সালিস আইন, ২০০১
[২০০১ সনের ১নং আইন]১
আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক সালিস, বিদেশী সালিসী রোয়েদাদ স্বীকৃতি ও বাস্তবায়ন এবং অন্যান্য সালিস সম্পর্কিত বিধান প্রণয়নকল্পে প্রণীত আইন।
যেইহেতু আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক সালিস, বিদেশী সালিসী রোয়েদাদ স্বীকৃত ও বাস্তবায়ন এবং অন্যান্য সালিস সম্পর্কিত বিধান প্রণয়ন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;
সেইহেতু এতদ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল :
প্রথম পরিচ্ছেদ
প্রারম্ভিক
ধারা-১ : সংক্ষিপ্ত শিরোনামা, প্রয়োগ ও প্রবর্তন :¾ (১) এই আইন সালিস আইন, ২০০১ নামে অভিহিত হইবে।
(২) ইহা সমগ্র বাংলাদেশে প্রযোজ্য হইবে।
(৩) সরকার, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, যেই তারিখ নির্ধারণ করিবে সেই তারিখে এই আইন কার্যকর হইবে।
১. সংসদ কর্তৃক গৃহীত নিম্নলিখিত আইনটি ২৪শে জানুয়ারী, ২০০১ (১১ই মাঘ, ১৪০৭) তারিখে রাষ্ট্রপতির সম্মতি লাভ করিয়অছে এবং এতদ্বারা আইনটি সর্বসাধারণের অবগতির জন্য প্রকাশ করা যাইতেছে।
দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ
সাধারণ বিধানাবলী
ধারা-২। সংজ্ঞা : বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থী কোন কিছু না থাকিলে, এই আইনে-
(ক) "আইনানুগ প্রতিনিধি" অর্থ কোন ব্যক্তি যিনি আইনানুগভাবে কোন মৃত ব্যক্তির সম্পত্তির প্রতিনিধিত্ব করেন উক্ত ব্যক্তি; এবং যিনি কোন মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি পরিচালনার সহিত সম্পৃক্ত থাকেন, এবং যেক্ষেত্রে কোন পক্ষ প্রতিনিধিত্বশীল বৈশিষ্ট্যে কার্য সম্পাদন করেন সেই ক্ষেত্রে উক্ত পক্ষের মৃত্যু হইলে যেই ব্যক্তির উপর উক্ত সম্পত্তি বর্তায় উক্ত ব্যক্তিও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবেন;
(খ) "আদালত" অর্থ জেলাজজ আদালত, এবং সরকার কর্তৃক, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের অধীন জেলাজজ আদালতের কার্য সম্পাদনের জন্য নিযুক্ত অতিরিক্ত জেলাজজ আদালতও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;
(গ) "আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক সালিস" অর্থ সুস্পষ্টভাবে বিধৃত চুক্তিগত বা চুক্তিবহির্ভুত আইনানুগ সম্পর্ক হইতে উদ্ভুত বিরোধ সম্পর্কিত কোন সালিস যাহা বাংলাদেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী বাণিজ্যিক বিরোধ হিসাবে বিবেচিত হয় এবং যেক্ষেত্রে পক্ষগণের মধ্যে কোন একটি পক্ষ-
(অ) একজন ব্যক্তি যিনি বাংলাদেশ ব্যতীত অন্য কোন রাষ্ট্রের নাগরিক, কিংবা ঐ দেশের স্বাভাবিক বাসিন্দা হয়; অথবা
(আ) বাংলাদেশ ব্যতীত অন্য কোন রাষ্ট্রে নিগমবন্ধ সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান হয়; অথবা
(ই) কোম্পানী বা সঙ্গ বা ব্যক্তি সমন্বিত প্রতিষ্ঠান যাহার কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপনা ও নিয়ন্ত্রণ বাংলাদেশ ব্যতীত অন্য কোন দেশে প্রয়োগ হয়; অথবা
(ঈ) কোন বিদেশী রাষ্ট্রের সরকার হয়;
(ঘ) "তামাদি আই" অর্থ Limitation Act. 1908 (LX of 1908);
(ঙ) "দেওয়ানী কার্যবিধি" অর্থ Code of civil Procedure, 1908 (Act V of 1908);
(চ) "নির্দিষ্ট রাষ্ট্র" অর্থ ধারা ৪৭ এর অধীন সরকার কর্তৃক ঘোষিত কোন নির্দিষ্ট রাষ্ট্র;
(ছ) "পক্ষ" অর্থ সালিস চুক্তির কোন পক্ষ;
(জ) "প্রধান বিচারপতি" অর্থ বাংলাদেমের প্রধান বিচারপতি;
(ঝ) "বিধি" অর্থ এই আইনের অধীনে প্রণীত বিধি;
(ঞ) "ব্যক্তি" অর্থে সংবিধিবদ্ধ বা অন্যবিধ সংস্থা, কোম্পানী, সমিতি এবং অংশীদারী কারবারও (Partnership firm) অন্তর্ভুক্ত হইবে।
(ট) "বিদেশী সালিসী রোয়েদাদ" অর্থ এমন কোন সালিসী রোয়েদাদ যাহা কোন সালিস চুক্তির ভিত্তিতে বাংলাদেশ ব্যতীত অন্য কোন রাষ্ট্রের ভূখন্ডে প্রদত্ত হয়, তবে কোন নির্দিষ্ট রাষ্ট্রের ভূখন্ডে প্রদত্ত কোন সালিসী রোয়েদাদ ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে না;
(ঠ) "সাক্ষ্য আইন" অর্থ Evidence Act. 1872 (Act 1 of 1872);
(ড) "সালিস" অর্থ কোন সালিস যাহা স্থায়ী কোন সালিসী সংস্থা কর্তৃক পরিচালিত হউক বা না হউক;
(ঢ) "সালিস চুক্তি" অর্থ সুস্পষ্টভাবে বিধৃত চুক্তিবহির্ভুতভাবে পারস্পরিক সম্মতিক্রমে আইনানুগ সম্পর্ক হইতে উদ্ভুত কিংবা উদ্ভব হইতে পারে এইরূপ সকল বা যে কোন বিষয়ের বিরোধ সালিসের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করার জন্য উক্ত আইনানুগ সম্পর্কের পক্ষগণ কর্তৃক সালিসে প্রেরণ করা সম্পর্কিত চুক্তি;
(ণ) "সালিসী ট্রাইব্যুনাল" অর্থ একমাত্র সালিসকারী বা সালিসকারীদের প্যানেল;
(ত) "সালিসী রোয়েদাদ" অর্থ বিরোধের বিষয়বস্তুর উপর সালিসী ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক প্রদত্ত সিদ্ধান্ত;
(থ) "ইহাকোর্ট বিভাগ" অর্থ বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ;
ধারা-৩। পরিধি।¾ (১)কোন সালিসের স্থান বাংলাদেশ হইলে উক্ত সালিসের ক্ষেত্রে এই আইনের বিধানাবলী প্রযোজ্য হইবে।
(২) উপ-ধারা (১) এ যাহা কিচুই থাকুক না কেন, কোন সালিসের স্থান বাংলঅদেশের বাহিরে হইলে এই আইনের ধারা ৪৫, ৪৬, ও ৪৭ এর বিধানাবলী উক্ত সালিসের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হইবে।
(৩) আপাতত : বলবৎ অন্য কোন আইনের অধীন কোন বিরোধ সালিসে প্রেরণের সুযোগ না থাকিলে সেই সকল আইনের কোন কিছুই এই আইন দ্বারা ক্ষুণ্ণ হইবে না।
(৪) এই আইন কার্যকর হইবার পূর্বে বা পরে কোন সালিস চুক্তি সম্পাদিত হইয়া থাকিলে উক্ত সালিস চুক্তি হইতে উদ্ভুত কোন বিরোধের বিষয়ে বাংলাদেশে সূচিত সালিস কার্যক্রমের ক্ষেত্রে এই আইনের বিধানাবলী প্রযোজ্য হইবে।
ধারা-৪। বরাতের ব্যাখ্যা (Construction of References) ।¾ (১) কোন নির্দিষ্ট বিষয় নির্ধারণের জন্য যেইক্ষেত্রে এই আইন পক্ষগণের স্বাধীণতা রহিয়াছে। সেইক্ষেত্রে, ধারা ৩৬ এ বর্ণিত বিষয় ব্যতীত পক্ষগণ কর্তৃক অন্য কোন ব্যক্তিকে উক্ত নির্দিষ্ট বিষয় নিধারণের ক্ষমতার্পণও উক্তরূপ স্বাধীনতার অন্তর্ভুক্ত হইবে।
(২) যেইক্ষেত্রে এই অঅইন-
(ক) পক্ষগণ কোন বিষয়ে সম্মত হন বা হইতে পারেন মর্মে কোন চুক্তিতে উল্লেখ করা হয়; অথবা
(খ) পক্ষগণের মধ্যে অন্য কোনভাবে কোন চুক্তির উল্লেখ করা হয়-
সেই ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট চুক্তিতে উল্লেখিত কোন সালিস বিধিও উক্ত চুক্তির অন্তর্ভুক্ত হইবে।
যেইক্ষেত্রে এই আইনের অধীন দাবী উত্থাপন করা হয় সেইক্ষেত্রে উক্ত দাবীর পাল্টা দাবী, দঅবীর জব্ব ও পাল্টা জবাবের ক্ষেত্রেও এই আইনের ধারা-৩৫ এর উপ-ধারা (৩) এর দফা (ক) বা ধারা-৪১ এর উপ-ধারা (২) এর দফা (ক) ব্যতীত অন্যান্য বিধানাবলী প্রযোজ্য হইবে।
ধারা-৫। লিখিত যোগাযোগের প্রাপ্তি।¾ (১) পক্ষগণ ভিন্নভাবে সম্মত না হইলে, এই আইনের অধীন কোন লিখিত যোগাযোগ, নোটিশ বা সমন কোন পক্ষ বা ব্যক্তির জারী করার প্রয়োজন হইলে এবং জারীর বিষয়ে পক্ষগণ ভিন্নভাবে সম্মত না হইলে, উক্ত লিখিত যোগাযোগ, নোটিশ বা সমন সেই পক্ষ বা ব্যক্তির উপর জারী হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে, যদি-
(ক) উহা তাহাকে বক্তিগতভাবে বা তাহার ব্যবসায়িক ঠিকানা বা তাহার স্বাভাবিক বাসস্থান বা অন্য কোনভাবে তাহার চিঠির ঠিকানায় সরবরাহ করা হইয়া থাকে; এবং
(খ) দফা (ক) তে উল্লেখিত কোন জায়গায় স্বাভাবিক অনুসন্ধানের পরও তাহাকে না পাওয়া যায় তাহা হইলে তাহার শেষ জানা ব্যবসায়িক, বাসস্থান বা চিঠির ঠিকানায় রেজিষ্ট্রিকৃত ডাকযোগে বা অন্য কোন পদ্ধতিতে প্রেরিত হয় এবং উহাতে উক্তরূপে প্রেরণের প্রমাণ লিপিবদ্ধ থাকে।
(২) যোগাযোগ, নোটিশ বা সমন যেই তারিখে, ক্ষেত্রমত, সরবরাহ বা প্রেরণ করা হইবে সেই তারিখে প্রাপ্ত হইয়াছে মর্মে গণ্য হইবে।
(৩) কোন বিচার বিভাগীয় কর্তৃপক্ষের কার্যধারা সম্পর্কিত যোগাযোগ নোটিশ বা ক্ষেত্রমত সমনের ক্ষেত্রে এই ধারা প্রযোজ্য হইবে না।
ধারা-৬। আপত্তির অধিকার পরিত্যাগ।¾ কোন পক্ষ-
(ক) পক্ষগণ ব্যত্যয় ঘটাইতে পারে এই আইনের এমন কোন বিধান প্রতিপালিত হয় নাই; বা
(খ) সালিস চুক্তির অধীন কোন আবশ্যকতা প্রতিপালিত হয় নাই,
মর্মে অবগত থাকিয়া উক্ত পক্ষ যদি অযৌক্তিক বিলম্ব ব্যতীত বা দতবিষয়ে কোন সময়সীমা থাকিলে অনুরূপ সময়সীমার মধ্যে আপত্তি না করিয়া সালিসে অগ্রসর হয়, তাহা হইলে উক্ত পক্ষ আপত্তির অধিকার পরিত্যাগ করিয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।
ধারা-৭। সালিস চুক্তির আওতাভুক্ত বিষয়ে আদালতের এখতিয়ার।¾ সালিস চুক্তির কোন পক্ষ অপর কোন পক্ষের বিরুদ্ধে উক্ত চুক্তির অধীনৈ সালিস অর্পণে সম্মত কোন বিষয়ে আইনগত কার্যধারা রুজু করিলে, বর্তমানে প্রচলিত অন্য কোন আইনে যাহাই থাকুক না কেন, এই আইনের বিধান ব্যতীত অন্য কোন আইনগত কার্যধারার শুনানীর এখতিয়ার আদালতের থাকিবে না।
ধারা-৮। প্রশাসনিক সহায়তা।¾ সালিসী কার্যধারা পরিচালনা সহজতর করার লক্ষ্যে পক্ষগণ বা পক্ষগণের সম্মতিক্রমে, সালিসী ট্রাইব্যুনাল কোন উপযুক্ত ব্যক্তির মাধ্যমে সহায়তা গ্রহণ করিতে পারিবে।
তৃতীয় অনুচ্ছেদ
সালিস চুক্তি
ধানা-৯। সালিস চুক্তির ধরণ।¾ (১) কোন সালিস চুক্তি (arbitration agreement) কোন চুক্তিতে (Contract) সালিস অনুচ্ছেদরূপে বা পৃথক চুক্তি আকারে হইতে পারিবে।
(২) সালিস চুক্তি লিখিত হইতে হইবে এবং একটি সালিস চুক্তি লিখিত বলিয়া গণ্য হইবে যদি চুক্তির বিষয়টি-
(ক) পক্ষগণ দ্বারা সহিকৃত কোন দলিলের অংশ হয়;
(খ) চিঠি, টেলেক্স, টেলিগ্রাম, ফ্যাক্স, ই-সেইল বা বিনিময়ের জন্য কোন মাধ্যমে যোগাযোগ করা হয় এমন কোন ইনষ্ট্রুমেন্টে উল্লেখ থাকে;
(গ) দাবী ও দাবীর জবাব সংক্রান্ত পক্ষগণের মধ্যে বিনিময়কৃত কোন ষ্টেটমেন্টে উল্লেখ থাকে যাহা এক পক্ষ চুক্তির অস্তিত্ব বলিয়া দাবী করে এবং অপর পক্ষ উহা অস্বীকার করে না।
ব্যাখ্যা।¾ কোন লিখিত চুক্তিতে (Contract) সালিস অনুচ্ছেদ সম্বলিত অন্য কোন দালিলের উল্লেখ থাকিলে এবং উক্তরূপ উল্লেখ থাকার ফলে সালিস অনুচ্ছেদ চুক্তির অংশে পরিণত হইলে উহা সালিস চুক্তি হইবে।
ধারা-১০। বিরোধের সালিসযোগ্যতা।¾ সালিস চুক্তির কোন পক্ষ বা উক্ত পক্ষের অধীন দাবীদার কোন ব্যক্তি সালিসের মাধ্যমে মীসাংসা হইবে মর্মে মতৈক্য হইয়াছে এমন কোন বিষয়ে চুক্তির অন্য কোন পক্ষ বা অনুরূপ পক্ষের অধীন দাবিীদার কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোন আদালতে কোন আইনগত কার্যধারা রুজু করিলে, উক্ত কার্যধারায় লিখিত জবাব দাখিল করিবার পূর্বে যে কোন পক্ষ বিষয়টি সালিসে অর্পণ করিবার জন্য সংশ্লিষ্ট আদালতে আবেদন করিতে পারিবে।
(২)উপ-ধারা (১) এর অধীন আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালতের নিকট যদি প্রতীয়মান হয় যে সংশ্লিষ্ট সালিস চুক্তি বিদ্যমান আছে এবং উহা বাতিল, অকার্যকর বা সালিস দ্বারা নিষ্পত্তির অযোগ্য হয় নাই, তাহা হইলে আদালত বিষয়টি সালিসে প্রেরণ করিবে এবং উক্ত কার্যধারা স্থগিত করিবে।
(৩) উপ-ধারা (১) এর অধীন আবেদন আদালতের বিবেচনাধীন এবং আইনগত কার্যধারা বিচারাধীন থাকা সত্ত্বেও সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সালিস সূচনা করা, অব্যাহত রাখা এবং সালিসী রোয়েদাদ প্রদান করা যাইবে।
চতুর্থ পরিচ্ছেদ
সালিসী ট্রাইব্যুনাল গঠন
ধারা-১১। সালিসকারীর সংখ্যা।¾ (১) উপ-ধারা (৩) এর বিধানাবলী সাপেক্ষে সালিসী ট্রাইব্যুনালের সালিসকারীর সংখ্যা নির্ধারণে পক্ষগণের স্বাধীনতা থাকিবে।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন সংখ্যা নির্ধারিত না হইলে তিনজন সালিসকারী সমন্বয়ে সালিসী ট্রাইব্যুনাল গঠিত হইবে।
(৩) ভিন্নভাবে সম্মত না হইলে পক্ষগণ যেইক্ষেত্রে জোড়সংখ্যক সালিসকারী নিয়েঅগ করিবে সেইক্ষেত্রে নিয়োগপ্রাপ্ত সালিসকারীগণ যৌথভাবে একজন অতিরিক্ত সালিসকারী নিয়োগ করিবেন, যিনি ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করিবেন।
ধারা-১২। সালিসকারী নিয়োগ।¾ (১) সালিসকারী নিয়োগ সম্পর্কিত পদ্ধতি নির্ধারণে সম্মত হইতে পক্ষগণের, এই আইনের বিধানবলী সাপেক্ষে, স্বাধীনতা থাকিবে।
(২) পক্ষগণ ভিন্নভাবে সম্মত না হইলে, যে কোন জাতীয়তার ব্যক্তিকে সালিসকারী নিয়োগ করা যাইবে।
(৩) উপ-ধারা (১) এ উল্লেখিত সম্মত পদ্ধতির অবর্তমানে-
(ক) একমাত্র সালিকসারীর সমন্বয়ে গঠিত সালিসী ট্রাইব্যুনালের ক্ষেত্রে কোন পক্ষ হইতে অনুরোধ প্রাপ্তির ত্রিশ দিনের মধ্যে পক্ষগণ সালিসকারী নিয়োগে সম্মত হইতে ব্যর্থ হইলে, যে কোন পক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে-
(অ) আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক সালিস ব্যতীত অন্যান্য সালিসের ক্ষেত্রে, জেলাজজ উক্ত সালিসকারী নিয়োগ করিবেন; এবং
(আ) আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক সালিসের ক্ষেত্রে বিচারপতি বিংবা প্রধান বিচারপতি কর্তৃক সুপ্রীম কোর্টের কোর বিচারক উক্ত সালিসকারী নিয়োগ করিবেন;
(খ) তিনজন সালিসকারী সমন্বয়ে গঠিত সালিসের ক্ষেত্রে, পক্ষগণ ভিন্নভাবে সম্মত না হইলে, প্রত্যেক পক্ষ একজন করিয়া সালিসকারী নিয়োগ করিবে এবং উক্তরূপে নিযুক্ত সালিককারীগণ তৃতীয় একজন সালিসকারী নিয়োগ করিবেন, যিনি সালিসী ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান হইবেন।
(৪) উপ-ধারা (৩) এর অধীন নিয়োগ পদ্ধতি অনুসারণের ক্ষেত্রে-
(ক) অপর পক্ষ হইতে অনুরোধ প্রাপ্তির ত্রিশ দিনের মধ্যে সালিসকারী নিয়োগ করিতে যদি কোন পক্ষ ব্যর্থ হন; অথবা
(খ) নিয়োগপ্রাপ্ত সালিসকারী যদি তাহাদের নিয়োগের পরবর্তি ত্রিশ দিনের মধ্যে তৃতীয় সালিসকারী নিয়োগে সম্মত হইতে ব্যর্থ হন তাহা হইলে, যে কোন পক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে উক্ত তৃতীয় সালিসকারী;
(গ) আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক সালিস ব্যতীত অন্যান্য সালিসের ক্ষেত্রে জেলাজজ নিয়োগ করিবেন; এবং
(ঘ) আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক সালিসের ক্ষেত্রে প্রধান বিচারপতি, কিংবা প্রধান বিচারপতি কর্তৃক মনোনীত সুপ্রীম কোর্টের কোন বিচারক নিয়োগ করিবেন।
(৫) উপ-ধারা (৪) এর দফা (খ) এর অধীন নিযুক্ত তৃতীয় সালিসকারী উক্ত ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান হইবেন।
(৬) উপ-ধারা (৪) এর অধীন একাধিক সালিসকারী নিযুক্ত হইলে, জেলাজজ বা, ক্ষেত্রমত, প্রধান বিচারপত কিংবা প্রধান বিচারপতি কর্তৃক মানোনীত সুপ্রীম কোর্টের কোন বিচারক উক্ত সালিসকারীদের মধ্য হইতে একজনকে সালিসী ট্রাইব্যুনালের চেযারম্যান নিয়োগ করিবেন।
(৭) পক্ষগণ কর্তৃক সম্মত নিয়োগ পদ্ধতির অধীন যদি-
(ক) কোন পক্ষ অনুরূপ পদ্ধতি অনুসরণ করিতে ব্যর্থ হয়; বা
(খ) পক্ষগণ, বা সালিসকারীগণ, অনুরূপ পদ্ধতির অধীন কোন বিষয়ে সম্মত হইতে ব্যর্থ হয়; বা
(গ) কোন ব্যীক্ত বা তৃতীয় কোন পক্ষ অনুরূপ পদ্ধতির অধীন উক্ত ব্যক্তি বা তৃতীয় পক্ষের উপর আরোপিত কোন দায়িত্ব সম্পাদনে ব্যর্থ হয়;
তাহা হইলে যে কোন পক্ষ, সালিস চুক্তিতে নিয়োগদান সম্পর্কে ভিন্নরূপ কোন পন্থা নির্ধারিত না থাকিলে, সালিসকারী কিংবা সালিসকারীদের নিয়োগ প্রদানের নিমিত্ত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য;
(ঘ) আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক সালিস ব্যতীত অন্যান্য সালিসের ক্ষেত্রে জেলাজজের নিকট আবেদন করিতে পারিবে এবং জেলাজজ সালিসী ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যানসহ অন্যান্য সালিসকারীদের নিয়োগ করিবেন;
(ঙ) আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক সালিসের ক্ষেত্রে প্রধান বিচারপতি কিংবা প্রধান বিচারপতি কর্তৃক মনোনীত সুপ্রীম কোর্টের কোন বিচারকের নিকট আবেদন করিতে পারিবে এবং প্রধান বিচারপতি কিংবা প্রধান বিচারপতি কর্তৃক মনোনীত সুপ্রীম কোর্টের বিচারক সালিসী ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যানসহ অন্যান্য সালিসকারীদের নিয়োগ করিবেন।
(৮) উপ-ধারা (৩), (৪) এবং (৭) এর অধীন সালিসকারী বা সালিসকারীগণের নিয়োগ উক্তরূপ আবেদন প্রাপ্তির ষাট দিনের মধ্যে প্রদান করিতে হইবে।
(৯) প্রধান বিচারপতি, কিংবা প্রধান বিচারপাতি কর্তৃক মনোনীত সুপ্রীম কোর্টের বিচারক কিংবা ক্ষেত্রমত, জেলাজজকে এই ধারার অধীন সালিসকারী নিয়োগের ক্ষেত্রে পক্ষগণ কর্তৃক সম্পাদিত চুক্তির অধীন সালিসকারীর যোগ্যতা এবং নিরপেক্ষতার শর্তসমূহ এবং স্বাধীন ও নিরপেক্ষ সালিসকারী নিয়োগ নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে অন্যান্য যোগ্যতা বিবেচনা করিতে হইবে।
(১০) আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক সালিসে একমাত্র সালিসকারী কিংবা তৃতীয় সালিসকারী নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রধান বিচারপতি বা, ক্ষেত্রমত, প্রধান বিচারপতি কর্তৃক মনোনীত সুপ্রীম কোর্টের বিচারক, পক্ষঘণ একাধিক জাতীয়তার হইলে উক্ত জাতয়িতা হইতে ভিন্ন জাতীয়তার সালিসকারী নিয়োগ করিতে পারিবেন।
(১১) প্রধান বিচারপতি কিংবা, ক্ষেত্রমত, জেলাজজ এই ধারার অধীন বিষয়াদি নিষ্পত্তির জন্য যেইরূপ পদ্ধতি বা পরিকল্পনা যথার্থ বলিয়া গণ্য করিবেন সেইরূপ পদ্ধতি বা পরিকল্পনা যথার্থ বলিয়া গণ্য করিবেন সেইরূপ পদ্ধতি কিংবা পরিকল্পনা প্রণয়ন করিতে পারিবেন।
(১২) উপ-ধারা (২), (৪) এবং (৭) এর অধীন প্রধান বিচারপতি কিংবা প্রধান বিচারপতি কর্তৃক মনোনীত সুপ্রীম কোর্টের বিচারক কিংবা ক্ষেত্রমত জেলাজজ কর্তৃক প্রদত্ত সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হইবে।
(১৩) এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে প্রধান বিচারপতি, কোন নির্দিষ্ট মামলা বা মামলাসমূহের জন্য কিংবা সার্বিক দায়িত্ব পালনের জন্য কোন বিচারককে দায়িত্বে নিয়োগ করিতে এবং উক্ত বিচারকের দায়িত্বকাল নির্ধারণ করিতে পারিবেন।
ধারা-১৩। আপত্তির কারণসমূহ : সালিসকারী হিসাবে নিয়োগের অনুরোধ প্রাপ্ত প্রত্যেক ব্যক্তি প্রথম তাহার নিরপেক্ষতা ও স্বাধীনতা সম্পর্কে সঙ্গত সন্দেহের উদ্ভব হইতে পারে এইরূপ সকল পরিস্থিতি প্রকাশ করিবেন।
(২) প্রত্যেক সালিসকারী তাহার নিয়োগের সময় হইতে সালিসী কার্যধারা চলাকালীন যে কোন সময় উপ-ধারা (১) এ উল্লেখিত পরিস্থিতি অনতিবিলম্বে চুক্তির সকল পক্ষকে এবং অন্য সকল সালিসকারীকে অবগত করিবেন, যদি ইতোমধ্যে তাহারা তৎসম্পর্কে অবহিত না হইয়া থাকেন।
(৩) কোন সালিসকারীর বিরুদ্ধে আপত্তি উত্থাপন করা যাইবে যদি তাহার নিরপেক্ষতা ও স্বাধীনতা সম্পর্কে সন্দেহ থাকার কোন পরিস্থিতি বিদ্যমান থাকে বা পক্ষগণ কর্তৃক সম্মত যোগ্যতা তাহার না থাকে।
(৪) সালিসকারী নিয়োগদানকারী বা সালিসকারী নিয়োগে সম্মতিদানকারী কোন পক্ষ, উক্ত নিয়োগের পরবর্তি সময়ে তাহার জানা কোন পরিস্থিতির কারণে উক্ত সালিসকারীর বিরুদ্ধে আপত্তি দিতে পারিবেন।
১৪। আপত্তি দায়ের পদ্ধতি।¾ (১) উপ-ধারা (৬) এর বিধান সাপেক্ষে, পক্ষগণ সালিসের বিরুদ্ধে আপত্তি দায়েরের পদ্ধতি নিরুপণের সম্মত হওয়ার ক্ষেত্রে স্বাধীনতা থাকিবে।
(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লেখিত সম্মতিতে উপনীত হইতে ব্যর্থতার ক্ষেত্রে কোন পক্ষ কোন সালিসকারীর বিরুদ্ধে আপত্তি দায়ের করিতে চাহিলে উক্ত পক্ষ ধারা ১৩ এর উপ-ধারা (৩) এ উল্লেখিত পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত হওয়ার ত্রিশ দিনের মধ্যে লিখিত বিবৃতির মাধ্যমে আপত্তির কারণসমূহ বর্ণনা করিয়া সালিসী ট্রইব্যুনালের নিকট আপত্তি দায়ের করিবে।
(৩) সংশ্লিষ্ট সালিসকারী তাহার পদ হইতে নিজেকে প্রত্যাহার না করিলে অথবা অপর পক্ষ বা একাধিক পক্ষের কেষত্রে পক্ষগণ উক্ত আপত্তিতে সম্মত না হইরে, উপ-ধারা (২) এ উল্লেখিত লিখিত বিবৃতি দাখিল হওয়ার ত্রিশ দনের মধ্যে আপত্তির বিষয়ে সালিসী ট্রাইব্যুনাল সিদ্ধান্ত প্রদান করিবে।
(৪) উপ-ধারা (৩) এর অধীন সালিসী ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক প্রদত্ত সিদ্ধান্ত দ্বারা সংক্ষুব্ধ পক্ষ উক্ত সিদ্ধান্ত প্রদানের ত্রিশ দিনের মধ্যে হাইকোর্ট বিভাগ উক্ত বিষয়ে সিদ্ধান্ত প্রদান করিবে।
(৫) আপীল দায়ের হওয়ার নব্বই দিনের মধ্যে হাইকোর্ট বিভাগ উক্ত বিষয়ে সিদ্ধান্ত প্রদান করিবে।
(৬) পক্ষগণ কর্তৃক সম্মত পদ্ধতি কিংবা উপ-ধারা (৩) এ উল্লেখিত পদ্ধতির অধীন দায়েরকৃত আপত্তি অথবা সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দাখিলকৃত আপীল অকৃতভার্য হইলে সালিসী ট্রাইব্যুনাল সালিসী কার্যধারা অব্যাহত রাখিবে এবং রোয়েদাদ প্রদান করিবে।
ধারা-১৫। সালিসকারীর কর্তৃত্বের অবসান।¾ (১) সালিসকারীর কর্তৃত্বের অবসান হইবে, যদি-
(ক) তিনি স্বীয় পদ হইতে নিজেকে প্রত্যাহার করিয়া নেন;
(খ) তিনি মারা যান;
(গ) সকল পক্ষ তাহার অপসারণে সম্মত হয়; বা
(ঘ) তিনি তাহার দায়িত্ব পালনে অথবা অযৌক্তিক বিলম্ব ব্যতিরেকে দায়িত্ব পালনে অক্ষম হন এবং নিজেকে স্বীয় পদ হইতে প্রত্যাহার করিয়া নেন বা সকল পক্ষ তাহার কর্তৃত্বের অবসানে সম্মত হয়।
(২) যদি কোন সালিসকারী উপ-ধারা (১) এর দফা (ঘ) এ উল্লেখিত কারণে অযোগ্যতার জন্য দায়ী হইয়া স্বীয় হইতে নিজেকে প্রত্যাহার কারিতে ব্যর্থ হন এবং সকল পক্ষ তাহার অপসারণে সম্মত হইতেও ব্যর্থ হয়, তাহা হইলে বিধি দ্বারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে, কোন পক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে-
(ক) আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক সালিস ব্যতীত অন্যান্য সালিসের ক্ষেত্রে, জেলাজজ;
(খ) আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক সালিসের ক্ষেত্রে প্রধান বিচারপতি কিংবা প্রধান বিচারপতি কর্তৃক মনোনীত সুপ্রীমকোর্টের কোন বিচারক- উক্ত সালিসকারীকে অপসারণ করিতে পারিবেন।
(৩) যেই ক্ষেত্রে পক্ষগণ সম্মত হন, সেই ক্ষেত্রে পক্ষগণ কর্তৃক সম্মত ব্যক্তির দ্বারা অপসারণ কার্যকর হইবে।
(৪) যদি কোন সালিসকারী স্বীয় পদ হইতে নিজেকে প্রত্যাহার করিয়া নেন অথবা যেইক্ষেত্রে উপ-ধারা (১) এর দফা (ঘ) এ উল্লেখিত পরিস্থিতির অধীন সকল পক্ষ তাহার কর্তৃত্বের অবসানে সম্মত হয়, সেইক্ষেত্রে উহা এই দফা অথবা ধারা ১৩ এর উপ-ধারা (৩) এ উল্লেখিত কোন কারণের বৈধতার অর্থে গ্রহণ করা বুঝাইবে না।
ব্যাখ্যা- এই ধারায় "জেলাজজ" অর্থ যে জেলাজজের স্থানীয় অধিক্ষেত্রের মধ্যে সংশ্লিষ্ট সালিস চুক্তি সম্পাদিত হইয়াছে সেই জেলাজজকে বুঝাইবে।
ধারা-১৬। কর্তৃত্বের অবসান হইয়াছে এমন সালিসকারীর প্রতিস্থাপন :¾ (১) কোন সালিকারীর কর্তত্বের অবসান হইলে উক্ত সালিকারীর প্রতিস্থাপক নিয়োগের ক্ষেত্রে মূল সালিসকারী নিয়োগের বিধানাবলী প্রযোজ্য হইবে।
(২) পক্ষগণের মধ্যে মতৈক্যের অবর্তমানে-
(ক) প্রতিস্থাপিত সালিসকারী, সালিসী ট্রাইব্যুনালের বিচেনা মোতাবেক, যে পর্যায়ে অপসারিত সালিসকারীর কর্তৃক্ব অবসান হইয়াছে সেই পর্যায় হইতে শুনানী অব্যাহত রাখিবেন।
(খ) কোন সালিসকারীর কর্তৃত্ব অবসান হওয়ার পূর্বে সালিসী ট্রাইব্যুনালের কোন আদেশ অথবা কোন সিদ্ধান্ত অনুরূপ অবসানের কারণে অবৈধ হইবে না।
পঞ্চম পরিচ্ছেদ
সালিসী ট্রাইব্যুনালের এখতিয়ার
ধারা-১৭। সালিসী ট্রাইব্যুনালের স্বীয় এখতিয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত প্রদানের ক্ষমতা।¾ পক্ষগণ ভিন্নভাবে সম্মত না হওয়ার ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত বিষয়সহ যে কোন প্রশ্নে সালিসী ট্রাইব্যুনাল স্বীয় এখতিয়ারে সিদ্ধান্ত প্রদান করিতে পারিবে, যথা :
(ক) বৈবধ সালিস চুক্তির অস্তিত্ব থাকা;
(খ) সালিসী ট্রাইব্যুনালের যথাযথভাবে গঠন;
(গ) সালিস চুক্তিটি জননীতির পরিপন্থী হওয়া;
(ঘ) সালিস চুক্তিটি সম্পাদনের অযোগ্য হওয়া; এবং
(ঙ) সালিস চুক্তি মোতাবেক সালিসে প্রেরিত বিষয়াদি।
ধারা-১৮। চুক্তির বিভাজ্যতা।¾ সালিসী ট্রাইব্যুনালের এখতিয়ার নির্ধারণের উদ্দেশ্যে সিদ্ধান্ত প্রদানের ক্ষেত্রে অন্য চুক্তির অংশরূপে বিদ্যমান প্রত্যেক সালিস চুক্তি একটি পৃথক চুক্তি হিসাবে গণ্য হইবে।
ধারা-১৯। সালিসী ট্রাইব্যুনালের এখতিয়ার বিষয়ে আপত্তি।¾ (১) সালিসী ট্রাইব্যুনালের এখতিয়ার সম্পর্কিত কোন আপত্তি জবাব দাখিলের পূর্বে উত্থাপন করিতে হইবে।
(২) সালিস কার্যধারা চলাকালে সালিসী ট্রাইব্যুনাল কোন বিষয়ে উহার কর্তৃত্বের পরিসীমা অতিক্রম করার সঙ্গে সঙ্গে পরিসীমা বহির্ভূত অভিযোগ বিষয়ক উত্থাপন করিতে হইবে।
(৩) উপ-ধারা (১) ও (২) এ উল্লেখিত সময়সীমার পরে উত্থাপিত কোন আপত্তি গ্রহণ করা যাইবে যদি সালিসী ট্রাইব্যুনালের বিবেচনায় উক্তরূপ বিলম্ব যুক্তিসংগত বিবেচিত হয়।
(৪) সালিসী ট্রাইব্যুনাল উপ-ধারা (১) ও (২) এ উল্লেখিত আপত্তির উপর সিদ্ধান্ত প্রদান করিবে এবং যেইক্ষেত্রে সালিসী ট্রাইবুল্যাণ কোন অভিযোগ খারিজ করিবে সেইক্ষেত্রে কার্যধারা অব্যাহত রাখিবে এবং রোয়েদাদ প্রদান করিবে।
(৫) কোন সালিসকারী নিয়োগ করিয়াছেন বা নিয়োগদানে অংশগ্রহণ করিয়াছেন কেবলমাত্র এই কারণে কোন পক্ষ ট্রাইব্যুনালের এখতিয়ার সম্পর্কে আপত্তি উত্থাপন করা হইতে বারিত হইবেন না।
ধারা-২০। এখতিয়ার সংক্রান্ত বিষয়ে সিদ্ধান্ত প্রদানে হাইকোর্ট বিভাগের ক্ষমতা।¾ (১) হাইকোর্ট বিভাগ, সালিসী কার্যধারার যে কোন পক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে অন্য সকল পক্ষের প্রতি নোটিশ জারীপূর্বক, সালিসী ট্রাইব্যুনালের এখতিয়ার সম্পর্কিত যে কোন বিষয়ে সিদ্ধান্ত প্রদান করিতে পারিবে।
(২) এই ধারার অধীনে কোন আবেদন বিবেচনা করা হইবে না, যদি না হাইকোট বিভাগ এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে-
(ক) বিষয়টি নিষ্পত্তি হইলে খরচার পর্যাপ্ত সাশ্রয় হইতে পারে;
(খ) আবেদনটি অবিলম্বে দাখিল করা হইয়াছে; এবং
(গ) বিষয়টি নিষ্পত্তির সমর্থনে উত্তম যুক্তি রহিয়াছে।
(৩) যেই সকল যুক্তির ভিত্তিতে হাইকোর্ট বিভাগ কর্তৃক বিষয়টি নিষ্পত্তি হওয়া প্রয়োজন সেই সকল যুক্তি উক্ত আবেদনে উল্লেখ করিতে হইবে।
(৪) পক্ষগণ ভিন্নভাবে সম্মত না হইলে, এই ধারার অধীন কোন আবেদন হাইকোর্ট বিভাগে বিচারাধীন থাকাকালে, সালিষী কার্যক্রম অব্যাহত রাখিতে এবং রোয়েদাদ প্রদান করিতে পারিবে।
ধারা-২১। সালিসী ট্রাইব্যুনালের অন্তবর্তীকালীন আদেশ প্রদানের ক্ষমতা।¾ (১) পক্ষগণ ভিন্নভাবে সম্মত না হইলে কোন পক্ষের অনুরোধে বিরোধীয় কোন বিষয় সম্পর্কে অন্তবর্তিকালীন সংরক্ষণমূলক ব্যবস্থা গ্রহণে সালিসী ট্রাইব্যুনাল অন্য কোন পক্ষকে আদেশ দিতে পারিবে এবং উক্ত আদেশের বিরুদ্ধে কোন আপীল দায়ের করা যাইবে না।
(২) সালিসী ট্রাইব্যুনাল উপ-ধারা (১) এর অধীন নির্দেশিত ব্যবস্থা সম্পর্কে কোন পক্ষকে উপযুক্ত জামানত সরবরাহের নির্দেশ দিতে পারিবে।
(৩) অপর পক্ষকে নোটিশ প্রদান ব্যতিত এই ধারার অধীন কোন আদেশ প্রদান করা যাইবে না :
তবে শর্ত থাকে যে, সালিসী ট্রাইব্যুনাল যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে, বিলম্বের কারণে এই ধারার অধীন অন্তবর্তীকালীন ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্দেশ্য ব্যর্থ হইবে, তাহা হইলে সালিসী ট্রাইব্যুনাল নোটিশ প্রদানের শর্ত পরিহার করিতে পারিবেন।
(৪) উপ-ধারা (৪) এর অধীন অন্তবর্তীকালীন ব্যবস্থা গ্রহণের আদেশ উক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধকারী পক্ষের আবেদনের ভিত্তিতে আদালত কর্তৃক বলবৎ হইতে পারিবে।
(৫) উপ-ধারা (৪) এর অধীন অন্তবর্তীকালীন ব্যবস্থা বলবৎ করণের জন্য আদালতে দাখিলকৃত আবেদন ধারা ৭ বা সালিসী চুক্তির সহিত অসামঞ্জস্যপূর্ণ নয় বা চুক্তির কোন শর্ত পরিত্যাগ নয় মর্মে গণ্য হইবে।
ধারা-২২। সালিস ব্যতীত অন্যভাবে নিষ্পত্তি।¾ (১) সালিসী ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক সালিস ব্যতীত অন্যভাবে বিরোধের নিষ্পত্তি উৎসাহিত করা হইলে উহা সালিস কার্যধারার সাহিত অসামঞ্জস্যপূর্ণ হইবে না এবং সালিসী ট্রাইব্যুনাল সকল পক্ষের সম্মতিক্রমে, সালিসী কার্যধারার যে কোন পর্যায়ে, বিরোধীয় বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য মধ্যস্থতা, আপোষ বা অন্য যে কোন পদ্ধতি অনুসরণ করিতে পারিবে।
(২) সালিসী কার্যধারা চলাকালে পক্ষগণ বিরোধীয় বিষযটি আপোষ নিষ্পত্তি করিলে এবং পক্ষগণ কর্তৃক অনুরূপ হইলে, সালিসী ট্রাইব্যুনাল উক্তরূপ নিষ্পত্তিকে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হিসাবে সালিসী রোয়েদাদ আকারে লিপিবদ্ধ করিবে।
(৩) সর্বসম্মত শর্তে সালিসী রোয়েদাদ ধারা-৩৮ মোতাবেক প্রদত্ত হইবে এবং উহা যে একটি সম্মত শর্তের সালিসী রোয়েদাদ এই মর্মে উক্ত রোয়েদাদে উল্লেখ করিতে হইবে।
(৪) সর্বসম্মত শর্তের সালিসী রোয়েদাদের মর্যাদা ও কার্যকরকা বিরোধীয় অন্য যে কোন বিষয়ে প্রদত্ত সালিসী রোয়েদাদের অনুরূপ হইবে।
ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ
সালিসী কার্যধারা পরিচালনা
ধারা-২৩। সালিসী ট্রাইব্যুনালের সাধারণ দায়িত্ব।¾ (১) সালিসী ট্রাইব্যুনাল উহার নিকট দাখিলকৃত যে কোন বিরোধ ন্যায়সংগত এবং পক্ষপাতহীনভাবে নিষ্পত্তি করিবে এবং এতদুদ্দেশ্যে-
(ক) প্রত্যেক পক্ষকে লিখিত, মৌখিক বা উভয়ভাবে তাহার মামলা উপস্থাপনের যুক্তিসংগত সুযোগ করিবে; এবং
(খ) প্রত্যেক পক্ষকে অন্যান্য পক্ষ বা সংশ্লিষ্ট অন্য যে কোন ব্যক্তি কর্তৃক ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপিত দলিল ও প্রাসংগিক অন্যান্য সামগ্রী পরীক্ষা করার যুক্তিসঙ্গত সুযোগ প্রদান করিবে।
(২) সালিসী ট্রাইব্যুনাল উহার নিকট সালিসের জন্য দাখিলকৃত কোন বিরোধ যথাসম্ভব দ্রুত নিষ্পত্তি করিবে।
(৩) সালিসী ট্রাইব্যুনাল সালিসী কার্যধারা পরিচালনার ক্ষেত্রে, কার্যবিধি ও সাখ্য বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে এবং উহার উপর অর্পিত অন্য সকল ক্ষমতা প্রয়োগ ন্যায়সংগত পক্ষপাতহীনভাবে দায়িত্বপালন করিবে।
ধারা-২৪। সালিসী ট্রাইব্যুনাল দেওয়ানী কার্যবিধি আইন এবং সাক্ষ্য আইন অনুসরণে বাধ্য নয়।¾ এই আইনের অধীন কোন বিরোধীয় বিষয় নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে সালিসী ট্রাইব্যুনাল দেওয়ানী কার্যবিধি এবং সাক্ষ্য আইনের বিধানাবলী অনুসরণে বাধ্য হইবে না।
ধারা-২৫। কার্যবিধি নির্ধারণ।¾ (১) সালিসী ট্রাইব্যুনাল উহার কার্যধারায় অনুসরণীয় সকল বা যে কোন বিষয়ে, এই আইনের বিধানাবলী সাপেক্ষ, পক্ষগণ কর্তৃক নির্ধারিত কার্যপদ্ধতি অনুসরণ করিবে।
(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লেখিত কার্যপদ্ধতির অনুপস্থিতিতে সালিসী ট্রাইব্যুনাল উহার কার্যধারা পরিচালনায় পদ্ধতিগত ও সাক্ষ্যগত বিষয়গুলি, এই আইনের বিধানাবলী সাপেক্ষে, নির্ধারণ করিবে।
(৩) পক্ষগণ কর্তৃক চুক্তির মাধ্যমে, বা সালিসী ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক কার্যধারা পরিচালনায় পদ্ধতিগত ও সাক্ষ্যগত বিষয়গুলি নির্ধারণের ক্ষমতার হানি না করিয়া উক্তরূপ পদ্ধতিগত ও সাক্ষ্যগত বিষয়গুলিতে নিম্নবর্ণিত বিষযগুলি অন্তর্ভুক্ত হইবে; যথা :-
(ক) সমগ্র বা আংশিক কার্যধারা অনুষ্ঠিত হওয়ার সময় ও স্থান।
(খ) কার্যধারার ব্যবহার্য ভাষা এবং কোন সংশ্লিষ্ট দলিলের অনুবাদ সরবরাহ করা;
(গ) দাবী সংক্রান্ত লিখিত বিবরণ ও আত্মপক্ষ সমর্থনের নুমনা দাখিলের সময় এবং সংশোধনের পরিসীমা;
(ঘ) দলিলের প্রকাশ ও উপস্থান;
(ঙ) পক্ষগণকে জিজ্ঞাসিতব্য প্রশ্ন ও উহার জবাব;
(চ) কোন উপাদানের গ্রহণযোগ্যতা ও প্রাসংগিকতা বা এজনের বিষয়ে লিখিত বা মৌখিক সাক্ষ্য;
(ছ) বিরোধীয় বিষয়ে ঘটনা বা আইনগত দিক পর্যালোচনায় সালিসী ট্রাইব্যুনালের ক্ষমতা;
(জ) মৌখিক বা লিখিত সাক্ষ্য পেশ বা উপস্থাপন।
(৪) সালিসী ট্রইব্যুনাল তৎকর্তৃক প্রদত্ত কোন নির্দেশ বাস্তবায়নের সময় ধার্য করিতে এবং ধার্যকৃত সময় বর্ধিত করিতে পারিবে।
ধারা-২৬। সালিসের স্থান।¾ (১) পক্ষগণ সালিসের স্থান নির্ধারণের লক্ষ্যে মতৈক্যে উপনীত হইতে পারিবে।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন মতৈক্য না হইলে, পক্ষগণের সুবিধাসহ মামলার অবস্থা বিবেচনায় রাখিয়া সালিসী ট্রইব্যুনাল সালিসের স্থান নির্ধারণ করিবে।
(৩) উপ-ধারা (১) এবং (২) এ যাহাই কিছু থাকুক না কেন, পক্ষগণ ভিন্নভাবে সম্মত না হইলে, সালিস ট্রাইব্যুনাল উহার সদস্যদের আলাপ আলোচনার জন্য, সাক্ষী, বিশেষজ্ঞ বা পক্ষগণের শুনানীর জন্য বা দলিল, দ্রব্যসামগ্রী বা অন্যান্য সম্পত্তি পরিদর্শনের জন্য তৎকর্তৃক উপযুক্ত বিবেচিত যে কোন স্থানে মিলিথ হইতে পারিবে।
ধারা-২৭। সালিসী কার্যধারা শুরু।¾ পক্ষগণ ভিন্নভাবে সম্মত না হইলে কোন সালিসী কার্যধারা শুরু হইয়াছে মর্মে গণ্য হইবে যদি-
(ক) সংশ্লিষ্ট সালিস চুক্তি প্রযোজ্য হয় এইরূপ বিরোধের উদ্ভব হয়; এবং
(খ) চুক্তির কোন পক্ষ-
(অ) অন্য পক্ষের নিকট হইতে উক্ত চুক্তি হইতে উদ্ভুত কোন বিরোধ সালিসে প্রেরণ করিতে বা প্রেরণ করার বিষয়ে সম্মতি জ্ঞাপনের নোটিশ প্রাপ্তি হয়; বা
(আ) অন্য পক্ষের নিকট হইতে বিরোধীয় বিষয়ে একটি সালিসী ট্রাইব্যুনাল নিয়োগের জন্য বা নিয়োগে অংশগ্রহণ করিতে বা সম্মত হইতে বা একটি সালিসী ট্রাইব্যুনালের নিযুক্তিতে অনুমোদন জ্ঞাপনের নোটিশপ্রাপ্ত হয়।
ধারা-২৮। কার্ডধারা সংহতকরণ এবং একত্রে শুনানী।¾ (১) পক্ষগণ এতদুদ্দেশ্যে সম্মত হইতে পারিবে যে-
(ক) কোন সালিসী কার্যধারা অন্য সালিসী কার্যধারার সাথে সংহত হইবে;
(খ) সম্মত শর্তাবলী একত্রে শুনানী অনুষ্ঠিত হইবে।
(২) পক্ষগণ মতৈক্যের মাধ্যমে অনুরূপ ক্ষমতা সালিসী ট্রাইব্যুনালকে অর্পণ না করিলে, কার্যধারা সংহতকরণ বা একত্রে শুনারীর আদেশ প্রদানের কোন ক্ষমতা সালিসী ট্রাইব্যুনালের থাকিবে না।
ধারা-২৯। দাবীর বিবরণী ও জবাব।¾ (১) পক্ষগণ ভিন্নভাবে সম্মত না হইলে সালিসী ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে দাবীকারী তাহার দাবী সমর্থনকারী ঘটনা, বিবেচ্য বিষয় ও প্রার্থীত প্রতিকার বর্ণনা করিবে এবং প্রতিপক্ষ এই সকল সুনির্দিষ্ট বিষয়ে জবাব প্রদান করিবে।
(২) পক্ষগণ বিবরণের সাথে সংশ্লিষ্ট সকল দলিল দাখিল করিতে এবং ভবিষ্যতে উপস্থাপন করা হইবে এইরূপ সকল দলিল বা সাক্ষ্যের বিবরণ সংযুক্ত করিতে পারিবে।
(৩) পক্ষগণ ভিন্নভাবে সম্মত না হইলে, সালিসী কার্যধারা চলাকালে যে কোন পক্ষ তাহার দাবী সংশোধন বা দাবীর সহিত সংযোগজন করিতে পারিবে, যদি না সালিসী ট্রাইব্যুনাল ন্যায়বিচার বা বিলম্ব এড়ানোর স্বার্থে উক্ত সংশোধন বা সংযোজন মঞ্জুর করা যথাযথ হইবে না মর্মে বিবেচনা করে।
ধারা-৩০। শুনানী ও কার্যধারা।¾ (১) পক্ষগণ ভিন্নভাবে সম্মত না হইলে, সাক্ষ্য উপস্থাপনের জন্য মৌখিক শুনানী বা মৌখিক যুক্তিতর্ক অনুষ্ঠান করা হইবে কিনা অথবা পক্ষগণ কর্তৃক দাখিলকৃত হলফনামাসহ দলিল ও অন্যান্য উপাদানের ভিত্তিতে কার্যধারা পরিচালনা করা হইবে কিনা তাহা সালিসী ট্রাইব্যুনাল নির্ধারণ করিবে :
তবে শর্ত থাকে যে, কোন মৌখিক শুনানী অনুষ্ঠিত হইবে না মর্মে মতৈক্যে উপণীত না হইলে, সালিসী ট্রাইব্যুনাল যে কোন পক্ষের অনুরোধে বা নিজ উদ্যোগে কার্যধারার যথাযথ পর্যায়ে মৌখিক শুনারী গ্রহণ করিবে।
(২) শুনানী গ্রহণ এবং দলিল, দ্রব্যসামগ্রী বা অন্যান্য সম্পত্তি পরিদর্শনের উদ্দেশ্যে সালিসী ট্রাইব্যুনালের বিষয়ে পক্ষগণকে পর্যাপ্ত অগ্রিম নোটিশ প্রদান করিবে।
(৩) সালিসী ট্রাইব্যুনালের নিকট সরবরাহকৃত সকল বিবরণী দলিল বা অন্যান্য তথ্য বা কোন একপক্ষ কর্তৃক উক্ত ট্রাইব্যুনালের নিকট দাখিলকৃত আবেদন সম্পর্কে অপর পক্ষকে অবগত করিবে এবং সালিসী ট্রাইব্যুনাল সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য নির্ভর করিতে পারে এইরূপ যে কোন বিশেষজ্ঞ প্রতিবেদন বা সাক্ষ্যগত দলিল পক্ষগণকে অবগত করিবে।
ধারা-৩১। আইনগত বা অন্যান্য প্রতিনিধিত্ব।¾ পক্ষগণ ভিন্নভাবে সম্মত না হইলে, সালিসী কার্যধারার কোন পক্ষ আইনজীবী বা তাহার মনোনীত অন্য কোন ব্যক্তির মাধ্যমে উক্ত কার্যধারায় প্রতিনিধিত্ব করিতে পারিবে।
ধারা-৩২। বিশেষজ্ঞ, আইন উপদেষ্টা এসেসর নিয়োগের ক্ষমতা।¾ (১) পক্ষগণের মধ্যে ভিন্নরূপ চুক্তি না থাকিলে সালিসী ট্রাইব্যুনাল-
(ক) তৎকর্তৃক নির্ধারিত বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য বিশেষজ্ঞ বা আইন উপদেষ্টা নিয়োগ করিতে পারিবে;
(খ) কারিগরি বিষয়ে সহায়তাদানের জন্য এসেসর নিয়োগ করিতে পারিবে; এবং
(গ) সংশ্লিষ্ট কোন তথ্য প্রদানের বা সংশ্লিষ্ট দলিল, দ্রব্যসামগ্রী বা অন্যান্য সম্পত্তি বিশেষজ্ঞ, আইন উপদেষ্টা বা, ক্ষেত্রমত, এসেসরের পরিদর্শনের জন্য উপস্থাপন করিতে বা উহাতে প্রবেশাধিকার প্রদানের জন্য কোন পক্ষকে আদেশ করিতে পারিবে।
(২) পক্ষগণ ভিন্নভাবে সম্মত না হইলে-
(ক) কোন পক্ষের বা সালিসী ট্রাইব্যুনালের অনুরোধে কোন বিশেষজ্ঞ আইন উপদেষ্টা বা, ক্ষেত্রমত, এসেসর তাহার লিখিত বা মৌখিক প্রতিবেদন দাখিল এবং তথ্য মতামত বা পরামর্শ সরবরাহ করিবার পর মৌখিক শুনানীতে অংশগ্রহণ করিবে, যাহাতে পক্ষগণ তাহাকে প্রশ্ন করিতে এবং বিবেচ্য বিষয়ে বিশেষজ্ঞ সাক্ষী উপস্থাপনের সুযোগ পাইতে পারে;
(খ) বিশেষজ্ঞ আইন উপদেষ্টা বা, ক্ষেত্রমত, এসেসর তাহার দখলে থাকা সমুদয় দলিল, দ্রব্যসামগ্রী বা অন্যান্য সম্পত্তি, যাহা প্রতিবেদন প্রণয়নের জন্য তাহাকে সরবরাহ করা হইয়াছিল, তাহা কোন পক্ষের অনুরোধে উক্ত পক্ষের প্রাপ্তিসাধ্য করিবে;
(গ) কোন বিশেষজ্ঞ, আইন উপদেষ্টা বা এসেসর কর্তৃক সালিসী ট্রাইব্যুনালে দাখিলকৃত কোন প্রতিবেদন, তথ্য, মতামত বা পরামর্শের উপর মন্তব্য করার জন্য পক্ষগণকে যুক্তিসংগত সুযোগ প্রদান করিবে।
ধারা-৩৩। সাক্ষীর প্রতি সমন।¾ (১) সালিসী ট্রাইব্যুনাল বা সালিসী ট্রাইব্যুনালের অনুমতিক্রমে সালিসী কার্যধারার কোন পক্ষ প্রয়োজনীয় কোন ব্যক্তিকে পরীক্ষার জন্য, বা দ্রব্যসামগ্রী উপস্থাপনের জন্য, বা উভয় উদ্দেশ্যে সালিসী ট্রাইব্যুনালের সম্মুখে হাজির হইবার জন্য বা, ক্ষেত্রমত, উপস্থাপনের জন্য সমন ইস্যুর লক্ষ্যে আদালতে আবেদন করিতে পারিবে এবং আদালত অনুরূপ সমন ইস্যু করিবে।
(২) আদালত কোন মোকদ্দমার বিচারে কোন ব্যক্তিকে যে প্রশ্নের উত্তরদানে বা যে দ্রব্য উপস্থাপনের বাধ্য করা যায় না উপ-ধারা (১) এর অধীন ইস্যুকৃত কোন সমনের মাধ্যমে সালিসী ট্রাইব্যুনালে হাজির করা কোন ব্যক্তিকে সেইরূপ কোন প্রশ্নের উত্তরদানে বা দলিল বা দ্রব্য-সামগ্রী উপস্থাপনেও বাধ্য করা যাইবে না।
(৩) যেই সকল ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এর অধীন ইস্যুকৃত সমন অনুসারে সালিসী ট্রাইব্যুনালে হাজির হইতে ব্যর্থ হইবে বা অন্য কোন সংশ্লিষ্ট ব্যাপারে বা বিষয়ে বিচ্যুতি করিবে বা সম্পাদনে অস্বীকার করিবে বা সালিসী কার্যদারা চলাকালে সালিসী ট্রাইব্যুনাল অবমাননার অপরাধ করিবে, তাহা হইলে, সালিসী ট্রাইব্যুনালের অভিযোগের ভিত্তিতে তাহারা, আদালতের আদেশ দ্বারা, আদালতে মোকদ্দমার বিচারকালে কৃত অনুরূপ অপরাধের জন্য যেইরূপ শাস্তির জন্য দায়ী হইতেন সেইরূপ শাস্তির জন্য দায়ী হইবেন।
ধারা-৩৪। সালিসী ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য প্রদান।¾ পক্ষগণ ভিন্নভাবে সম্মত না হইলে-
(ক) সালিসী ট্রাইব্যুনাল মৌখিক বা লিখিতভাবে বা এফিডেভিট দ্বারা সাখ্য প্রদান করা যাইবে;
(খ) সাক্ষীর সম্মতি সাপেক্ষে সালিসী ট্রাইব্যুনাল সাক্ষীকে শপথ বা সত্য পাঠ করাইতে পারিবে।
ধারা-৩৫। পক্ষগণের ব্যর্থতার ক্ষেত্রে সালিসী ট্রাইব্যুনালের ক্ষমতা।¾ (১) যথাযথভাবে ও দ্রুত সালিসী কার্যধারা পরিচালনার জন্য অবশ্যকীয় কোন কিছু সম্পাদনের কোন পক্ষের ব্যর্থতার ক্ষেত্রে সালিসী ট্রাইব্যুনালের ক্ষমতার বিষয়ে পক্ষগণ চুক্তিতে উপণীত হইতে পারিবে।
(২) কোন দাবীদার ধারা ২৯ এর-
(ক) উপ-ধারা (১) অনুসারে তাহার দাবীর বিবরণী প্রদানে ব্যর্থ হইলে সালিসী ট্রাইবুল্যাণ কার্যধারা সমাপ্ত করিব, এবং
(খ) উপ-ধারা (১) অনুসারে উক্ত দাবীদারের প্রতিপক্ষ জবাবের বিবরণী প্রদানে ব্যর্থ হইলে সালিসী ট্রাইব্যুনাল ঐ ব্যর্থতাকে অভিযোগের স্বীকৃতি গণ্য না করিয়া কার্যধারা অব্যাহত রাখিবে।
(৩) যদি সালিসী ট্রাইব্যুনালের নিকট ইহা সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হয় যে, দাবী আদায়ের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষেত্রে দাবীদার এমন অস্বাভাবিক ও অমার্জনীয় বিলম্ব করিয়াছেন যাহার ফলে-
(ক) বিরোধের ন্যায্য সমাধান সম্ভব না হওয়ার মত বাস্তব ঝুঁকির সৃষ্টি হইয়াছে বা হইবার সম্ভাবনা দেখা দিয়াছে; বা
(খ) প্রতিপক্ষের জন্য গুরুতর ক্ষতির কারণ হইয়াছে বা ক্ষতির সম্ভাবনা দেখা দিয়ছে-
তাহা হইলে সালিসী ট্রাইব্যুনাল দাবী খারিজ কিরয়া বোয়েগাদ প্রদান করিতে পারিবে।
(৪) যদি কোন পক্ষ, পর্যাপ্ত কারণ ব্যতীত এতদুদ্দেশ্যে জারীকৃত নোটিশ প্রাপ্ত সত্ত্বেও-
(ক) কোন মৌখিক শুনানীতে হাজির হইতে বা প্রতিনিধিত্ব করিতে ব্যর্থ হয়; বা
(খ) আবশ্যকীয় লিখিত সাক্ষ্য দাখিল করিতে বা লিখিত নিবেদন উপস্থাপনে ব্যর্থ হয়, তাহা হইলে সালিসী ট্রাইব্যুনাল উক্ত পক্ষের অনুপস্থিতিতে বা, ক্ষেত্রমত, তাহার পক্ষে লিখিত সাক্ষ্য বা নিবেদন উপস্থাপন কার্যধারা অব্যাহত রাখিতে এবং উপস্থাপিত সাক্ষ্যের ভিত্তিতে রোয়েদাদ প্রদান করিতে পারিবে।
(৫) কোন পক্ষ পর্যান্ত কারণ প্রদর্শন ব্যতীত সালিসী ট্রাইব্যুনালের কোন আদেশ বা নির্দেশ প্রতিপালনে ব্যর্থ হইলে, উক্ত ট্রাইব্যুনাল অনুরূপ আদেশ বা নির্দেশ প্রতিপালনের জন্য উহার বিবেচনায় সময়সীমা নির্দিষ্ট করিয়া আদেশ প্রদান করিতে পারিবে।
(৬) কোন দাবীদার জামানত বা খরচার সংস্থানের লক্ষ্যে সালিসী ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক প্রদ্ত কোন আদেশ বা নির্দেশ পালনে ব্যর্থ হইলে উক্ত ট্রাইব্যুনাল দাবী খারিজ করিয়া রোয়েদাদ প্রদান করিতে পারিবে।
(৭) এই ধারার কোন উপ-ধারায় উল্লেখ করা হয় নাই, সালিসী ট্রাইব্যুনালের এমন কোন আদেশ যদি কোন পক্ষ প্রতিপালনে ব্যর্থ হয়, তাহা হইলে উক্ত ট্রাইব্যুনাল-
(ক) এই মর্মে নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবে যে, অঅদেশের বিষয়বস্তু ছিল এমন অভিযোগ বা উপাদানের উপর অসমর্থ পক্ষ নির্ভর করিতে পারিবে না;
(খ) আদেশ অমান্যের কারণে উদ্ভুত পরিস্থিতি বিবেচনাক্রমে অসমর্থ পক্ষের স্বার্থের প্রতিকুল সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিতে পারিবে;
(গ) উহার নিকট যথাযথভাবে উপস্থাপিত উপাদানের ভিত্তিতে রোয়েদাদ প্রণয়নে অগ্রসর হইতে পারিবে; বা
(ঘ) আদেশ অমান্যের পরিণতিতে খরচের ব্যয় বিষয়ে উহার বিবেচনায় উপযুক্ত আদেশ প্রদান করিতে পারিবে।
সপ্তম পরিচ্ছেদ
রোয়েদাদ এবং কার্যধারা পরিসমাপ্তি
ধারা-৩৬। বিরোধের বিষয়বস্তুতে আইনের প্রয়োগ।¾ (১) কোন বিরোধের বিষয়বস্তুর ক্ষেত্রে কোন আইন প্রযোজ্য হইবে মর্মে পক্ষগণ কর্তৃক নির্ধারিত হইলে সালিসী ট্রাইব্যুনাল সংশ্লিষ্ট আইনের বিধান অনুসারে উক্ত বিরোধ নিষ্পত্তি করিবে :
তবে শর্ত থাকে যে, সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে পক্ষগণ যেই দেশের আইন বা আইনগত ব্যবস্থা নির্ধারণ করিবে, সেই দেশের প্রচলিত আইনের ভিন্নতার ক্ষেত্রে শুধুমাত্র মৌলিক আইনকে বুঝাইবে।
(২) উপ-ধারা (১)এর অধীন কোন দেশের আইন নির্ধারণ করা না হইলে সালিসী ট্রাইব্যুনাল বিবেচনায়, ভিন্নতার ক্ষেত্রে, যে আইন উপযুক্ত বিবেচিত উক্ত আইন প্রয়োগ করিবে।
(৩) সালিসী ট্রাইব্যুনাল চুক্তির শর্ত অনুযায়ী সাধারণ ন্যায় বিচারের স্বার্থে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রথা, যদি থাকে, বিবেচনায় আনিয়া সিদ্ধান্ত প্রদান করিবে।
ধারা-৩৭। একাধিক সালিসকারীর সমন্বয়ে গঠিত ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্ত গ্রহণের পদ্ধতি।¾ (১)পক্ষগণ অন্যভাসে সম্মত না হইলে একাধিক সালিসকারী সমন্বয়ে গঠিত সালিসী ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্ত উহার সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের সমর্থনে গৃহীত হইবে।
(২) উপ-ধারা (১) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, পক্ষগণের দ্বারা অথবা সালিসী ট্রাইব্যুনালের সকল সদস্যের দ্বারা ক্ষমতাপ্রাপ্ত হইলে, পদ্ধতি সম্পর্কিত সকল প্রশ্নের সালিসী ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান সিদ্ধান্ত প্রদান করিবেন।
ধারা-৩৮। সালিসী রোয়েদাদ নমুনা ও বিষয়বস্তু।¾ (১) সালিসী ট্রাইব্যুনালের রোয়েদাদ লিখিত এবং সালিসকারী বা সালিসকারীগণ কর্তৃক স্বাক্ষরিত হইতে হইবে।
(২) সালিসীকারীর একাধিক সালিসকারীর সমন্বয়ে গঠিত সালিসী ট্রাইব্যুনাল রোয়েদাদে সংখ্যাগরিষ্ঠ স্বাক্ষর পর্যাপ্ত হইবে এবং কোন সালিসকারী স্বাক্ষর না করিলে উহার কারণ রোয়েদাদে উল্লেখ করিতে হইবে।
(৩) সালিসী রোয়েদাদের অনুকূলে যুক্তি প্রদর্শনের প্রয়োজন হইবে না মর্মে পক্ষগণ সম্মত হইলে অথবা রোয়েদাদটি ধারা ২২ এর অধীন সম্মত শর্ত অনুযায়ী প্রতদ্ত হইয়া থাকিলে সালিসী রোয়েদাদের অনুকূলে যুক্তি প্রদর্শন করার প্রয়োজন হইবে না।
(৪) ধারা ২৬ অনুসারে নির্ধারিত মতে সালিসী রোয়েদাদে সালিসের তারিখ এবং স্থান উল্লেখ করিতে হইবে এবং রোয়েদাদটি উক্ত স্থানে প্রদত্ত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।
(৫) রোয়েদাদ প্রদত্ত হওয়ার পর সালিসী ট্রাইব্যুনালের সালিসকারী বা সালিসকারীদের স্বাক্ষর সম্বলিত রোয়েদাদের একটি অনুলিপি প্রত্যেক পক্ষকে সরবরাহ কিরতে হইবে।
(৬) পক্ষগণের দ্বারা অন্যভাবে সাব্যস্ত না হইলে-
(ক) সালিসী রোয়েদাদে অর্থ পরিশোধের বিষয় থাকিলে পরিশোধিতব্য অর্থের সহিত বিরোধ উদ্ভব হইবার তারিখ হইতে রোয়েদাদ প্রদান করিবার তারিখ পর্যন্ত সময়সীমার সম্পূর্ণ বা অংশের জন্য সালিস চুক্তিতে নির্ধারিত হারে বা অনুরূপ হার না থাকলে সালিসী ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক নির্ধারিত হারে সুদ যুক্ত করা যাইবে; এবং
(খ) রোয়েদাদে অন্যভাবে আদেশ প্রদত্ত না হইলে রোয়েদাদ প্রদত্ত হওয়ার তারিখ হইতে অর্থ পরিশোধের তারিখ পর্যন্ত সময়কালের জন্য সালিসী রোয়েদাদ দ্বারা যে অর্থ পরিশোধের জন্য আদেশ প্রদান করা হইবে উক্ত অর্থের সাহিত প্রচলিত ব্যাংক হার অপেক্ষা ২% অধিক বাৎসরিক হারে সুদ প্রদেয় হইবে।
ব্যাখ্যা।- এই উপ-ধারায় "ব্যাংক হার" অর্থে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক সময় সময় নির্ধারিত সুদের হারকে বঝাইবে।
(৭) পক্ষগণ অন্যভাবে সম্মত না হইলে-
(ক) সালিসের খরচ সালিসী ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক নির্ধারিত হইবে; এবং
(খ) সালিসী ট্রাইব্যুনাল রোয়েদাদ-
(অ) খরচ পাইতে অধিকারী পক্ষের নাম;
(আ) খরচ প্রদানকারী পক্ষের নাম;
(ই) খরচের পরিমাণ অথবা উক্ত পরিমাণ নির্ধারণের পদ্ধতি; এবং
(ঈ) খরচ প্রদান করার পদ্ধতি উল্লেখ করিবে।
ব্যাখ্যা।- এই উপ-ধারার "সালিসের খরচ" অর্থে সাক্ষীদের ফিসহ সালিসের খরচাদি আইনগত ফি এবং খরচাদি, সালিস তদারককারী কোন প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক ফি এবং সালিসী কার্যধারা ও সালিসী রোয়েদাদ বিষয়ে ব্যয়িত খরচাদি সম্পর্কিত যুক্তিসংগত খরচ অন্তর্ভুক্ত হইবে।
ধারা-৩৯। রোয়েদাদ চূড়ান্ত ও বাধ্যকর।¾ (১) কোন সালিস চুক্তির ধারাবাহিকতায় সালিসী ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক প্রদত্ত রোয়েদাদ চূড়ান্ত হইবে এবং উহা পক্ষগণ এবং তাহাদের মাধ্যমে বা অধীন দাবীদার যে কোন ব্যক্তির উপর বাধ্যকর হইবে।
(২) উপ-ধারা (১) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের বিধান অনুসারে সালিসী রোয়েদাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যক্তির আপত্তি উত্থাপনের অধিকার ক্ষুন্ন হইবে না।
ধারা-৪০। রোয়েদাদের সংশোধন, ব্যাখ্যা ইত্যাদি।¾ (১) পক্ষগণ নতুন কোন সময়সীমা সম্পর্কে সম্মত না হইলে রোয়েদাদ প্রাপ্ত হওয়ার চৌদ্দ দিনের মধ্যে-
(ক) কোন এক পক্ষ, অপর পক্ষকে নোটিশ প্রদান করিয়া-
(অ) সালিসী রোয়েদাদে সংঘটিত হওয়া গণনাগত ভুল কোন করণিক অথবা মুদ্রাক্ষরজনিত ত্রুটি বা বিচ্যুতি অথবা আনুরূপ প্রকৃতির অন্য কোন ত্রুটি সংশোধন করিতে; অথবা
(আ) যেক্ষেত্রে রোয়েদাদের বিভাজনযোগ্য অংশবিশেষ এমন কোন বিষয় সম্পর্কিত যাহা সালিসে প্রেরিত হয় নাই এবং সালিসে প্রেরিত বিষয়ের উপর প্রদত্ত সিদ্ধান্তকে উহা প্রভাবিত করে না সেইক্ষেত্রে সালিসী রোয়েদাদ পরিমার্জন করিতে, সালিসী ট্রাইব্যুনালকে অনুরোধ করিতে পারিবে;
(খ) পক্ষগণের মধ্যে মতৈক্য সাপেক্ষে, কোন এক পক্ষ অপর পক্ষকে নোটিশ প্রদান করিয়া যে কোন সালিসী রোয়েদাদের অংশবিশেষের অথবা কোন সুস্পষ্ট বিষয়ের উপর ব্যাখ্যা প্রদান করিতে সালিসী ট্রাইব্যুনালকে অনুরোধ করিতে পারিবে।
(২) সালিসী ট্রাইব্যূনাল, উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রাপ্ত কোন অনুরোধ যথার্থ মনে করিলে অনুরোধ প্রাপ্তির চৌদ্দ দিনের মধ্যে, বা সালিসী ট্রাইব্যুনালের অনুরোধে পক্ষগণ দীর্ঘতর সময়সীমার ব্যাপারে সম্মত হইলে, উক্ত দীর্ঘতর সময়ের মধ্যে অনুরূপ সংশোধন বা পরিমার্জন করিবে বা, ক্ষেত্রমত, ব্যাখ্যা প্রদান করিবে।
(৩) সালিসী রোয়েদাদ প্রদত্ত হওয়ার চৌদ্দ দিনের মধ্যে সালিসী ট্রাইব্যুনাল উপ-ধারা (১) এর দফা (ক) তে উল্লিখিত যে কোন গণনাগত, করণিক বা মুদ্রাক্ষরজনিত ত্রুটি-বিচ্যুতি বা অনুরূপ অন্য কোন ত্রুটি সংশোধন করিতে পারিবে।
(৪) এই ধারার অধীন কোন সংশোধন, পরিমার্জন বা ক্ষেত্রমত, ব্যাখ্যা সালিসী রোয়েদাদদের অংশ হইবে।
(৫) পক্ষগণ ভিন্নভাবে সম্মত না হইলে, কোন পক্ষ, অপর পক্ষকে নোটিশ প্রদান করিয়া, সালিসী কার্যধারায় উপস্থাপিত হইয়াছে অথচ রোয়েদাদে অন্তর্ভুক্ত হয় নাই এমন কোন দাবী সম্পর্কে অতিরিক্ত সালিসী রোয়েদাদ প্রদান করিতে, সালিসী রোয়েদাদ প্রাপ্তির চৌদ্দ দিনের মধ্যে সালিসী ট্রাইব্যূনালকে অনুরোধ করিতে পারিবে।
(৬) সালিসী ট্রাইব্যুনাল, উপ-ধারা (৫) এর অধীন প্রাপ্ত অনুরোধ যথার্থ মনে করিলে, অনুরোধ প্রাপ্তির ষাট দিনের মধ্যে অতিরিক্ত রোয়েদাদ প্রদান করিতে পারিবে।
(৭) এই ধারার অধীনে কোন সালিসী রোয়েদাদ অথবা অতিরিক্ত সালিসী রোয়েদাদ এর সংশোধন, পরিমার্জন বা ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে ধারা ৩৮ এবং ৩৯ এর বিধানসসূহ প্রযোজ্য হইবে।
ধারা-৪১। কার্যধারার সমাপ্তি।¾ (১) চূড়ান্ত সালিসী রোয়েদাদ অথবা উপ-ধারা (২) এর অধীনে প্রদত্ত আদেশের মাধ্যমে সালিসী কার্যধারার সমাপ্তি ঘটিবে।
(২) সালিসী ট্রাইব্যুনাল সালিসী কার্যক্রমের সমাপ্তির আদেশ প্রদান করিবে, যদি-
(ক) দাবীদার তাহার দাবী প্রত্যাহার করে এবং যদি না, উক্তরূপে সমাপ্তির বিরুদ্ধে প্রতিপক্ষ আপত্তি উত্থাপন করে এবং বেরাধের বিষয় চূড়ান্ত নিষ্পত্তিতে প্রতিপক্ষের বৈধ স্বার্থ আছে মর্মে সালিসী ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক স্বীকৃত হয়;
(খ) পক্ষগণ কার্যধারা সমাপ্তিতে সম্মত হয়; বা
(গ) কোন কারণে কার্যক্রমের অবিরাম অনুবৃত্তি অপ্রয়োজনীয় অথবা অসম্ভব হইয়া পড়ে।
(৩) ধারা ৪০ এর বিধান সাপেক্ষে সালিসী ট্রাইব্যুনালের কর্তৃত্ব সালিসী কার্যধারা সমাপ্তির সাথে সাথে সমাপ্ত হইবে।
অষ্টম পরিচ্ছেদ
সালিসী রোয়েদাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা
ধারা-৪২। সালিসী রোয়েদাদ বাতিলের আবেদন।¾ (১) কোন পক্ষ কর্তৃক সালিসী রোয়েদাদ প্রাপ্তির ষাট দিনের মধ্যে দাখিলকৃত আবেদনের ভিত্তিতে আদালত আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক সালিসে প্রদত্ত রোয়েদাদ ব্যতীত এই আইনের অধীন প্রদত্ত কোন সালিসী রোয়েদাদ বাতিল করিতে পারিবে।
(২) কোন পক্ষ কর্তৃক সালিসী রোয়েদাদ প্রাপ্তির ষাট দিনের মধ্যে দাখিলকৃত আবেদনের ভিত্তিতে হাইকোর্ট বিভাগ বাংলাদেশের অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক সালিসে প্রদত্ত কোন সালিসী রোয়েদাদ বাতিল করিতে পারিবে।
ধারা-৪৩। সালিসী রোয়েদাদ বাতিলের কারণসমূহ।¾ (১) কোন সালিসী রোয়েদাদ বাতিল করা যাইতে পারে, যদি-
(ক) কোন পক্ষ আবেদন দাখিল করিয়া এই মর্মে প্রমাণ উপস্থাপন করে যে-
(অ) সালিসী চুক্তির কোন এক পক্ষের কোনরূপ অক্ষমতা ছিল;
(আ) যে আইনের অধীন পক্ষগণ সালিস চুক্তি করিয়াছে সেই আইনটি বৈধ আইন নহে;
(ই) আবেদনকারী পক্ষকে সালিসকারী নিয়োগে বা সালিসী কার্যধারা সম্পর্কে যথাযথ নোটিশ প্রদান করা হয় নাই অথবা উক্ত পক্ষ তাহার মামলা উপস্থাপন করিতে অন্য কোন যুক্তিসংগত কারণে অক্ষম হইয়াছিল;
(ঈ) সালিসী রোয়েদাদ এমন কোন বিরোধী বিষয় সম্পর্কিত যাহা সালিসে প্রেরিত বিষয়ের উদ্দেশ্য বা শর্ত বহির্ভুত বা উহাতে এমন সিদ্ধান্ত রহিয়াছে যাহা সালিসে প্রেরিত বিষয়ের পরিধি বহির্ভূত :
তবে শর্ত থাকে যে, যদি সালিসে প্রেরিত হয় নাই এইরূপ বিষয়কে সালিসে প্রেরিত হইয়াছে এইরূপ বিষয় হইতে পৃথক করা সম্ভব হয় তাতা হইলে সালিসে প্রেরিত না হওয়া বিষয়ের উপর সিদ্ধান্ত সম্পর্কিত অংশ বাতিল করা যাইতে পারে;
(উ) সালিসী ট্রাইব্যুনালের গঠন বা সালিসী পদ্ধতি পক্ষগণের চুক্তির সহিত সংগতিপূর্ণ ছিল না অথবা এইরূপ চুক্তির অবর্তমানে এই আইনের বিধানাবলীর সহিত সংগতিপূর্ণ নয়;
(খ) আদালত কিংবা ক্ষেত্রমত, হাইকোর্ট বিভাগ এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে-
(অ) বিরোধের বিষয়বস্তু বাংলাদেশে প্রচলিত আইন অনুসারে সালিসের মাধ্যমে নিষ্পত্তিযোগ্য নহে;
(আ) সালিসী রোয়েদাদ দৃশ্যত : বাংলাদেশে প্রচলিত কোন আইনের পরিপন্থী;
(ই) সালিসী রোয়েদাদ বাংলাদেশের জননীতির পরিপন্থী; অথবা
(ঈ) সালিসী রোয়েদাদ তঞ্চকতা বা দুর্নীতি দ্বারা প্ররোচিত বা প্রভাবান্তিব।
(২) কোন পক্ষ রোয়েদাদ বাতিল করার জন্য আবেদন দাখিল করিলে আবেদন নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত আদালত বা ক্ষেত্রমত, হইকোর্ট বিভাগ হাইকোর্ট বিভাগে নগদে অথবা অন্য কোনভাবে জামানত হিসাবে জমা করিবার জন্য উক্ত পক্ষকে আদেশ করিতে পারিবে।
ব্যাখ্যা।- এই ধারায় "আদালত" অর্থে যে আদালতের অধিক্ষেত্রের স্থানীয় সীমার ভিতরে সালিসী রোয়েদাদটি চূড়ান্তভাবে প্রদত্ত ও স্বাক্ষরিত হইয়াছে উক্ত আদালতকে বুঝাইবে।
নবম পরিচ্ছেদ
সালিসী রোয়েদাদের প্রয়োগ
ধারা-৪৪। সালিসী রোয়েদাদের প্রয়োগ।¾ ধারা ৪২ এর অধীন সালিসী রোয়েদাদ বাতিল করার আবেদন দাখিলের সময়সীমা উত্তীর্ণ হইলে অথবা অনুরূপ আবেদন অগ্রাহ্য হইলে, দেওয়ানী কার্যাবিধির অধীন আদালত কর্তৃক কোন সালিসী-রোয়েদাদ এমনভাবে প্রয়োগ করা হইবে যেন উহা ঐ আদালতেরই ডিক্রি
ব্যাখ্যা।- এই ধারার "আদালত" অর্থে এই আদালতের অধিক্ষেত্রের স্থানীয় সীমার ভিতরে সালিসী রোয়েদাদটি চূড়ান্তভাবে প্রদত্ত ও স্বাক্ষরিত হইয়াছে উক্ত আদলতকে বুঝাইবে।
দশম পরিচ্ছেদ
কতিপয় বিদেশী সালিস রোয়েদাদের
স্বীকৃতি ও বাস্তবায়ন
ধারা-৪৫। বিদেশী সালিস রোয়েদাদের স্বীকৃতি এবং বাস্তবায়ন।¾ (১) আপাততঃ বলবৎ অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, ধারা-৪৬ এর বিধানাবলী সাপেক্ষে-
(ক) যে সকল ব্যক্তি সম্পের্কে কোন বিদেশী সালিসী রোয়েদাদ প্রদত্ত হইয়াছে তাহাদের উপর উহা বাধ্যকর হইবে এবং তদানুসারে ঐ সকল ব্যক্তি বাংলাদেশে কোন আইনগত কার্যধারার জবাব প্রতিগণন (set off) বা অন্য কোন উদ্দেশ্যে উহার উপর নির্ভর করিতে পারিবে;
(খ) কোন পক্ষ কর্তৃক দাখিলকৃত আবেদনের ভিত্তিতে কোন বিদেশী সালিসী রোয়েদাদ আদালত কর্তৃক দেওয়ানী কার্যিবিধির বিধান অনুসারে আদালতের ডিক্রি যেভাবে কার্যকর করা হয় সেভাবে কার্যকর হইবে।
(২) কোন বিদেশী সালিসী রোয়েদাদ কার্যকর করার জন্য দাখিলকৃত আবেদনের সহিত নিম্নোক্ত বিষয়সমূহ সংযুক্ত করিতে হইবে, যথা :
(ক) মূল সালিসী রোয়েদাদ অথবা যে দেশে প্রদত্ত হইয়াছে সে দেশের আইন অনুসারে যথাযথভাবে প্রমাণীকৃত উহার অনুলিপি;
(খ) মূল সালিসী চুক্তি অথবা উহার প্রত্যায়িত অনুলিপি; এবং
(গ) এইরূপ সাক্ষ্য যাহা রোয়েদাদটি বিদেশী রোয়েদাদ মর্মে প্রমাণের নিমত্তি আবশ্যক।
(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন দাখিলতব্য রোয়েদাদ বা চুক্তিপত্র যদি ইংরেজী বা বাংলা ভিন্ন অন্য কোন ভাষায় হইয়া থাকে, তাহা হইলে উপ-ধারা (১) এর অধীন আবেদনকারী যে দেশের নাগরিক সেই দেশের কূটনৈতিক বা কনস্যুলার প্রতিনিধি কর্তৃক শুদ্ধ মর্মে প্রত্যায়িত অথবা বাংলাদেশে বলবৎ আইন অনুযায়ী পর্যাপ্ত বিবেচিত হইতে পারে এইরূপ অন্য কোনভাবে শুদ্ধ মর্মে প্রত্যায়িত আকারে ইংরেজী ভাষায় উহার একটি অনুবাদ উক্ত উপ-ধারার অধীন দাখিলীয় আবেদনের সহিত সংযুক্ত করিতে হইবে।
ব্যাখ্যা।- এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে "আদালত" অর্থে ঢাকা জেলার অধিক্ষেত্র প্রয়োগকারী জেলাজজের আদালতকে বুঝাইবে।
ধারা-৪৬। বিদেশী সালিসী রোয়েদাদ বাস্তবায়ন অস্বীকৃতির কারণসমূহ।¾ (১) কেবলমাত্র নিম্নোক্ত কারণে বিদেশী সালিসী রোয়েদাদ কার্যকর করিতে অস্বীকার করা যাইতে পারে, যথা :
(ক) যে পক্ষের বিরুদ্ধে উহা প্রয়োগ করা হয় সেই পক্ষ যদি যে আদালতে উহা কার্যকর করার দাবী করা হয় সেই আদালতে এই মর্মে প্রমাণ উপস্থাপন করে যে-
(অ) সালিস চুক্তির কোন এক পক্ষের কোনরূপ অক্ষমতা ছিল;
(আ) যে আইনের অধীন পক্ষগণ সালিস চুক্তি করিয়াছে সেই আইনটি বৈধ আইন নহে;
(ই) আবেদনকারী সালিসকারী নিয়োগ বা সালিসী কার্যধারা সম্পর্কে যথাযথ নোটিশ প্রদান করা হয় নাই, অথবা উক্ত পক্ষ তাহার মামলা উপস্থাপন করিতে বা অন্য কোন যুক্তসংগত কারণে অক্ষম হইয়াছিল; বা
(ঈ) সংশ্লিষ্ট বিদেশী সালিসী রোয়েদাদ এমন কোন বিরোধীর বিষয় নিস্পত্তি করিয়াছে যাহা সালিসে প্রেরিত বিষয় বহির্ভুত ছিল :
তবে শর্ত থাকে যে, সালিসে প্রেরিত বিষয়ের উপর প্রদত্ত সিদ্ধান্তে যদি সালিসে প্রেরিত হয় নাই এমন বিষয় হইতে পৃথক করা সম্ভব হয় তাহা হইলে সালিসে প্রেরিত ঐরূপ বিষয়ের উপর প্রদত্ত সিদ্ধান্ত সম্বলিত বিদেশী রোয়েদাদ আংশিকভাবে স্বীকৃতি প্রদান ও বাস্তবায়ন করা যাইবে; অথবা
(উ) সালিসী ট্রাইব্যুনালের গঠন বা সালিষী পদ্ধতি পক্ষগণের চুক্তির সহিত সংগতিপূর্ণ ছিল না অথবা এইরূপ অবর্তমানে যে দেশে সালিস অনুষ্ঠিত হইয়াছে সেই দেশের আইনের সহিত সংগতিপূর্ণ ছিল না; অথবা
(ঊ) সালিসী রোয়েদাদ এখনও পক্ষগণের উপর বাধ্যকর হয় নাই, অথবা যে দেশে বা যে দেশের আইনের অধীনে রোয়েদাদ প্রদত্ত হইয়াছিল উহার কোন বৈধ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক উক্ত রোয়েদাদ বাতিল বা স্থগিত করা হইয়াছে; অথবা
(খ) যে আদালতে বিদেশী রোয়েদাদ কার্যকর করার দাবী করা হইয়াছে উক্ত আদালতের মতে-
(অ) বিরোধের বিষয়বস্তু বাংলাদেশে প্রচলিত আইন অনুসারে সালিসের মাধ্যমে নিষ্পত্তিযোগ্য নহে; অথবা
(আ) বিদেশী সালিসী রোয়েদাদটি কার্যকর করা বাংলাদেশের জননীতির পরিপন্থী হইবে।
(২) যদি উপ-ধারা (১) এর দফা (ক) এর উপ-দফা (উ) এ উল্লিখিত উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের নিকট বিদেশী সালিসী রোয়েদাদ বাতলি বা স্থগিত করার জন্য আবেদন দায়ের করা হইয়া থাকে, তাহা হইলে যে আদালতে বিদেশী সালিসী রোয়েদাদ কার্যকর করার দাবী করা হয়, উক্ত আদালত, উপযুক্ত মনে করিলে রোয়েদাদ কার্যকর করার সিদ্ধান্ত স্থগিত করিতে পারিবে এবং রোয়েদাদ কার্যকর করার দাবীকারীর আবেদনের ভিত্তিতে অপর পক্ষকে উপযুক্ত জামানত প্রদানের আদেশ দিতে পারিবে।
ধারা-৪৭। নির্দিষ্ট রাষ্ট্র ঘোষণার জন্য সরকারের ক্ষমতা।¾ এই পরিচ্ছেদের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকার, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা কোন নির্দিষ্ট রাষ্ট্র হিসাবে চিহ্নিত করিয়া ঘোষণা দিতে পারিবে।
একাদশ পরিচ্ছেদ
আপীল
ধারা-৪৮। অপীল।¾ আদালত কর্তৃক প্রদত্ত নিম্নবর্ণিত আদেশসমূহ হইতে হাইকোর্ট বিভাগে আপীল দায়ের করা যাইবে, যথা :
(ক) ধারা-৪২ এর উপ-ধারা (১) এর অধীন সালিসী রোয়েদাদ বাতিল কিংবা বাতিল করিতে অস্বীকৃতি;
(খ) ধারা-৪৪ এর অধীন সালিসী রোয়েদাদ বাস্তবায়ন করিতে অস্বীকৃতি;
(গ) ধারা ৪৫ এর অধীন কোন বিদেশী সালিসী রোয়েদাদ এর স্বীকৃতি বা বাস্তবায়ন করিতে অস্বীকৃতি।
দ্বাদশ পরিচ্ছেদ
বিবিধ
ধারা-৪৯। খরচ, ইত্যাদির জমাকরণ।¾ (১) সালিসী ট্রাইব্যুনাল উহার নিকট দাখিলকৃত কোন দাবীর সংশ্লেষ ধারা-৩৮ এর উপ-ধারা (৭) এর উল্লিখিত খরচ হিসাবে ব্যয় হইতে পারে এমন অর্থের পরিমাণ আগাম জমার জন্য নির্ধারণ করিতে পারিবে :
তবে শর্ত থাকে যে, যেইক্ষেত্রে দাবী ছাড়াও পাল্টা দাবী সালিসী ট্রাইব্যুনালে দাখিল করা হয় সেইক্ষেত্রে সালিসী ট্রাইব্যুনাল উক্তরূপ দাবী এবং পাল্টা দাবী সংশ্লেষে ব্যয়িতব্য জমার ভিন্ন ভিন্ন পরিমাণ নির্ধারিত করিতে পারিবে।
(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লেখিত জমার অর্থ পক্ষগণ কর্তৃক সমান অংশে পরিশোধিতব্য হইবে :
তবে শর্ত থাকে যে, কোন এক পক্ষ উহার অংশ জমা করিতে অসমর্থ হইলে, অপর পক্ষ সেই অংশ জমা করিতে পারিবে :
আরো শর্ত থাকে যে, অপর পক্ষেও যদি উপরিল্লিখিত দাবী বা পাল্টা দাবী সম্পর্কিত অংশ জমা না করে তাহা হইলে সালিসী ট্রাইব্যুনাল সালিমী কার্যধারার সমাপ্তি ঘোষণা করিতে পারিবে অথবা পক্ষগণকে রোয়েদাদ প্রদান করিতে অস্বীকার করিতে পারিবে।
(৩) সালিসী কার্যধারা সমাপ্তি হওয়ার পর সালিসী ট্রাইব্যুনাল জমা সম্পর্কে একটি হিসাব পক্ষগণকে সরবরাহ করিবে এবং অব্যয়িত অর্থ, পক্ষকে বা ক্ষেত্রমত, পক্ষগণকে ফেরত প্রদান করিবে।
ধারা-৫০। সালিসকারীর পারিশ্রমিক ও খরচ সম্পর্কে বিরোধ।¾ (১) যদি কোন সালিসী ট্রাইব্যুনাল তদকর্তৃক দাবীকৃত খরচ পরশোধ ব্যতীত উহার রোয়েদাদ প্রদান করিতে অস্বীকার করে, তাহা হইলে আদালত এতদুদ্দেশ্যে কোন পক্ষ কর্তৃক পেশকৃত আবেদনের ভিত্তিতে আদেশ প্রদান করিতে পারিবে যে-
(ক) উক্ত পক্ষ সালিসী ট্রাইব্যুনালের দাবীকৃত খরচের অর্থ আদালত জমা করিলে, সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনাল সালিসী বোয়েদাদ প্রদান করিবে; এবং
(খ) আদালতের বিবেচনায় প্রয়োজনীয় তদন্তের পর জমাকৃত টাকা হইতে যুক্তিসংগত খরচের টাকা হিসাবে সালিসী ট্রাইব্যুনালকে প্রদানের পর উদ্বৃত্ত, যদি থাকে, উক্ত পক্ষকে ফেরত প্রদান করা হইবে।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন যে কোন পক্ষ আবেদন করিতে পারিবে যদি তাহার সহিত সালিসী ট্রাইব্যুনালের লিখিত চুক্তি দ্বারা দাবীকৃত ফি নির্ধারিত হইয়া না থাকে এবং এইরূপ যে কোন আবেদনের বিষয়ে সালিসী ট্রাইব্যূনালের আদালতে হাজির হওয়ার এবং বক্তব্য পেশ করিবার অধিকার থাকিবে।
(৩) যে ক্ষেত্রে সালিসের খরচ সম্পর্কে বিতর্ক উত্থাপিত হয় এবং উক্তরূপ খরচ সম্পর্কে সালিসী রোয়েদাদ পর্যাপ্ত বিধান অন্তর্ভুক্ত না থাকে, সে ক্ষেত্রে আদালত সালিসের খরচ সম্পর্কে উহার বিবেচনায় সংগত যে কোন আদেশ প্রদান করিতে পারিবে।
(৪) উপ-ধারা (১) এর বিধানাবলী এবং সালিসী চুক্তির বিন্নতর শর্ত, যদি থাকে, সাপেক্ষে সালিসী রোয়েদাদে সালিসের অনাদারয়ী কোন খরচ আদায় সংক্রান্ত বিষয়ে সালিসী ট্রাইব্যুনালের অগ্রস্বত্ব (lien) থাকিবে।
ধারা-৫১। কোন পক্ষের মৃত্যুজনিত কারণে সালিস চুক্তি দায়মুক্ত নয়।¾ (১) পক্ষগণ ভিন্নভাবে সম্মত না হইলে-
(ক) কোন পক্ষের মৃত্যুজনিত কারণে কোন সালিস চুক্তি দায়মুক্ত (discharge) হইবে না এবং ক্ষেত্রমত, মৃতের আইনানুগ প্রতিনিধি দ্বারা বা উক্ত প্রতিনিধির বিরুদ্ধে বলবৎযোগ্য হইবে;
(খ) যে পক্ষের দ্বারা সালিসকারী নিযুক্ত হইয়াছে সেই পক্ষের মুত্যুর কারণে সংশ্লিষ্ট সালিসকারীর কর্তৃত্ব ক্ষুন্ন হইবে না।
(২) এই ধারার কোন কিছুই কোন ব্যক্তির মৃত্যুর মাধ্যমে তাহার অধিকার লোপ পাওয়া সংক্রান্ত প্রচলিত অন্যান্য আইনের বিধানকে ক্ষুন্ন করিবে না।
ধারা-৫৯। দেউলিয়াত্বের ক্ষেত্রে বিধান।¾ (১) দেউলিয়া আইন এর অধীন দেউলিয়া ঘোষিত কোন ব্যক্তি যদি এমন কোন চুক্তিতে পক্ষ থাকেন যাহাতে এই মর্মে শর্ত থাকে যে, উক্ত চুক্তি হইতে উদ্ভুত বা উক্ত সংশ্লেষে যে কোন বিরোধ সালিসে প্রেরিত হইবে, তাহা হইলে উক্ত আইনের অধীন নিযুক্ত রিসিভার যদি উক্ত চুক্তি গ্রহণ (adopt) করেন, সেইক্ষেত্রে অনুরূপ শর্ত যতদূর উক্ত বিরোধের সহিত সংশ্লিষ্ট ততদূর উক্ত রিসিভার দ্বারা বা রিসিভারের বিরুদ্ধে তাহার দ্বারা বা তাহার বিরুদ্ধে প্রযোজ্য হইবে।
(২) যেইক্ষেত্রে দেউলিয়া আইন এর অধীন দেউলিয়া ঘোষিত কোন ব্যক্তি দেউলিয়া কার্যধারা শুরু হইবার পূর্বে কোন সালিস চুক্তিতে পক্ষ হইয়া থাকেন এবং উক্ত চুক্তি সম্পর্কিত কোন বিষয়ে যদি দেউলিয়া কার্যধারা সম্পর্কে বা উক্ত কার্যধারার উদ্দেশ্যে সাব্যস্ত হওয়া আবশ্যক হয়-
(ক) তাহা হইলে বিষয়টিতে উপ-ধারা (১) এর বিধান প্রযোজ্য না হওয়ার ক্ষেত্রে উক্ত আইন এর অধীন অন্য কোন পক্ষ অথবা নিযুক্ত রিসিভার এখতিয়ারসম্পন্ন দেউলিয়া আদালতে চলমান দেউলিয়া কার্যধারায় আবেদন করিয়া এইমম্যে আদেশের জন্য আবেদন করিতে পারিবে যেন বিরোধীয় প্রশ্নটি বালিস চুক্তি অনুযায়ী সালিসে প্রেরণ করা হয়; এবং
(খ) দেউলিয়া আদালত, এইরূপ ক্ষেত্রে বিষয়টির সংশ্লিষ্ট পারিপার্শ্বিকতা বিবেচনায় যদি এইরূপ অভিমত পোষণ করে যে, বিষয়টি সালিসের মাধ্যমে সাব্যস্ত হওয়া প্রয়োজন, তাহা হইলে উক্তরূপ আদেশ প্রদান করিতে পারিবে।
ব্যাখ্যা।- এই ধারায় "দেউলিয়া আইন" অর্থ দেউলিয়া আইনের ধারা-২ এর দফা (৪) এর ব্যাখ্যাত রিসিভারকে বুঝাইবে।
ধারা-৫৩। অধিক্ষেত্রে।¾ এই আইন বা আপাততঃ বলবৎ অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, যেইক্ষেত্রে এই আইনের অধীন কোন সালিস চুক্তি সম্পর্কে কোন আদালতে কোন আবেদন করা হয়, সেইক্ষেত্রে-
(ক) কেবলমাত্র উক্ত আদালাতেরই উক্ত সালিসী কার্যধারার উপর অধিক্ষেত্র থাকিবে; এবং'
(খ) উক্ত চুক্তি ও সালিসী কার্যধারা হইতে পরবর্তীতে উদ্ভুত সকল কার্যধারা কেবলমাত্র উক্ত আদালতেই দায়ের করা যাইবে, অন্য কোন আদালতে দায়ের করা যাইবে না।
ধারা-৫৪। সালিস এর বিধান সম্বলিত আইনের ক্ষেত্রে এই আইনের প্রয়োগ।¾ এই আইনের কোন কিছুই Industrial Relations Ordinance, 1959 (XXIII of 1959) বা সালিসের জন্য বিশেষ বিধান সম্বলিত অন্য কোন আইনের অধীন সালিসের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে না।
ধারা-৫৫। তামাদি।¾ (১) এই আইনের বিধানাবলী সাপেক্ষে তামাদি আইন আদালতের কার্য-ধারার ক্ষেত্রে যেভাবে প্রযোগ্য হয় একইভাবে এই আইনের অধীন সালিসের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হইবে।
(২) এই ধারা এবং তামাদি আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে কোন সালিস ধারা ২৭ এ উল্লিখিত তারিখে শুরু হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।
(৩) যেইক্ষেত্রে ভবিষ্যতে উদ্ভুত কোন বিরোধ সালিসে প্রেরণ করার লক্ষ্যে সালিস চুক্তিতে এইরূপ সংস্থান করা হয় যে, কোন দাবী চুক্তিতে নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে বারিত হইবে যদি চুক্তিতে নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে সালিসী কার্যধারা শুরু করার লক্ষে কোন পদক্ষেপ গৃহীত না হয় সেইক্ষেত্রে আদালত উহার বিবেচনায় ন্যায় বিচারের স্বার্থে উপযুক্ত শর্ত আরোপ করা সাপেক্ষে সময়সীমা যুক্তিসংগতভাবে বর্ধিত করিতে পারিবে।
(৪) যেইক্ষেত্রে আদালত কোন সালিসী রোয়েদাদ বাতিলের আদেশ করিয়া থাকে, সেইক্ষেত্রে সালিস শুরু হওয়ার তারিখ হইতে আদালত কর্তৃক আদেশ প্রদত্ত হওয়ার তারিখের মধ্যবর্তী সময় তামাদি আইন অনুসারে গণনা বহির্ভুত থাকিবে।
ধারা-৫৬। ইংরেজীতে অনুদিত পাঠ প্রকা।¾ এই আইন প্রবর্তনের পর সরকার, সরকারী গেজেট প্রজ্ঞাপন দ্বারা এই আইনের ইংরেজীতে অনুদিত একটি প্রমাণীকৃত পাঠ প্রকাশ করিবে, যাহা এই আইনের প্রমাণীকৃত ইংরেজী পাঠ (Authentic English) নামে অভিহিত হইবে :
তবে শর্ত থাকে যে, এই আইন ও উক্ত ইংরেজী পাঠের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে আইন প্রাধান্য পাইবে।
ত্রয়োদশ পরিচ্ছেদ
সম্পূরক বিধানাবলী
ধারা-৫৭। সরকারের বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা।¾ ধরা-৫৮ এর বিধান সাপেক্ষে, সরকার, এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকারী গেজেট প্রজ্ঞাপনের দ্বারা, বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে।
ধারা-৫৮। কতিপয় ক্ষেত্রে সুপ্রীম কোর্টের বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা।¾ সুপ্রীম কোর্ট, রাষ্ট্রপতির অনুমোদনক্রমে, হাইকোর্ট বিভাগ বা আদালতের কার্যধারা নিয়ন্ত্রণের এই আইনের সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণ বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে।
চতুর্দশ পরিচ্ছেদ
রহিতকরণ ও হেফাজত
ধারা-৫৯। রহিতকরণ ও হেফাজত।¾ (১) The Arbitration (Protocol and Convention) Act 1937, The Arbitration Act, 1940, অতঃপর উক্ত Acts বলিয়া উল্লিখিত, এতদ্বারা রহিত করা হইল।
(২) অনুরূপ রহিতকরণ সত্ত্বেও পক্ষগণ ভিন্নভাবে সম্মত না হইলে, উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত Acts এর বিধানাবলী, এই আইন বলবৎ হওয়ার পূর্বে শুরু হওয়া সালিসী কার্যধারার ক্ষেত্রে এমনভাবে প্রযোজ্য হইবে যেন এই আইন প্রণীত হয় নাই।
তথ্যসূত্র: সালিস আইন, ২০০১, সর্বশেস সংশোধনী ধারার বিশ্লেষণ ও উচ্চতর আদালতের নজীর সহ- ছিদ্দিকুর রহমান মিয়া, জেলা ও দায়রা জজ
সৌজন্যে: প্যান লোকালাইজেশন প্রোজেক্ট