবা তার নিকট ডাকযোগে প্রেরণ করে বা তার বাসস্থান বা কর্মস্থলের কোন বিশিষ্ট স্থানে আটকিয়ে দিয়ে জারী করতে হবে।

        ৪) যে নোটিশ সর্বসাধারণের জন্য তা পরিষদ কর্তৃক নির্ধারিত কোন প্রকাশ্য স্থানে আটকিয়ে দিয়ে জারী করা হলে উহা যথাযথভাবে জারী হয়েছে বলে গণ্য হবে।

৭৩। প্রকাশ্য রেকর্ড : এ আইনের অধীন প্রস্তুতকৃত এবং সংরক্ষিত যাবতীয় রেকর্ড এবং রেজিষ্টার (Evidence Act 1872 (1 of 1872)-তে যে অর্থে প্রকাশ্য রেকর্ড (Public document) কথাটি ব্যবহৃত হয়েছে, সেই অর্থে প্রকাশ্য রেকর্ড বলে গণ্য হবে এবং বিপরীত প্রমাণিত না হলে উহাকে বিশুদ্ধ রেকর্ড বা রেজিষ্টার বলে গণ্য করতে হবে।

৭৪। পরিষদের চেয়ারম্যান, সদস্য ইত্যাদি জনসেবক (Public servant) গণ্য হবেন : পরিষদের চেয়ারম্যান ও উহার অন্যান্য সদস্য এবং উহার কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ এবং পরিষদের পক্ষে কাজ করার জন্য যথাযথভাবে ক্ষমতাপ্রাপ্ত অন্যান্য ব্যক্তি P(Public servant) (Act XLV of 1860) এর (Section 21-এর যে অর্থে জনসেবক (Public servant) বলে গণ্য হবেন। ৭৫। সরল বিশ্বাসে কৃত কাজকর্ম রক্ষণ : এ আইন, বিধি বা প্রবিধান-এর অধীনে সরল বিশ্বাসে কৃত কোন কাজের ফলে কোন ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্থ হলে বা তার ক্ষতিগ্রস্থ হবার সম্ভাবনা থাকলে তজ্জন্য সরকার, পরিষদ বা উহাদের নিকট হতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোন দেওয়ানী বা ফৌজদারী কামলা বা অন্য কোন আইনগত কার্যক্রম গ্রহণ করা যাবে না।

৭৬। রহিতকরণ ও হেফাকত : ১) এ আইনের বিধান অনুযায়ী খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা স্থানীয় সরকার পরিষদ স্থাপিত হবার সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় সরকার (জেলা পরিষদ) আইন, ১৯৮৮ (১৯৮৮ সনের ২৯নং আইন), অতপর উক্ত আইন বলে উল্লিখিত খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার ক্ষেত্রে রহিত হবে।

        ২) উক্ত আইন উক্তরূপে রহিত হবার পর-

ক) খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ, অতপর উক্ত জেলা পরিষদ বলে উল্লিখিত বিলুপ্ত হবে;

খ) উক্ত আইনের অধীন প্রণীত বা প্রণীত হয়েছে বলে গণ্য সকল বিধি, প্রবিধান ও বাই-ল প্রদত্ত বা প্রদত্ত হয়েছে বলে গণ্য সকল আদেশ, জারীকৃত বা জারীকৃত হয়েছে বলে গণ্য সকল বিজ্ঞপ্তি বা নোটিশ এবং মঞ্জুরীকৃত বা মঞ্জুরীকৃত হয়েছে বলে গণ্য সকল লাইসেন্স ও অনুমতি, এ আইনের বিধানাবলীর সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে রহিত বা সংশোধিত না হওয়া পর্যন্ত বলবৎ থাকবে এবং এ আইনের অধীন প্রণীত প্রদত্ত, জারীকৃত বা মঞ্জুরীকৃত হয়েছে বলে গণ্য হবে এবং উক্ত সকল বাই-ল প্রবিধান বলে গণ্য হবে;

গ) উক্ত জেলা পরিষদের সকল সম্পদ, ক্ষমতা, কর্তৃত্ব ও সুবিধা, সকল স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি, তহবিল, নগদ ও ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ, বিনিয়োগ এবং উক্ত সম্পত্তি সম্পর্কীয় উহার যাবতীয় অধিকার বা উহাতে ন্যস্ত যাবতীয় স্বার্থ পরিষদের নিকট হস্তান্তরিত ও ন্যস্ত হবে;

ঘ) উক্ত জেলা পরিষদের যেসকল ঋণ, দায় ও দায়িত্ব ছিল এবং উহার দ্বারা বা উহার সহিত যেসকল চুক্তি সম্পাদিত হয়েছি তা পরিষদের ঋণ, দায় ও দায়িত্ব এবং উহার দ্বারা বা উহার সহিত সম্পাদিত চুক্তি বলে গণ্য হবে;

ঙ) উক্ত জেলা পরিষদ কর্তৃক প্রণীত সকল বাজেট, প্রকল্প ও পরিচালনা বা তৎকর্তৃক কৃত মূল্যায়ন ও নির্ধারিত কর এ আইনের বিধানাবলীর সহিত সামঞ্চস্যপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে রহিত বা সংশোধিত না হওয়া পর্যন্ত বলবৎ থাকবে এবং পরিষদ কর্তৃক এ আইনের অধীন প্রণীত, কৃত বা নির্ধারিত হয়েছে বলে গণ্য হবে;

চ) উক্ত জেলা পরিষদের প্রাপ্য সকল কর, রেইট, টোল, ফিস এবং অন্যান্য অর্থ এ আইনের অধীন পরিষদের প্রাপ্য বলে গণ্য হবে;

ছ) উক্ত আইন রহিত হবার পূর্বে উক্ত জেলা পরিষদ কর্তৃক আরোপিত সকল কর, রেইট, টোল ও ফিস এবং অন্যান্য দাবী পরিষদ কর্তৃক পরিবর্তিত না হওয়া পর্যন্ত একই হারে অব্যাহত থাকবে;

জ) উক্ত জেলা পরিষদের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারী পরিষদের বদলী হবেন ও উহার কর্মকর্তা ও কর্মচারী হবেন এবং তারা উক্তরূপ বদলীর পূর্বে যে শর্তে চাকুরীরত ছিলেন, পরিষদ কর্তৃক পরিবর্তিত না হলে সেই শর্তেই তারা উহার অধীনে চাকুরীরত থাকবেন;

ঝ) উক্ত জেলা পরিষদ কর্তৃক বা উহার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত যেসকল মামলা মকদ্দমা চালু ছিল, সেসকল মামলা মকদ্দমা পরিষদ কর্তৃক বা উহার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত বলে গণ্য হবে।

৭৭। নির্ধারিত পদ্ধতিতে কতিপয় বিষয়ের নিষ্পত্তি : এ আইনের কোন কিছু করার জন্য বিধান থাকাসত্ত্বেও যদি উহা কোন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বা কি পদ্ধতিতে করা হবে তৎসম্পর্কে কোন বিধান না থাকে, তাহলে উক্ত কাজ বিধি নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক এবং বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে করা হবে।

৭৮। অসুবিধা দূরীকরণ : এ আইনের বিধানাবলী কার্যকর করার ক্ষেত্রে কোন অসুবিধা দেখা দিলে সরকার উক্ত অসুবিধা দূরীকরণার্থে আদেশ দ্বারা প্রয়োজনীয় যেকোন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে।

৭৯। কোন আইনের বিধান সম্পর্কে আপত্তি : খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলায় প্রযোজ্য জাতীয় সংসদ কর্তৃক গৃহীত কোন আইন পরিষদের বিবেচনায় উক্ত জেলার জন্য কষ্টকর হলে বা উপজাতীয়দের জন্য আপত্তিকর হলে পরিষদ উহা কষ্টকর বা আপত্তিকর হওয়ার কারণ ব্যক্ত করে আইনটির সংশোধন বা প্রয়োগ শিথিল করার জন্য সরকারের নিকট লিখিত আবেদন পেশ করতে পারবে এবং সরকার এ আবেদন অনুযায়ী প্রতিকারমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবে।

 

প্রথম তফসিল

(পরিষদের কার্যাবলী; ধারা ২২ দ্রষ্টব্য)

 

১। জেলার আইন শৃংখলার তত্ত্বাবধান, সংরক্ষণ ও উহার উন্নতি সাধন।

১ক। পুলিশ (স্থানীয়);

১খ। উপজাতয়ি রীতিনীতি অনুসারে সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও উপজাতীয় বিষয়ক বিরোধের বিচার;

২। জেলার স্থানীয় কর্তৃপক্ষসমূহের উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের বমন্বয় সাধন; উহাদের উন্নয়ন প্রকল্পসমূহের বাস্তবায়ন পর্যালোচনা ও হিসাব নিরীক্ষণ; উহাদিগকে সহায়তা, সহযোগিতা ও উৎসাহ দান।

৩। শিক্ষা :

ক) প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন ও রক্ষণাবেক্ষণ;

খ) সাধারণ পাঠাগার স্থাপন ও রক্ষণাবেক্ষণ;

গ) ছাত্রবৃত্তির ব্যবস্থা;

ঘ) ছাত্রাবাস স্থাপন ও রক্ষণাবেক্ষণ;

ঙ) প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ;

চ) শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আর্থিক মঞ্জুরী প্রদান;

ছ) বয়স্ক শিক্ষার ব্যবস্থা;

জ) শিশু ছাত্রদের জন্য দুগ্ধ সরবরাহ ও খাদ্যের ব্যবস্থা;

ঝ) গরীব ও দুঃস্থ ছাত্রদের জন্য বিনামূল্যে পাঠ্য পুস্তক সরবরাহ;

ঞ) পাঠ্য পুস্তক ও শিক্ষা সামগ্রী বিক্রয় কেন্দ্র স্থাপন ও রক্ষণাবেক্ষণ;

ট) বৃত্তিমূলক শিক্ষা;

ঠ) মাতৃভাষার মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষা;

ড) মাধ্যমিক শিক্ষা।

৪। স্বাস্থ্য :

ক) হাসপাতাল, ডাক্তারখানা, প্রাথমিক চিকিৎসা সাহায্য প্রদানের জন্য সমিতি গঠনে উৎসাহ দান;

খ) ধাত্রী প্রশিক্ষণ;

গ) ধাত্রী প্রশিক্ষণ;

ঘ) ম্যালেরিয়া ও সংক্রামক ব্যধি প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ;

ঙ) পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রম গ্রহণ ও বাস্তবায়ন;

চ) স্বাস্থকেন্দ্র স্থাপন, রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিদর্শন;

ছ) কম্পাউন্ডার, নার্স এবং অন্যান্য চিকিৎসা কর্মীর কার্য পরিদর্শন;

জ) প্রাথমিক স্বাস্থ্য রক্ষার ব্যবস্থা গ্রহণ।

৫। জনস্বাস্থ উন্নয়ন এবং তৎসম্পর্কিত কর্মসূচী প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন; জনস্বাস্থ বিষয়ক শিক্ষা প্রস্তাব।

৬। কৃষি ও বন :

ক) কৃষি উন্নয়ন ও কৃষি খামার স্থাপন ও রক্ষণাবেক্ষণ;

খ) সরকার কর্তৃক রক্ষিত নয় এ প্রকার বন সম্পদ উন্নয়ন ও সংরক্ষণ;

গ) উন্নত কৃষি পদ্ধতি জনপ্রিয়করণ, উন্তত কৃষি যন্ত্রপাতি সংরক্ষণ ও কৃষকগণকে উক্ত যন্ত্রপাতি ধারে প্রদান;

ঘ) পতিত জমি চাষের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ;

ঙ) গ্রামাঞ্চলে বনভূমি সংরক্ষণ;

চ) বাঁধ নির্মাণ ও মেরামত এবং কৃষি কার্যে ব্যবহার্য পানি সরবরাহ, জমানো ও নিয়ন্ত্রণ;

ছ) কৃষি শিক্ষার উন্নয়ন;

জ) ভূমি সংরক্ষণ ও পুনরুদ্ধার এবং জলাভূমির পানি নিষ্কাশন;

ঝ) শস্য পরিসংখ্যান সংরক্ষণ, ফসলের নিরাপত্তা বিধান, বপনের উদ্দেশে বীজের ঋণদান, রাসায়নিক সার বিতরণ এবং উহার ব্যবহার জনপ্রিয়করণ;

ঞ) রাস্তার পার্শ্বে ও জনসাধারণের ব্যবহার্য স্থানে বৃক্ষরোপন উহার সংরক্ষণ।

৭। পশু পালন :

ক) পশুপাখী উন্নয়ন;

খ) পশুপাখীর হাসপাতাল স্থাপন ও রক্ষণাবেক্ষণ;

গ) পশু খাদ্যের মজুদ গড়ে তোলা;

ঘ) পৃহপালিত পশুসম্পদ সংরক্ষণ;

ঙ) চারণ ভূমির ব্যবস্থা ও উন্নয়ন;

চ) পশুপাখীর ব্যধি প্ররোধ ও দূরবীকরণ এবং পশুপাখীর সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ;

ছ) দুগ্ধপল্লী স্থাপন এবং সাস্থাসম্মত আস্তাবলের ব্যবস্থা ও নিয়ন্ত্রণ;

জ) গৃহপালিত পশু খামার স্থাপন ও সংরক্ষণ;

ঝ) হাঁস-মুরগী খামার স্থাপন ও সংরক্ষণ;

ঞ) গৃহপালিত পশু ও হাঁস-মুরগী পালন উন্নয়নের ব্যবস্থাগ্রহণ;

ট) দুদ্ধখামার স্থাপন ও সংরক্ষণ।

৮। মৎসসম্পদ উন্নয়ন, মৎসখামার স্থাপন ও রক্ষণাবেক্ষণ, মৎস ব্যধি প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ।

৯। সমবায় উন্নয়ন ও সমবায় জনপ্রিয়করণ এবং উহাতে উৎসাহ দান।

১০। শিল্প ও বাণিজ্য :

ক) ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প স্থাপন এবং উহাতে উৎসাহ দান;

খ) স্থানীয় ভিত্তিক বাণিজ্য প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন;

গ) হাটবাজার স্থাপন, নিয়ন্ত্রণ ও রক্ষণাবেক্ষণ;

ঘ) গ্রামাঞ্চলে শিল্পসমূহের জন্য কাঁচামাল সংগ্রহ এবং উৎপাদিত সামগ্রীর বাজারজাত করণের ব্যবস্থা;

ঙ) গ্রামভিত্তিক শিল্পের জন্য শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ প্রদান;

চ) গ্রাম বিপণী স্থাপন ও সংরক্ষণ।

১১। সমাজকল্যাণ :

ক) দুঃস্থ ব্যক্তিদের জন্য কল্যাণ সদন, আশ্রয় সদন, অনাথ আশ্রম, এতিমখানা, বিধবা সদন এবং অন্যান্য কল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠান স্থাপন ও রক্ষণাবেক্ষণ;

খ) মৃত নিঃস্ব ব্যক্তিদের দাফন বা অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার ব্যবস্থা করা;

গ) ভিক্ষাবৃত্তি, পতিতাবৃদ্তি, জুয়া, মাদবদ্রব্য সেবন, কিশোর অপরাধ এবং অন্যান্য সামাজিক অনাচার প্রতিরোধ;

ঘ) জনগণের মধ্যে সামাজিক, নাগরিক এবং দেশপ্রেমশূলক গুণাবলীর উন্নয়ন;

ঙ) সালিশী ও আপোষের মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তির ব্যবস্থাগ্রহণ;

ছ) দুঃস্থ ও ছিন্নমূল পরিবারের সাহায্য ও পুনর্বাসন;

জ) সমাজকল্যাণ ও সমাজ উন্নয়নমূলক অন্যান্য ব্যবস্থাগ্রহণ।

১২। সংস্কৃতি :

ক) সাধারণ ও উপজাতীয় সংস্কৃতিমূলক কর্মকাণ্ড সংগঠন ও উহাতে উৎসাহ দান;

খ) জনসাধারণের জন্য ক্রীড়া ও খেলাধূলার উন্নয়ন;

গ) জনসাধারণের ব্যবহার্য স্থানে রেডিওর ব্যবস্থা ও রক্ষণাবেক্ষণ;

ঘ) যাদুঘর ও আর্ট গ্যালারী স্থাপন ও প্রদর্শনীর সংগঠন;

ঙ) পাবলিক হল ও কমিউনিটি সেন্টার প্রতিষ্ঠা এবং জনসভার জন্য স্থানের ব্যবস্থা;

চ) নাগরিক শিক্ষার প্রসার এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও পুনর্গঠন ও পুনগঠন, সাস্থ সমাজ উন্নয়ন, কৃষি, শিক্ষা, গবাদি পশু প্রজনন সম্পর্কিত এবং জনস্বার্থ সম্পর্কিত অন্যান্য বিষয়ের ওপর তথ্য প্রচার;

ছ) জাতীয় দিবস ও উপজাতীয় উৎসবাদি উদ্‌যাপন;

জ) বিশিষ্ট অতিথিগণের অভ্যর্থনা

ঝ) শরীরচর্চার উন্নয়ন, খেলাধূলায় উৎসাহ দান এবং সমাবেশ ও প্রতিযোগিতামূলক ক্রীড়া ও খেলাধূলার ব্যবস্থা করা;

ঞ) স্থানীয় এলাকার ঐতিহাসিক এবং আদি বৈশিষ্টসমূহ সংরক্ষণ;

ট) তথ্যকেন্দ্র স্থাপন ও রক্ষণাবেক্ষণ;

ঠ) সংস্কৃতি উন্নয়নমূলক অন্যান্য ব্যবস্থা।

১৩। সরকার বা কোন স্থানীয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নহে এ প্রকার জনপথ, কালভার্ট ও ব্রীজের নির্মাণ, রক্ষণাবেক্ষণ এবং উন্নয়ন।

১৪। সরকার বা কোন স্থানীয় কর্তৃপক্ষের রক্ষণাবেক্ষণে নহে এমন খেয়াঘাট ব্যবস্থাপনা ও নিয়ন্ত্রণ।

১৫। জনসাধাণের ব্যবহার্য উদ্যান, খেলার মাঠ ও উন্মুক্ত স্থানের ব্যবস্থাপনা ও উদ্যানের রক্ষণাবেক্ষণ।

১৬। সরাইখানা, ডাকবাংলা এবং বিশ্রামাগার স্থাপন ও রক্ষণাবেক্ষণ।

১৭। সরকার কর্তৃক পরিষদের ওপর অর্পিত উন্নয়ন পরিকল্পনার বাস্তবায়ন।

১৮। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি সাধন।

১৯। পানি নিষ্কাশন ও পানি সরবরাহ ব্যবস্থা, রাস্তা পাকাকরণ ও অন্যান্য জনহিতকর অত্যাবশ্যক কাজকরণ।

২০। স্থানীয় এলাকার উন্নয়নকল্পে নক্সা প্রণয়ন।

২১। স্থানীয় এলাকা ও উহার অধিবাসীদের ধর্মীয়, নৈতিক ও আর্থিক উন্নতি সাধনের জন্য ব্যবস্থাগ্রহণ।

২২। পুলিশ (স্থানীয়)।

২৩। উপজাতীয় রীতিনীতি, প্রথা ইত্যাদি এবং সামাজিক বিচার।

২৪। ভূমি ও ভূমি ব্যবস্থাপনা।

২৫। কাপ্তাই হ্রদ ব্যতীত অন্যান্য নদী-নালা ও খাল-বিলের সুষ্ঠু ব্যবহার ও সেচ ব্যবস্থা।

২৬। পরিবেশ সংরক্ষণ ও উন্নয়ন।

২৭। যুব কল্যাণ।

২৮। স্থানীয় পর্যটন।

২৯। পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ ব্যতীত উম্প্রুভমেন্ট ট্রাষ্ট ও অন্যান্য স্থানীয় শাসন সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠান।

৩০। স্থানীয় শিল্প বাণিজ্যের লাইসেন্স প্রদান।

৩১। জন্ম-মৃত্যু ও অন্যান্য পরিসংখ্যান সংরক্ষণ।

৩২। মহাজনী কারবার।

৩৩। জুম চাষ।

 

 

দ্বিতীয় তফসিল

(পরিষদ কর্তৃক আরোপনীয় কর, রেইট, টোল, ফিস এবং

সরকারের অন্যান্য সূত্র হতে প্রাপ্ত আয়; ধারা ৪৪ দ্রষ্টব্য)

 

১। স্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তরের ওপর ধার্য করের অংশ।

২। বিজ্ঞাপনের ওপর কর।

৩। পরিষদের রক্ষণাবেক্ষণাধীন রাস্তা, পুল ও ফেরীর ওপর টোল।

৪। পরিষদ কর্তৃক জনকল্যাণমূলক কাজ সম্পাদনের জন্য রেইট।

৫। পরিষদ কর্তৃক স্থাপিত বা পরিচালিত স্কুলের ফিস।

৬। পরিষদ কর্তৃক কৃত জনকল্যাণমূলক কাজ হতে প্রাপ্ত উপকার গ্রহণের জন্য ফিস।

৭। পরিষদ কর্তৃক প্রদত্ত কোন বিশেষ সেবার জন্য ফিস।

৮। অযান্ত্রিক যানবাহনের রেজিষ্ট্রেশন ফিস।

৯। পণ্য ক্রয়-বিক্রয়ের ওপর কর।

১০। ভূমি ও দালান-কোঠার ওপর হোল্ডিং কর।

১১। গৃহপালিত পশু বিক্রয়ের ওপর কর।

১২। সামাজিক বিচারের ফিস।

১৩। সরকারী ও বেসরকারী শিল্প প্রতিষ্ঠানের ওপর হোল্ডিং কর।

১৪। বনজ সম্পদের ওপর রয়ালটির অংশ বিশেষ।

১৫। সিনেমা, যাত্রা, সার্কাস ইত্যাদির ওপর সম্পূরক কর।

১৬। খনিজ সম্পদ অম্বেষণ বা নিষ্কাশনের উদ্দেশে সরকার কর্তৃক প্রদত্ত অনুমতিপত্র বা পাট্টা সূত্রে রয়ালটির অংশ বিশেষ।

১৭। ব্যবসার ওপর কর।

১৮। লটারীর ওপর কর।

১৯। মৎস ধরার ওপর কর।

২০। সরকার কর্তৃক পরিষদকে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে আরোপিত কোন কর।

 

 

তৃতীয় তফসিল

(এ আইনের অধীন অপরাধসমূহ; ধারা ৫৬ দ্রষ্টব্য)

 

১। পরিষদ কর্তৃক আইনানুগভাবে ধার্যকৃত কর, টোল, রেইট ও ফিস ফাঁকি দেয়া।

২। এ আইন, বিধি বা প্রবিধানের অধীন যেসকল বিষয়ে পরিষদ কোন তথ্য চাহিতে পারে, সেসকল বিষয়ে পরিষদের তলব অনুযায়ী তথ্য সরবরাহের ব্যর্থতা বা ভুল তথ্য সরবরাহ।

৩। এ আইন, বিধি বা প্রবিধানের বিধান অনুযায়ী যে কার্যের জন্য লাইসেন্স বা অনুমতি প্রয়োজন হয়, ঐ কার্য বিনা লাইসেন্সে বা বিনা অনুমতিতে সম্পাদন।

৪। পরিষদের অনুমোদন ব্যতিরেকে সর্বসাধারণের ব্যবহার্য কোন জনপথে অবৈধ পদার্পণ।

৫। পানীর জল দূষিত বা ব্যবাহরের অনুযোগী হয় এমন কোন কাজ করা।

৬। জনস্বাস্থের পক্ষে বিপদজনক হওয়ার সন্দেহে এ আইনের অধীনে কোন উৎস হতে পানি পান করা নিষিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও ঐ উৎস হতে পানি পান করা।

৭। জনসাধারণের ব্যবহার্য কোন পানীর জলের উৎসের সন্নিকটে গবাদিপশু বা জীবজন্তুকে পানি পান করানো, পায়খানা-পেশাব করানো বা গোসল করানো।

৮। আবাসিক এলাকা হতে এ আইনের নির্ধারিত দূরত্বের মধ্যে অবস্থিত কোন পুকুর বা ডোবায় অথবা উহার সন্নিকটে শণ, পাট বা অন্য কোন গাছপালা ডুবায়ে রাখা।

৯। আবাসিক এলাকা হতে এ আইনের অধীনে নির্ধারিত দূরত্বের মধ্যে চামড়া রং করা বা পাকা করা।

১০। আবাসিক এলাকা হতে এ আইনের অধীনে নির্ধারিত দূরত্বের মধ্যে মাটি খনন, পাথর বা অন্য কিছু খনন করা।

১১। আবাসিক এলাকা হতে পরিষদ কর্তৃক নিষিদ্ধ দূরত্বের মধ্যে ইটের ভাটি, চুনভাটি, কাঠ কয়লা ভাটি ও মৃৎশিল্প স্থাপন।

১২। আবাসিক এলাকা হতে পরিষদ কর্তৃক নিষিদ্ধ দূরত্বের মধ্যে মৃত জীবজন্তুর দেহাবশেষ ফেলা।

১৩। এ আইনের অধীনে নির্দেশিত হওয়াসত্বেও কোন জমি বা ইমারত হতে আবর্জনা, জীবন্তুর বিষ্ঠা, সার অর্থবা দুর্গন্ধযুক্ত অন্য কোন পদার্থ অপসারণে ব্যর্থতা।

১৪। এ আইনের অধীনে নির্দেশিত হওয়া সত্ত্বেও কোন শৌচাগার, প্রস্রাবখানা, নর্দমা, মলকুন্ড, পানি, আবর্জনা অথবা বর্জিত পদার্থ রাখার জন্য অন্যান্য স্থান বা পাত্র আচ্ছাদনে, অপসারণে, মেরামতে, পরিষ্কার করতে, জীবাণুমুক্ত করতে অথবা যথাযথভাবে বক্ষণ করতে ব্যর্থতা।

১৫। এ আইনের অধীনে কোন আগাছা, ঝোপঝাড় বা লতাগুল্ম জনস্বাস্থের বা পরিবশের জন্য প্রতিকূল ঘোষণা করাসত্ত্বেও অপসারণ বা পরিষ্কার করতে সংশ্লিষ্ট জমির মালিকের বা দখলদারের ব্যর্থতা।

১৬। জনপথ সংলগ্ন কোন স্থানে জন্মানো কোন আগাছা, লতা গুল্ম বা গাছপালা জনপথের ওপর ঝুলে পড়ে অথবা জনসাধারণের ব্যবহার্য পানির কোন পুকুর, কুয়া বা অন্য কোন উৎসের ওপর ঝুলে পড়ে চলাচলের বিঘ্ন সৃষ্টি করাসত্ত্বেও বা পানি দূষিত করাসত্ত্বেও সংশ্লিষ্ট স্থানে মালিক বা দখলদার কর্তৃক উহা কেটে ফেলতে, অপসারণ করতে বা ছেটে ফেলতে ব্যর্থতা।

১৭। এ আইনের অধীনে জনস্বাস্থের জন্য বা পার্শ্ববর্তী এলাকার জন্য ক্ষতিকর বলে ঘোষিত কোন শষ্যের চাষ করা, সারের প্রয়োগ করা বা ক্ষতিকর বলে ঘোষিত পন্থায় জমিতে সেচের ব্যবস্থা করা।

১৮। এ আইনের বিধান অনুসারে প্রয়োজনীয় অনুমতি ব্যতিরেকে ইচ্ছাকৃতভাবে অথবা অবহেলাভরে পায়খানার গর্ত বা পায়খারার নালা হতে মলমূত্র বা অন্য কোন ক্ষতিকর পদার্থ কোন জনপথ বা জনসাধারণের ব্যবহার্য কোন স্থানের ওপর ছড়ায়ে পড়তে বা গড়ায়ে যেতে দেয়া বা এতদুদ্দেশে ব্যবহৃত নয় এ প্রকার কোন নর্দমা, খাল বা পয়ঃপ্রণালীর ওপর পতিত হতে দেয়া।

১৯। এ আইনের অধীনে জনস্বাস্থের জন্য বা পাশ্ববর্তী এলাকার জন্য ক্ষতিকর বলে ঘোষিত কোন কূপ, পুকুর বা পানি সরবরাহের জন্য কোন উৎস পরিষ্কার করতে, মেরামত করতে, আচ্ছাদন করতে বা উহা হতে পানি নিষ্কাশন করতে উহার মালিক বা দখলদারের ব্যর্থতা।

২০। এ আইনের বিধান অনুযায়ী নির্দেশিত হয়ে কোন জমি বা দালান হতে কোন পানি বা আবর্জনা নিষ্কাশনের জন্য যথোপযুক্ত পাইপ বা নর্দমার ব্যবস্থা করতে জমি বা দালানের মালিক বা দখলদারের ব্যর্থতা।

২১। চিকিৎসক হিসেবে কর্তব্যরত থাকাকালে সংক্রামক রোগের অস্তিত্ব সম্পর্কে অবগত হওয়া সত্ত্বেও পরিষদের নিকট তৎসম্পর্কে রিপোর্ট করতে কোন চিকিৎসকের ব্যর্থতা।

২২। কোন দালানে সংক্রামক রোগের অস্তিত্ব সম্পর্কে জানাসত্ত্বেও তৎসম্পর্কে কোন ব্যক্তির পরিষদকে খবর দিতে ব্যর্থতা।

২৩। সংক্রামক রোগজীবাণুর দ্বারা আক্রান্ত কোন দালানকে রোগজীবাণু মুক্ত করতে উহার মালিক বা দখলদারের ব্যর্থতা।

২৪। সংক্রামক ব্যীধতে আক্রান্ত ব্যক্তি কর্তৃক খাদ্য বা পানীয় বিক্রয় করা।

২৫। রোগজীবাণু দ্বারা আক্রান্ত যানবাহনের মালিক বা চালক কর্তৃক উহাকে রোগজীবাণু মুক্ত করতে ব্যর্থতা।

২৬। দুগ্ধের জন্য বা খাদ্যের জন্য রক্ষিত কোন প্রাণীকে ক্ষতিকর কোন দ্রব্য খাওয়ানো বা খাওয়ার সুযোগে দেয়ো।

২৭। এতদুদ্দেশে নির্ধারিত স্থান ব্যতিরেকে অন্য কোন স্থানে মাংস বিক্রয়ের উদ্দেশে কোন প্রাণী জবাই করা।

২৮। ক্রেতার চাহিদা মোতাবেক খাদ্য বা পানীয় সরবরাহ না করে নিম্ন বা ভিন্ন মানের খাদ্য বা পানীয় সরবরাহ করে ক্রেতাকে ঠকানো।

২৯। ভিক্ষার জন্য বিরক্তিকর কাকুতি মিনতি করা বা শরীরের কোন বিকৃত বা গলিত অংম অংশ বা নোংড়া ক্ষতস্থান প্রদর্শন করা।

৩০। এতদুদ্দেশে নিষিদ্ধ এলাকায় পতিতালয় স্থাপন বা পতিতাবৃত্তি পরিচালনা করা।

৩১। কোন বৃক্ষ বা উহার শাখা কর্তন বা কোন দালান বা উহার কোন অংশ নির্মাণ বা ভাংচুর এ আইনের অধীনে জনসাধারণের জন্য বিপজ্জনক বা বিরক্তিকর বলে ঘোষণা করাসত্ত্বেও উহার কর্তন, নির্মাণ বা ভাংচুর।

৩২। পরিষদের অনুমোদন ব্যতিরেকে কোন রাস্তা নির্মাণ।

৩৩। এতদুদ্দেশে নির্ধারিত কোন স্থান ব্যতীত অন্য কোনস্থানে কোন বিজ্ঞাপন, নোটিশ, প্ল্যাকার্ড বা অন্য কোন প্রকার প্রচারপত্র এ্যাটে দেয়া।

৩৪। এ আইনের অধীনে বিপজ্জনক বলে ঘোষিত পদ্ধতিতে কাঠ, ঘাস, খড় বা অন্য কোন দাহ্য বস্তু স্তুপিকৃত করা।

৩৫। এ আইনের অধীনে প্রয়োজনীয় অনুমতি ব্যতিরেকে কোন রাস্তায় ওপরে পিকেটিং করা, জীবজন্তু রাখা, যানবাহন জমা করে রাখা অথবা কোন রাস্তাতে যানবাহন বা জীবজন্তুকে থামাবার স্থান হিসেবে অথবা তাবু খাটাবার স্থান হিসেবে ব্যবহার করা।

৩৬। গৃহপালিত জীবজন্তুকে ইতস্তত ঘুড়ে বেড়াতে দেয়া।

৩৭। সূর্যাস্তের অর্ঘঘন্টা পর হতে সূর্যোদয়ের অর্ধঘন্টা পূর্ব পর্যন্ত সময়ের মধ্যে কোন যানবাহনে যথাযথ বাতির ব্যবস্থা না করে চালানো।

৩৮। যানবাহন চালানোর সময় সংগত কারণ ব্যতীত রাস্তার বাম পার্শ্বে না থাকা অথবা একই দিকগামী অন্য কোন যানবাহনের ডান পার্শ্বে না থাকা অথবা রাস্তার চলাচল সংক্রান্ত অন্যান্য বিধি না মানা।

৩৯। এ আইনের অধীনে প্রদত্ত কোন নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গ করে রেডিও বা বাদ্যযন্ত্র বাজানো, ঢাকঢোল পিটানো, ভেঁপু বাজানো অথবা বাঁসা বা অ্যকোন জিনিসের দ্বারা আওয়াজ সৃষ্টি করা।

৪০। আগ্নেয়াস্ত্র, পটকা বা আতসবাজী এমনভাবে ছোড়া অথবা উহাদের লয়ে এমনভাবে খেলায় বা শিকারে রত হওয়া যাতে পথচারী বা পার্শ্ববর্তী এলাকায় বসবাসকারী বা বর্মরত লোকজনের বা কোন সম্পত্তির বিপদ বা ক্ষতি হয় বা হবার সম্ভাবনা থাকে।

৪১। পথচারী বা পার্শ্ববর্তী এলাকার বসবাসকারী বা কর্মরত লোকজনের বিপদ হয় বা বিপদ হবার সম্ভাবনা থাকে এমনভাবে গাছ কাটা, দালানকোঠা নির্মাণ বা খনন কাজ পরিচালনা করা অথবা বিষ্ফোরণ ঘটানো।

৪২। এ আইনের অধীনে প্রয়োজনীয় অনুমতি ব্যতিরেকে স্বীকৃত গোরস্থান বা শ্মশান ছাড়া অন্য কোথাও লাশ দাফন করা বা শবদাহ করা।

৪৩। হিংস্র কুকুর বা অন্য কোন ভয়ংকর প্রাণীকে নিয়ন্ত্রণবিহীনভাবে ছেড়ে দয়ো বা লেলায়ে দেয়া।

৪৪। এ আইনের অধীনে বিপজ্জনক বলে কোন দালানকে ভেংগে ফেলতে বা উহাকে মজবুত করতে ব্যর্থতা।

৪৫। এ আইনের অধীনে মনুষ্য বসবাসের অনুযোগী বলে ঘোষিত দালানকোঠা বসবাসের জন্য ব্যবহার করা বা কাকেও উহাতে বসবাস করতে দেয়া।

৪৬। এ আইনের বিধান মোতাবেক কোন দালান চুনকাম বা মেরামত করার প্রয়োজন হলে তা করতে ব্যর্থতা।

৪৭। এ আইনে বা কোন বিধি বা তদধীন প্রদত্ত কোন আদেশ, নির্দেশ বা ঘোষণা বা জারীকৃত কোন বিজ্ঞপ্তির খেলাপ।

৪৮। এ তফসিলে উল্লিখিত অপরাধসমূহ সংঘটনের চেষ্টা বা সহায়তা করা।

 

সূত্র: বাংলাদেশের উপজাতিদের আইন- রামকান্ত সিংহ, ২০০

 

সৌজন্যে: প্যান লোকালাইজেশন প্রোজেক্ট