রেজিস্টার্ড নং ডি এ-১
বাংলাদেশ গেজেট
অতিরিক্ত সংখ্যা
কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রকাশিত
সোমবার, ফেব্রুয়ারী ২৩, ২০০৪
বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ
ঢাকা,
১১ই ফাল্গুন, ১৪১০/২৩শে ফেব্রুয়ারী, ২০০৪
সংসদ কর্তৃক গৃহীত নিম্নলিখিত আইনটি ১১ই ফাল্গুন, ১৪১০ মোতাবেক ২৩শে ফেব্রুয়ারী, ২০০৪ তারিখে রাষ্ট্রপতির সম্মতি লাভ করিয়াছে এবং এতদ্বারা এই আইনটি সর্বসাধারণের অবগতির জন্য প্রকাশ করা যাইতেছে:¾
২০০৪ সনের ৫নং আইন
দেশে দুর্নীতি এবং দুর্নীতিমূলক কার্য প্রতিরোধের লক্ষ্যে দুর্নীতি এবং অন্যান্য সুনির্দিষ্ট অপরাধের অনুসন্ধান এবং তদন্ত পরিচালনার জন্য একটি স্বাধীন দুর্নীতি দমন কমিশন প্রতিষ্ঠা এবং আনুষঙ্গিক বিষয়াদি সম্পর্কে বিধানকল্পে প্রণীত আইন
যেহেতু দেশে দুর্নীতি এবং দুর্নীতিমুলক কার্য প্রতিরোধের লক্ষ্যে দুর্নীতি এবং অন্যান্য সুনির্দিষ্ট অপরাধের অনুসন্ধান এবং তদন্ত পরিচালনার জন্য একটি স্বাধীন দুর্নীতি দমন কমিশন প্রতিষ্ঠা এবং আনুষংঙ্গিক বিষয়াদি সম্পর্কে বিধান করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;
সেহেতু এতদ্দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল :¾
১। সংক্ষিপ্ত শিরোনাম, প্রয়োগ ও প্রবর্তন।¾ (১) এই আইন দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ নামে অভিহিত হইবে।
(২) এই আইনের প্রয়োগ সমগ্র দেশে হইবে।
(৩) সরকার, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, যে তারিখ নির্ধারণ করিবে সেই তারিখে এই আইন বলবৎ হইবে।
২। সংজ্ঞা।¾ বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থি কোন কিছু না থাকিলে, এই আইনে¾
(ক) "কমিশন" অর্থ ধারা ৩ এর অধীন প্রতিষ্ঠিত দুর্নীতি দমন কমিশন;
(খ) "কমিশনার" অর্থ কমিশনের চেয়অরম্যান বা অন্য কোন কমিশনার;
(গ) "চেয়অরম্যান" অর্থ কমিশনের চেয়ারম্যান;
(ঘ) "তফসিল" অর্থ এই আইনের তফসিল;
(ঙ) "দুর্নীতি" অর্থ এই আইনের তফসিলে উল্লিখিত অপরাধসমূহ;
(চ) "নির্ধারিত" অথী বিধি দ্বারা নির্ধারিত;
(ছ) "ফৌজদারী কার্যবিধি" অর্থ The Code of Criminal Procedure, 1898 (V of 1998);
(জ) "বাছাই কমিটি" অর্থ ধারা ৭ এর অধীন গঠিত বাছাই কমিটি;
(ঝ) "ব্যুরো অব এন্টি-করাপশন" অর্থ the Anti-Corruption Act, 1957 (Act No. XXVI of 1957) এর অধীন গঠিত বাংলাদেশ ব্যুরো অব এন্টি-করাপশন;
(ঞ) "বিধি" অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি;
(ট) "সচিব" অর্থ ধারা ১৬ এর অধীন নিযুক্ত কমিশনের সচিব; এবং
(ঠ) "স্পেশাল জজ" অর্থ the Criminal Law Amendment Act, 1958 (Act No XL of 1958) এর section 3 এর অধীন নিযুক্ত Special Judge।
৩। কমিশন প্রতিষ্ঠা, ইত্যাদি।¾ (১) এই আইন, বলবৎ হইবার পর, যতশীঘ্র সম্ভব, সরকার সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে দুর্নীতি দমন কমিশন নামে একটি কমিশন প্রতিষ্ঠা করিবে।
(২) এই কমিশন একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ কমিশন হইবে।
৪। কমিশনের কার্যালয়।¾ কমিশনের প্রধান কার্যালয় রাজধানী ঢাকায় থাকিবে এবং কমিশন, প্রয়োজনবোধে, দেশের যে কোন স্থানে উহার শাখা কার্যালয় স্থাপন করিতে পারিবে।
৫। কমিশন গঠন, ইত্যাদি।¾ (১) কমিশন তিন জন কমিশনারের সমন্বয়ে গঠিত হইবে এবং তাঁহাদের মধ্য হইতে রাষ্ট্রপতি একজনকে চেয়ারম্যান নিয়োগ করিবেন।
(২) শুধুমাত্র কোন কমিশনার পদে শূন্যতা বা কমিশন গঠনে ত্রুটি থাকিবার কারণে কমিশনের কোন কার্য বা কার্যধারা অবৈধ হইবে না এবং তৎসম্পর্কে কোন আদালতে প্রশ্নও উত্থাপন করা যাইবে না।
৬। কমিশনারগণের নিয়োগ ও মেয়াদ।¾ (১) কমিশনারগণ রাষ্ট্রপতি কর্তৃক ধারা ৭ অনুসারে গঠিত বাছাই কমিটির সুপারিশক্রমে নিয়োগপ্রাপ্তা হইবেন।
(২) কমিশনারগণ পূর্ণকালীন সময়ের জন্য স্ব-স্ব পদে কর্মরত থাকিবেন।
(৩) কমিশনারগণ, ধারা ১০ এর বিধান সাপেক্ষে, তাঁহাদের নিয়োগের তারিখ হইতে চার বৎসর মেয়াদের জন্যে স্ব-স্ব পদে অধিষ্ঠিত থাকিবেন।
(৪) উক্ত মেয়াদ অতিবাহিত হইবার পর কিশনারগণ পুনঃ নিয়োগের যোগ্য হইবেন না।
৭। বাছাই কমিটি।¾ (১) কমিশনার পদে নিয়োগের জন্য সুপারিশ প্রদানের উদ্দেশ্যে নিম্নবর্ণিত পাঁচ জন সদস্য সমন্বয়ে একটি বাছাই কমিটি গঠিত হইবে, যথা :¾
(ক) প্রধান বিচারপতি কর্তৃক মনোনীত সুপ্রীম কোর্টের আপীল বিভাগের একজন বিচারক;
প্রধান বিচারপতি কর্তৃক মনোনীত সুপ্রীম কোর্টের হাই কোর্ট বিভাগের একজন বিচারক;
(গ) বাংলাদেশের মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক;
(ঘ) সরকারী কর্মকমিশনের চেয়ারম্যান; এবং
(ঙ) অবসরপ্রাপ্ত মন্ত্রিপরিষদ সচিবদের মধ্যে সর্বশেষে অবসরপ্রাপ্ত মন্ত্রিপরিষদ সচিব :
তবে শর্ত থাকে যে, যদি উক্তরূপ অবসরপ্রাপ্ত মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে পাওয়া না যায় অথবা তিনি বাছাই কমিটির সদস্যপদ গ্রহণে অসম্মত হন, তাহা ইলে সর্বশেষ অবসরপ্রাপ্ত মন্ত্রিপাষিদ সচিবের অব্যবহিত পূর্বের অবসরপ্রাপ্ত মন্ত্রিপরিষদ সচিব :
আরও শর্ত থাকে যে, যদি উক্তরূপ কোন অবসরপ্রাপ্ত মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে পাওয়া না যায় অথবা তিনি বাছাই কমিটির সদস্যপদ গ্রহণে অসম্মত হন, তাহা হইলে বর্তমানে কর্মরত মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
(২) প্রধান বিচারপতি কর্তৃক মনোনীত সুপ্রীম কোর্টের আপীল বিভাগের বিচারক বাছাই কমিটির সভাপতি হইবেন।
(৩) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ বাছাই কমিটির কার্য-সম্পদানে প্রয়োজনীয় সাচিবিক সহায়তা প্রদান করিবে।
(৪) বাছাই কমিটি, কমিশনার নিয়োগে সুপারিশ প্রদানের উদ্দেশ্যে, উপস্থিত সদস্যদের অন্যূন ৩ (তিন) জনের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে কমিশনারের প্রতিটি শূন্য পদের বিপরীতে দুই জন ব্যক্তির নামের তালিকা প্রণয়ন করিয়া ধারা ৬ এর অধীন নিয়োগ প্রদানের জন্য রাষ্ট্রপতির নিকট প্রেরণ করিবে।
(৫) অন্যূন ৪ (চার) জন সদস্যের উপস্থিতিতে বাছাই কমিটির কোরাম গঠিত হইবে।
৮। কমিশনারগণের যোগ্যতা, অযোগ্যতা, ইত্যাদি।¾ (১) আইনে, শিক্ষায়, প্রশাসনে, বিচারে বা শৃঙ্খলা বাহিনীতে অন্যূন ২০ (বিশ) বৎসরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কোন ব্যক্তি কমিশনার হইবার যোগ্য হইবেন।
(২) কোন ব্যক্তি কমিশনার হিসাবে নিযুক্তি হইবার বা থাকিবার যোগ্য হইবেন না, যদি তিনি¾
(ক) বাংলাদেশের নাগরিক না হন;
(খ) কোন ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ঋণ খেলাপী হিসাবে ঘোষিত বা চিহ্নিত হন;
(গ) আদালত কর্র্তক দেউলিয়া ঘোষিত হইবার পর দেউলিয়াত্বের দায় হইতে অব্যাহতি লাভ না করেন;
(ঘ) নৈতিক স্খলন বা দুর্নীতিজনিত কোন অপরাধের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হইয়া আদালত কর্তৃক কারাদণ্ডে দণ্ডিত হইয়াছেন;
(ঙ) সরকারী চাকুরীতে নিয়োজিত থাকেন;
(চ) দৈহিক বা মানসিক বৈকল্যের কারণে কমিশনের দায়িত্ব পালনে অক্ষম হন; এবং
(ছ) বিভাগীয় মামলায় গুরুদণ্ড প্রাপ্ত হন।
৯। কমিশনারগণের অক্ষমতা।¾ কর্মাবসানের পর কোন কমিশনার প্রজাতন্ত্রের কার্যে কোন লাভজনক পদে নিয়োগ লাভের যোগ্য হইবেন না।
১০। কমিশনারগণের পদত্যাগ ও অপসারণ।¾ (১) কোন কমিশনার রাষ্ট্রপতি বরাবরে ১ (এক) মাসের লিখিত নোটিশ প্রেরণপূর্বক স্বীয় পদ ত্যাগ করিতে পারিবেন :
তবে শর্ত থাকে যে, চেয়ারম্যান ব্যতীত অন্যান্য পদত্যাগকারী কমিশনারগণ উক্ত নোটিশের একটি অনুলিপি চেয়ারম্যান বরাবর অবগতির জন্য প্রেরণ করিবেন।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন পদত্রাগ সত্ত্বেও, পদত্রাগ পত্র আনুষ্ঠানিকভাবে গৃহীত না হওয়া পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি, প্রয়োজনবোধে, পদত্যাগকারী কমিশনারকে তাঁহার দায়িত্ব পালনের জন্য অনুরোধ করিতে পারিবেন।
(৩) সুপ্রীম কোর্টের একজন বিচারক যেরূপ কারণ ও পদ্ধতিতে অপসারিত হইতে পারেন, সেইরূপ কারণ ও পদ্ধতি ব্যতীত কোন কমিশনারকে অপসারণ করা যাইবে না।
১১। কমিশনার পদে সাময়িক শূন্যতা।¾ কোন কমিশনার মৃত্যুবরণ বা স্বী পদ ত্যাগ করিলে বা অপসারিত হইলে, রাষ্টপ্তি উক্ত পদ শূন্য হইবার ত্রিশ দিনের মধ্যে, এই আইনের বিধান সাপেক্ষে, কোন উপযুক্ত ব্যক্তিকে শূন্য পদে নিয়োগদান করিবেন।
১২। প্রধান নির্বাহী।¾ (১) চেয়ারম্যান কমিশনের প্রধান নির্বাহী হইবেন; এবং তাঁহার পদত্যাগ, অপসারণ, অনুপস্থিতি, অসুস্থতা বা অন্য কোন কারণে দায়িত্ব পালনে অপারগতার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি একজন কমিশনারকে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব সাময়িকভাবে পালনের নির্দেশ দিতে পারিবেন।
(২) চেয়ারম্যানের সার্বিক তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণে কমিশনারগণ তাঁহাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করিবেন এবং এইরূপ দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে চেয়অরম্যানের নিকট কমিশনারগণের জবাবদিহিতা থাকবে।
১৩। কমিশনারগণের পারিশ্রকিম, ভাতা, ইত্যাদি।¾ চেয়ারম্যান এবং কমিশনারগণের পারিশ্রমিক, ভাতা ও অন্যান্য সুবিধাদি সরকার কর্তৃক নির্ধারিত হইবে।
১৪। কমিশনের সভা।¾ (১) এই ধারার অন্যান্য বিধানাবলী সাপেক্ষে, কমিশন উহার সভার কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ করিতে পারিবে।
(২) কমিশনের সকল সভা চেয়ারম্যান কর্তৃক নির্ধারিত স্থান ও সময়ে অনুষ্ঠিত হইবে।
(৩) চেয়ারম্যান কমিশনের সকল সভায় সভাপতিত্ব করিবেন এবং তাঁহার অনুপস্থিতিতে চেযারম্যান কর্তৃক মনোনীত কোন কমিশনার সভায় সভাপতিত্ব করিবেন।
(৪) চেয়ারম্যানসহ দুই জন কমিশনারের উপস্থিতিতে সভার কোরাম গঠিত হইবে।
১৫। কমিশনের সিদ্ধান্ত।¾ (১) কমিশনের সকল সিদ্ধান্ত উহার সভায় গৃহীত হইতে হইবে।
(২) কমিশন¾
(ক) উহার দায়িত্ব পালনের জন্য কমিশনের সভায় নিয়মিত সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও সুপারিশ প্রণয়ন করিবেন;
(খ) উহার সিদ্ধান্ত ও সুপারিশসমূহ বাস্তবায়িত হইতেছে কি না তাহা নিয়মিত পরিবীক্ষণ করবে; এবং
(গ) প্রতি ৩ (তিন) মাস পরপর কমিশনের সভায় উহার মূল্যায়ন করিবে।
১৬। কমিশনের সচিব, কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ, ইত্যাদি।¾ (১) কমিশনের একজন সচিব থাকিবে, যিনি কমিশন কর্তৃক নিযুক্তি হইবেন।
(২) সচিবের দায়িত্ব হইবে চেয়ারম্যানের নির্দেশ অনুযায়ী কমিশনের সভার আলোচ্য বিষয়সূচী এবং কমিশনের এতদইবষয়ক সিদ্ধান্ত সাপেক্ষে, সভার তারিখ ও সময় নির্ধারণ, কার্যবিবরণী প্রস্তুতকরণ, কমিশনারগণ কর্তৃক সম্পাদিত কার্যবলীর বিবরণ ও সংশ্লিষ্ট নথি সংরক্ষণ, এবং কমিশন কর্তৃক নির্দেশিত অন্যান্য দায়িত্ব পালন ও কার্য সম্পাদন।
(৩) কমিশন উহার কার্যাবলী দক্ষতার সহিত সম্পাদনের নিমিত্ত প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগ করিতে পারিবে।
(৪) কমিশনের সচিবসহ কর্মকর্তা-কর্মকর্তা-কর্মচারীগণের নিয়োগ ও চাকুরীর অন্যান্য শর্তাদি বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে এবং এইরূপ বিধি প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত কমিশন, সরকারের অনুমোদনক্রমে, প্রশাসনিক আদেশ দ্বারা, ঐ সকল বিষয়ে অনুসরণীয় নিয়ামাবলী নির্ধারণ করিতে পারিবে।
১৭। কমিশনের কার্যাবলী।¾ কমিশন নিম্নবণিত সকল বা যে কোন কার্য সম্পাদন করিতে পারিবে, যথা :¾
(ক) তফসিলে উল্লিখিত অপরাধসমূহের অনুসন্ধান ও তদন্ত পরিচালনা;
(খ) অনুচ্ছেদ (ক) এর অধীন অনুসন্ধান ও তদন্ত পরিচালনার ভিত্তিতে এই আইনের অধীন মামলা দায়ের ও পরিচালনা;
(গ) দুর্নীতি সম্পর্কিত কোন অভিযোগ স্বউদ্যেঅগে বা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি বা তাহার পক্ষে অন্য কোন ব্যক্তি কর্তৃক দাখিলকৃত আবেদনের ভিত্তিতে অনুসন্ধান।
(ঘ) দুর্নীতি দমন বিষয়ে আইন দ্বারা কমিশনকে অর্পিত যে কোন দায়িত্ব পালন করা;
(ঙ) দুর্নীতি প্রতিরোধের জন্য কোন আইনের অধীন স্বীকৃত ব্যবস্থাদি পর্যালোচনা এবং কার্যকর বাস্তবায়নের জন্য রাষ্ট্রপতির নিকট সুপারিশ পেশ করা;
(চ) দুর্নীতি প্রতেরোধের বিষয়ে গবেষণা পরিকল্পনা তৈরী করা এবং গবেষণালব্ধ ফলাফলের ভিত্তিতে করণীয় সম্পর্কে রাষ্ট্রপতির নিকট সুপারিশ পেশ করা;
(ছ) দুর্নিতি প্রতেরোধের লক্ষ্যে সততা ও নিষ্ঠাবোধ সৃষ্টি করা এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে গণসচেতনতা গড়িয়া তোলার ব্যবস্থা করা;
(জ) কমিশনের কার্যাবলী বা দায়িত্বের মধ্যে পড়ে এমন সকল বিষয়ের উপর সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, কর্মশালা ইত্যাদি অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করা;
(ঝ) আর্থ-সামাজিক অবস্থার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের বিদ্যমান বিভিন্ন প্রকার দুর্নীতির উৎস চিহ্নিত করা এবং তদনুসারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য রাষ্ট্রপতির নিকট সুপারিশ পেশ করা;
(ঞ) দুর্নীতির অনুসন্ধান, তদন্ত, মামলা দায়ের এবং উক্তরূপ অনুসন্ধান, তদন্ত ও মামলা দায়েরের ক্ষেত্রে কমিশনের অনুমোদন পদ্ধতি নির্ধারণ করা, এবং
(ট) দুর্নীতি প্রতিরোধের জন্য প্রয়োজনীয় বিবেচিত অন্য যে কোন কার্য সম্পাদন করা।
১৮। কমিশনের ক্ষমতা প্রয়োগ।¾ এই আইনের বিধানাবলী সাপেক্ষে কমিশন, উহার দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে কোন কমিশনার বা কমিশনের কোন কর্মকর্তাকে যেরূপ ক্ষমতা প্রদান করিবে, উক্ত কমিশনার বা কর্মকর্তা সেইরূপ ক্ষমতা প্রয়োগ করিতে পারিবেন।
১৯। অনুসন্ধান বা তদন্তকার্যে কমিশনের বিশেষ ক্ষমতা।¾ (১) দুর্নীতি সম্পর্কিত কোন অভিযোগের অনুসন্ধান বা তদন্তের ক্ষেত্রে, কমিশনের নিম্নরূপ ক্ষমতা থাকিবে, যথা :¾
(ক) সাক্ষীর সমন জারী ও উপস্থিতি নিশ্চিতকরণ এবং শপথের মাধ্যমে সাক্ষীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা;
(খ) কোন দলিল উদঘাটন এবং উপস্থাপন করা;
(গ) শপথের মাধ্যমে সাক্ষ্য গ্রহণ;
(ঘ) কোন আদালত বা অফিস হইতে পাবলিক রেকর্ড বা উহার অনুলিপি তলব করা;
(ঙ) সাক্ষীর জিজ্ঞাসাবাদ এবং দলিল পরীক্ষা করার জন্য পরোয়ানা জারী করা; এবং
(চ) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, নির্ধারিত অন্য যে কোন বিষয়।
(২) কমিশন, যে কোন ব্যক্তিকে অনুসন্ধান বা তদন্ত সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কোন তথ্য সরবরাহ করিবার জন্য নির্দেশ দিতে পারিবে এবং অনুরূপভাবে নির্দেশিত ব্যক্তি তাহার হেফাজতে রক্ষিত উক্ত তথ্য সরবরাহ করিতে বাধ্য থাকিবেন।
(৩) কোন কমিশনার বা কমিশন হইতে বৈধ ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তাকে উপ-ধারা (১) এর অধীন ক্ষমতা প্রয়োগে কোন ব্যক্তি বাধা প্রদান করিলে বা উক্ত উপ-ধারার অধীন প্রদত্ত কোন নির্দেশ ইচ্ছাকৃতভাবে কোন ব্যক্তি অমান্য করিলে উহা দণ্ডনীয় বা উক্ত উপ-ধারার অধনি প্রতদ্ত কোন নির্দেশ ইচ্ছাকৃতভাবে কোন ব্যক্তি অমান্য করিলে উহা দণ্ডনীয় অপরাধ হইবে এবং উক্ত অপরাধের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি অনূর্ধ্ব ৩ (তিন) বৎসর পর্যন্ত যে কোন মেয়াদের কারাদণ্ডে বা অর্থদণ্ডে বা উভয় প্রকার দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।
২০। তদন্তের ক্ষমতা।¾ (১) ফৌজদারী কার্যবিধিতে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের অধীন ও উহার তফসিলে বর্ণিত অপরাধসমূহ কেবলমাত্র কমিশন কর্তৃক তদন্তযোগ্য হইবে।
(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত অপরাধসমূহ তদন্তের জন্য কমিশন, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, উহার অধঃস্তন কোন কর্মকর্তাকে ক্ষমতা প্রদান করিতে পারিবে।
(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তার, অপরাধ তদন্তের বিষয়ে, থানার ভারপ্রাপ্ত একজন কর্মকর্তার ক্ষমতা থাকিবে।
(৪) উপ-ধারা (২) ও (৩) এর বিধান সত্ত্বেও, কমিশনারগণেরও এই আইনের অধীন অপরাধ তদন্তের ক্ষমতা থাকিবে।
২১। গ্রেফতারের ক্ষমতা।¾ এই আইনের অন্যান্য বিধানে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কমিশন হইতে এতদুদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তার বিশ্বাস করিবার যুক্তিসংগত কারণ থাকে যে, কোন ব্যক্তি তাঁহার নিজ নামে বা অন্য কোন ব্যক্তির নামে স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তির মালিক বা দখলকার যাহা তাহার ঘোষিত আয়ের সহিত অসঙ্গতিপূর্ণ, তাহা হইলে উক্ত কর্মকর্তা, আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে, উক্ত ব্যক্তিকে গ্রেফতার করিতে পারিবেন।
২২। অভিযুক্ত ব্যক্তির শুনানী গ্রহণ।¾ দুর্নীতি বিষয়ক কোন অভিযোগের অনুসন্ধান বা তদন্ত চলাকালে কমিশন যদি মনে করে যে, অভিযোগের সহিত সংশ্লিষ্ট কোন ব্যক্তির বক্তব্য শ্রবণ করা প্রয়োজন, তাহা হইলে কমিশন উক্ত ব্যক্তিকে শুনানীর যুক্তিসঙ্গত সুযোগ প্রদান করিবে।
২৩। অভিযোগের উপর তদন্ত।¾ (১) দুর্নীতি বিষয়ক কোন অভিযোগের অনুসন্ধান বা তদন্ত করিবার সময় কমিশন সরকার বা সরকারের অধীনস্থ যে কোন কর্তৃপক্ষ বা সংস্থা হইতে যে কোন তথ্য আহ্বান করিতে পারিবে; এবং যদি নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে উক্ত তথ্য পাওয়া না যায়, তাহা হইলে কমিশন স্বীয় উদ্যোগে অভিযোগের অনুসন্ধান বা তদন্ত কিরতে পারিবে।
(২) কমিশন কর্তৃক স্বউদ্যোগে দুর্নীতি বিষয়ক কোন অভিযোগের অনুসন্ধান বা তদন্ত করিবার সময় সরকার বা সরকারের অধীনস্থ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বা সংস্থা কমিশন কর্তৃক সরধারণ বা বিশেষ অঅদেশ দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে কমিশনকে সহযোগিতা করিতে বাধা থাকিবে।
২৪। দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে স্বাধীনতা।¾ এই আইনের বিধানাবলী সাপেক্ষে, কমিশনারগণ এই আইনের অধীন দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে স্বাধীন থাকিবেন।
২৫। কমিশনের আর্থিক স্বাধীনতা।¾ (১) সরকার প্রতি অর্থ-বৎসরে কমিশনের ব্যয়ের জন্য উহার অনুকূলে নির্দিষ্টকৃত অর্থ বরাদ্দ করিবে' এবং অনুমোদতি ও নির্ধারিত খাতে উক্ত বরাদ্দকৃত অর্থ হইতে ব্যয় করার ক্ষেত্রে সরকারের পূর্বানুমোদন গ্রহণ করা কমিশনের জন্য আবশ্যক হইবে না।
(২) এই ধারার বিধান দ্বারা সংবিধানের ১২৮ অনুচ্ছেদে প্রদত্ত মহা হিসাব-নিরীক্ষকের অধিকার ক্ষুণ্ণ করা হইয়াচৈ বলিয়া ব্যাখ্যা করা যাইবে না।
২৬। সহায় সম্পত্তির ঘোষণা।¾ (১) কমিশন কোন তথ্যের ভিত্তিতে এবং উহার বিবেচনায় প্রয়োজনীয় তদন্ত পরিচালনার পর যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে, কোন ব্যক্তি, বা তাহার পক্ষে অন্য কোন ব্যক্তি, বৈধ উৎসের সহিত অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পত্তির দখলে রহিয়াছেন বা মালিকানা অর্জন করিয়অছেন, তাহা হইলে কমিশন, লিখিত আগেশ দ্বারা, উক্ত ব্যক্তিকে কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত পদ্ধতিতে দায়-দায়িত্বের বিবরণ দাখিলসহ উক্ত আদেশে নির্ধারিত অন্য যে কোন তথ্য দাখিলের নির্দেশ দিতে পারিবে।
(২) যদি কোন ব্যক্তি¾
(ক) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত আদেশ প্রাপ্তির পর তদনুযায়ী লিখিত বিবৃতি বা তথ্য প্রদানে ব্যর্থ হন বা এমন কোন লিখিল বিবৃতি বা তথ্য প্রদান করেন যাহা ভিত্তিহীন বা মিথ্যা বলিয়া মনে করিবার যথার্থ কারণ থাকে, অথবা
(খ) কোন বই, হিসাব, রেকর্ড, ঘোষণা পত্র, রিটার্ণ বা উপ-ধারা (১) এর অধীন কেন দলিল পত্র দাখিল করেন বা এমন কোন বিবৃতি প্রদান করেন যাহা ভিত্তিহীন বা মিথ্যা বলিয়া মনে করিবার যথার্থ কারণ থাকে,
তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি ০৩ (তিন) বৎসর পর্যন্ত কারাদন্ড বা অর্থদন্ড বা উভয়বিধ দন্ডে দন্ডনীয় হইবেন।
২৭। জ্ঞাত আয়ের উৎস বর্হির্ভুত সম্পত্তির দখল।¾ (১) কোন ব্যক তাহার নিজ নামে, বা তাহার পক্ষে অন্য কোন ব্যক্তির নামে, এমন কোন স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তির দখলে রহিয়াছেন বা মালিকানা অর্জন করিয়াছেন, যাহা অসাধু উপায়ে অর্জিত হইয়াছে এবং তাহার জ্ঞাত আয়ের উৎসের সহিত অসংগতিপূর্ণ বলিয়া মনে করিবার যথেষ্ট কারণ রহিয়অছে এবং তিনি উক্তরূপ সম্পত্তি দখল সম্পর্কে আদালতের নিকট বিচারে সন্তোষজনক ব্যাখ্যা প্রদান কিরতে ব্যর্থ হইলে উক্ত ব্যক্তি অনুর্ধ্ব ১০ (দশ) বৎসর এবং অন্যূন ০৩ (তিন) বৎসর পর্যন্ত যে কোন মেয়াদে কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং তদুপরি অর্থ দন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন; এবং উক্তরূপ সম্পত্তিসমূহ বাজেয়াপ্ত যোগ্য হইবে।
(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত কোন অপরাধের বিচার চলাকালীন যদি প্রমাণিত হয় যে, অভিযুক্ত ব্যক্তি নিজ নামে, বা তাহার পক্ষে অপর কোন ব্যীক্তর নামে, তাহার জ্ঞাত আয়ের উৎসের সহিত অসঙ্গতিপূর্ণ স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তির মালিকানা অর্জন করিয়াছেন বা অনুরূপ সম্পত্তির দখলে রহিয়াছেন, তাহা হইলে আদালত অনুমান করিবে (shall presume) যে, অভিযুক্ত ব্যক্তি উক্ত অপরাধে দোষী, যদি অভিযুক্ত ব্যক্তি আদালতে উক্ত অনুমান খন্ডন (rebut) করিতে না পারেন; এবং কেবল উত্তরূপ অনুমানের উপর ভিত্তি করিয়া প্রদত্ত কোন দন্ড অবৈধ হইবে না।
২৮। অপরাধের বিচার, ইত্যাদি।¾ (১) আপাততঃ বলবৎ অন্য কোন আইনে ভিন্নরূপ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের অধীন ও উহার তফসিলে বর্ণিত অপরাধসমূহ কেবলমাত্র স্পেশাল জজ কর্তৃক বিচারযোগ্য হইবে।
(২) এই আইনের অধীন ও উহার তফসিলে বর্ণিত অপরাধসমূহের বিচার ও আপীল নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে The Criminal Law Amendment Act, 1958 (XL of 1958) এর section 6 এর sub-section (5) এবং sub-section (6) এর বিধান ব্যতীত অন্যান্য বিধানাবলী প্রযোজ্য হইবে।
(৩) The Criminal Lzw Amendment Act. 1958 (XL of 1958) এর কোন বিধান এই আইনের কোন বিধানের সহিত অসংগতিপূর্ণ হইলে এই আইনের বিধান কার্যকর হইবে।
২৯। বার্ষিক প্রতিবেদন।¾ (১) প্রতি পঞ্জিকা বৎসরের মার্চ মাসের মধ্যে কমিশন পূর্ববর্তী বৎসরে সম্পাদিত উহার কার্যাবলী সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন রাষ্ট্রপতির নিকট পেশ করিবে।
(২) এই ধারার অধীন প্রতিবেদন প্রাপ্তির পর রাষ্ট্রপতি উহা জাতীয় সংসদে উপস্থাপনের ব্যবস্থা করিবেন।
৩০। কমিশনের সাংগঠিনক কাঠামো, ইত্যাদি।¾ কমিশনের সাংগঠনিক কাঠামো ও বাজেট সরকার কর্তৃক নির্ধানিত হইবে।
৩১। সরল বিশ্বাসেকৃত কাজকর্ম রক্ষণ।¾ এই আইন বা তদধীন প্রণীত বিধি বা আদেশের অধীন দায়িত্ব পালনকালে সরল বিশ্বসেকৃত কোন কাজের ফলে কোন ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হইলে বা ক্ষতিগ্রস্ত হইবার সম্ভাবনা থাকিলে, হজ্জন্য কমিশন, কোন কমিশনার অথবা কমিশনের কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারীর বিরুদ্ধে দেওয়ানী বা ফৌজদারী মামলা বা অন্য কোন আইনগত কার্যধারা গ্রহণ করা যাইবে না।
৩২। মামলা দায়েরে কমিশনের অনুমোদনের অপরিহার্যতা।¾ (১) ফৌজারী কার্যবিধিতে বা আপাততঃ বলবৎ অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের অধীন মামলা দায়েরের ক্ষেত্রে কমিশনের পূর্বানুমোদন গ্রহণের প্রয়োজন হইবে এবং এই আইনের অধীন মামলা দায়েরের ক্ষেত্রে কমিশন কর্তৃক প্রদত্ত অনুমোদন পত্রের একটি কপি মামলা দায়েরের সময় আদালতে দাখিল করিতে হইবে।
(২) অনুমোদন প্রদান পদ্ধতি বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
৩৩। কমিশনের নিজস্ব প্রসিকিউশন ইউনিট।¾ (১) এই আইনের অধীন কমিশন কর্র্তক তদন্তকৃত এবং স্পেশাল জজ কর্তৃক বিচারযোগ্য মামলাসমূহ পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক প্রসিকিউটর এর সমন্বয়ে কমিশনের অধীন উহার নিজস্ব একটি স্থায়ী প্রসিকিউশন ইউনিট থাকিবে।
(২) উক্ত প্রসিকিউটরগণের নিয়োগ ও চাকুরীর শর্তাবলী বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
(৩) এই ধারার অধীন কমিশনের নিজস্ব প্রসিকিউটর নিযুক্ত না হওয়া পর্যন্ত, কমিশন কর্তৃক অস্থায়ী ভিত্তিতে নিযুক্ত বা অনুমোদিত আইনজীবীগণ এই আইনের অধীন মামলাসমূহ পরিচালনা করিবে।
(৪) এই ধারার অধীন নিযুক্তি প্রসিকিউটরগণ পাবলিক প্রসিকিউটর বলিয়া গণ্য হইবেন।
৩৪। বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা।¾ এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে কমিশন, রাষ্ট্রপতির পূর্বানুমোদনক্রমে এবং সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে।
৩৫। বাংলাদেশ ব্যূরো অব এন্টি-করাপশন এর বিলুপ্তি, ইত্যাদি।¾ (১) আপাততঃ বলবৎ অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, "বাংলাদেশ ব্যুরো অব এন্টি-করাপশন", অতঃপর উক্ত ব্যুরো বলিয়া অভিহিত¾
(ক) ধারা ৩ এর অধীন কমিশন প্রতিষ্ঠিত হইবার তারিখে বিলূপ্ত হইবে :
(খ) বিলুপ্ত হইবার সংগে সংগে উক্ত ব্যুরোর আওতাধীন সরকারের সকল সম্পদ, অধিকার, ক্ষমতা এবং সুবিধাদি কমিশনে ন্যস্ত হইবে; এবং
(গ) উক্ত বুরোর কর্মকর্তা-কর্মচারী উপ-ধারা (২) বিধান সাপেক্ষে কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী বলিয়া গণ্য হইবেন এবং সরকার কর্তৃক নির্ধারিত বেতন, ভাতা এবং কমিশনের পরামর্শক্রমে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত চাকুরীর অন্যান্য শর্তাধীনে চাকুরীতে নিয়োজিত থাকিবেন।
(২) উপ-ধারা (১) এর বিধান সত্ত্বেও, কমিশন, তৎকর্তৃক নির্ধারিত পদ্ধতিতে, যাচাই বাছাই করিয়া ব্যূরোর বিদ্যমান কর্মকর্তা বা কর্মচারীগণের মধ্যে যাতাদিগকে কমিশনের চাকুরীর জন্য উপযুক্ত মনে করিবে তাহাদিগকে কমিশনের চাকুরীতে বহাল রাখিবে এবং অবশিষ্ট কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণকে প্রত্যাহার করার জন্য সরকারকে অনুরোধ করিবে, এবং উক্তরূপে অনুরূদ্ধ হইলে, সরকার উক্ত কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণকে প্রত্যাহার করিয়া নিবে।
৩৬। জটিলতা নিরসনে সরকারের ক্ষমতা।¾ কমিশনের ক্ষমতা ও দায়িত্ব সম্পর্কে এই আইনের বিধানে অস্পষ্টতার কারণে উহা কার্যকর করার ক্ষেত্রে কোন অসুবিধা দেখা দিলে সরকার, অন্যান্য বিধানের সহিত সামঞ্জস্য রাখিয়া গেজেটে বিজ্ঞপ্তির দ্বারা উক্ত বিধানের স্পষ্টীয়করণ বা ব্যাখ্যা প্রদান করতঃ কমিশনের করণীয় বিষয়ে দিক নির্দেশনা দিতে পরিবে।
৩৭। আইনের ইংরেজী অনুবাদ প্রকাশ।¾ এই আইন প্রবর্তনের পর সরকার, যথাশীঘ্র সম্ভব, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের মূল বাংলা পাঠের ইংরেজীতে অনুদিত একটি নির্ভরযোগ্য পাঠ (Authentic English Text) প্রকাশ করিবে :
তবে শর্ত থাকে যে, মূল বাংলা পাঠ এবং ইংরেজী পাঠের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে বাংলা পাঠ প্রাধান্য পাইবে।
৩৮। রহিতকরণ ও হেফাজত।¾ (১) এই আইন বলবৎ হইবার তারিখে the Anti-Corruption Act, 1957 (Act XXVI of 1957), অতঃপর উক্ত Act বলিয়া উল্লিখিত, এবং the Anti-Corruption (Tribunal) Ordinance, 1960 (Ord. No. XVI of 1960), অতঃপর উক্ত Ordinance বলিয়া উল্লিখিত, রহিত হইবে।
(২) উক্ত Act রহিত হওয়া সত্ত্বেও, এই আইনের অধীন কমিশন প্রতিষ্ঠত না হওয়া পর্যন্ত উক্ত Act এর কার্যকরতা, যতদূর সম্ভব, এমনভাবে অব্যাহত থাকিবে যেন উক্ত Act রহিত হয় নাই।
(৩) উক্ত Act রহিত হইবার অব্যবহিত পূর্বে উক্ত Act এর অধীন কোন অভিযোগের অনুসন্ধান, তদন্ত, মামলা দায়েরের অনুমোদন কমিশন কর্তৃক সম্পন্ন করিতে হইবে।
(৪) উক্ত Ordinance রহিত হইবার অব্যবহিত পূর্বে উক্ত Ordinance এর অধীন গঠিত ট্রাইব্যুনালে কোন মামলা নিষ্পত্তির অপেক্ষাধীন থাকিলে উহা তাৎক্ষণিকভাবে সংশ্লিষ্ট এলাকার এখতিয়ার সম্পন্ন স্পেশাল জজ এর নিকট স্থানান্তরিত হইবে।
তফসিল
[ধারা ১৭ (ক) দ্রষ্টব্য]
(ক) এই আইনের অধীন অপরাধসমূহ;
(খ) the prevention of Corruption Act, 1947 (Act II of 1947) এর অধীন শাস্তিযোগ্য অপরাধসমূহ;
(গ) the penal Code, 1860 (Act XL V of 1860) এর section 161-169, 217, 218, 408, 409 and 477A এর অধীন শাস্তিযোগ্য অপরাধসমূহ;
(ঘ) অনুচ্ছেদ (ক) হইতে (গ) তে বর্ণিত অপরাধসমূহের সহিত সংশ্লিষ্ট বা সম্পৃক্ত the Penal Code, 1860 (Act XL V of 1860) এর section 109 এর বর্ণিত সহায়তাসহ অন্যান্য সহায়তা, section 120B এ বর্ণিত ষড়যন্ত্র এবং section 511 এ বর্ণিত প্রচেষ্টার অপরাধসমূহ।
খন্দাকার ফজলূর রহমান
সচিব।
সৌজন্যে: প্যান লোকালাইজেশন প্রোজেক্ট