অকৃষি খাস জমি বন্দোবস্ত ও স্বনির্ভর আদর্শ গ্রাম (গুচ্ছগ্রাম) সৃজন
(তথ্য : ভূমি ব্যবস্থাপনা ম্যানুয়াল; ১৯৯০)
বিধি-১০২। শহর বা পৌর এলাকার জমি কৃষি ও অকৃষি উভয় শ্রেণীর হতে পারে। অকৃষি জমি ১৮৮২ সনের সম্পত্তি হস্তান্তর আইন, ১৯৪৯ সনের অকৃষি প্রজাস্বত্ব আইন এবং ১৯৫০ সনের জমিদারী অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইনের বিধানবলে নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে। জামিদারী অধিগ্রহণের পূর্বে যেসকল অকৃষি প্রজাস্বত্ব বিদ্যামন ছিল কেবলমাত্র ঐসকল ক্ষেত্রে অকৃষি প্রজাস্বত্ব আইনের বিধান প্রযোজ্য হবে। শহর বা পৌরসভা বহির্ভুত অকৃষি জমির ক্ষেত্রেও এ পরিচ্ছেদের বিধান প্রযোজ্য হবে।
বিধি-১০৩। শহর বা পৌর এলাকার অকৃষি জমি বন্দোবস্তের সময় নিম্নোক্ত বিষয়গুলোর প্রতি লক্ষ রাখতে হবে :
(ক) সন্দোবস্ত গ্রহীতাকে এরূপ স্বত্বভোগের নিরাপত্তা প্রদান করতে হবে; যাতে তিনি ইমারত নির্মাণ জাতীয় মূলধন বিনিয়োগে উৎসাহিত বোধ করেন, এবং
(খ) সালামী বা মূল্য এমনভাবে নির্ধারণ করতে হবে, যাতে পাশ্ববর্তী অনুরূপ সুযোগ-সুবিধা পূর্ণ এলাকাস্থ জমির মূল্যের সমান হয়।
বিধি-১০৪। অকৃষি জমির লীজ নির্ধারিত ফরমে রেজিষ্ট্রীকৃত হতে হবে। লীজ দীর্ঘমেয়াদী বা স্বল্প মেয়াদী হতে পারে। স্বল্প মেয়াদী বা দীর্ঘমেয়াদী লীজ চুক্তি বাংলাদেশ ফরম নং- ১০৮৮(গ)-এ স্মপাদন করতে হবে।
বিধি-১০৫। দীর্ঘমেয়াদী লীজ সাধারণত ৩০ বছরের জন্য সম্পাদিত হয়ে থাকে। ইহা ৯৯ বছর পর্যন্ত নবায়ন করার অধিকার থাকবে। অকৃষি লীজের ক্ষেত্রে নামজারির আবেদন রেজিষ্টার-৯ এ অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
বিধি-১০৬। স্বল্পমেয়াদী হোক বা দীর্ঘ মেয়াদীই হোক, লীজ গ্রহীতা কোন অবস্থাতেই লীজ জমি কারও নিকট সাবলীজ প্রদান করতে পরবেনা।
বিধি-১০৭। জমির সালামী বা বিনিয়োগ মূল নির্ধারণের জন্য ঐলাকায় ঐসময়ে একই শ্রেণীর জমির বিক্রয় মূল্য সংগ্রহ করে গড়মূল্য নির্ণয় করা যেতে পারে।
বিধি-১০৮। স্বল্প মেয়াদী লীজ সাধারণ ৫ বছরের বেশী সময়ের জন্য হবেনা। এরূপ ক্ষেত্রে লীজ গ্রহীতাকে লীজ নবায়নের কোন অধিকার বা প্রতিশ্রুতি প্রদান করা যাবেনা। তবে সরকারের প্রচলিত নীতিমালা অনুযায়ী নবায়ন করা যেতে পারে। স্বল্প মেয়াদী লীজের জমি হস্তান্তর করা যাবেনা। হস্তান্তর করা হলে তা বাতিল বলে গণ্য হবে এবং কালেক্টর তাকে উচ্ছেদ করে জমির দখল পুনঃগ্রহণ করবেন।
বিধি-১০৯। স্বল্প মেয়াদী লজি জমিতে কোন স্থায়ী বা পাকা ইমারত নির্শান করতে দেয়া হবেনা। পাকা ইমারতাদি নির্শান করা হলে তাৎক্ষণিকভাবে লীজ বাতিল করা হবে এবং জমি ছেড়ে দেয়ার জন্য নোটিশ প্রদান করা হবে। নোটিশ প্রদানের পর জমির দখল ছেড়ে না দিলে সরকারী জমি ও ইমারত (দখল পুনঃগ্রহণ) আইনের অধীনে উচ্ছেদ করার ব্যবস্থাগ্রহণ করতে হবে।
বিধি-১১০। নগর বা পৌর এলাকাধীন কোন অকৃষি জমি সরকারের পূর্বানুমোদন ব্যতীত কালেক্টর স্বল্প বা দীর্ঘ মেয়াদী কোন লীজ প্রদান করতে পারবেননা।
বিধি-১১১। ঢাকার ওয়ারী এলাকা উন্নত আবাসিক এলাকা হিসেবে উন্নয়নের জন্য সরকারী জমি লীজ প্রদানের বিশেষ ব্যবস্থাগ্রহণ করা হয়েছিল। ভবিষ্যতে কোন সরকারী খাস জমিতে উন্নত আবাসিক এলাকা গড়ে তোলার উদ্দেশে লীজ প্রদানের প্রয়োজন হলে ওয়ারী এলাকার জমি লীজের জন্য যে ফরম নির্ধারণ করা হয়েছিল, তা উপযুক্ত পরিবর্তন সাপেক্ষে ব্যবহার করা যেতে পারে।
বিধি-১১২। পল্লী এলাকায় বাস্তহারা/বাস্তহীন ব্যক্তিদের পুনর্বাসন বা "অপারেশন ঠিকানা" জাতীয় কার্যক্রম বাস্তবায়নের উদ্দেশ্য ব্যতীত অন্য কোন উদ্দেশে সরকারী অকৃষি খাস জমি কোনক্রমেই বাজার মূল্যের কম সালামীতৈ কারও নিকট লীজ প্রদান বা হস্তান্তর করা যাবেনা। সরকারী বিভাগ, দপ্তর, বিধিবদ্ধ সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের ব্যবহারের জন্য খাস জমি প্রয়োজন হলে উহা লীজ গ্রহণ বা হস্তান্তরের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/দপ্তরের বাজেটে প্রচলিত বাজার সমপরিমাণ অর্থ বরাদ্দ থাকতে হবে এবং মূল্য পরিশোধ করতে হবে।
বিধি-১১৩। যদিকোন ব্যক্তি, স্থানীয় প্রতিষ্ঠান বা সমিতি সরকারী খাস জমি লীজ গ্রহণের উপযুক্ত হন এবং সরকারী সাহায্য কামনা করেন, তবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/দপ্তরের বাজেটে উক্ত প্রতিষ্ঠান/সমিতির অনুকূলে জমি লীজ গ্রহণ বাবদ অনুদান হিসেবে অর্থ বরাদ্দ থাকতে হবে। কোন অবস্থাতেই হ্রাসকৃত মূল্যে লীজ দেয়া হবেনা।
বিধি-১১৪। সরকারী জমির মালিকানা এক মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন কোন দপ্তর হতে অন্য মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন অন্য দপ্তরে হস্তান্তর করা প্রয়োজন হলে কি উদ্দেশ এবং পরিস্থিতিতে এ হস্তান্তর প্রয়োজন তা উল্লেখ করে জমির বিবরণ ও বাজার মূল্য সম্বলিত হস্তান্তর প্রস্তাব সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ভূমি মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করবেন। এ প্রস্তাবে কোন আপত্তি না থাকলে প্রয়োজনীয় শর্ত আরোপ করে ভূমি মন্ত্রণালয় হস্তান্তর অনুমোদন করবেন।
বিধি-১১৫। স্থানীয় প্রতিষ্ঠান/সমিতি বা ব্যক্তি বিশেষের ক্ষেত্রে পূর্ণ বাজার মূল্যে সরকারী খাস জমি লীজ পাওয়ার প্রস্তাবসূহ কালেক্টর ও বিভাগীয় কমিশনারের মাধ্যমে ভূমি সংস্কার বোর্ডের নিকট প্রেরণ করতে হবে। ভূমি সংস্কার বোর্ড প্রচলিত নীতিমালার আলোকে ভূমি মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনক্রমে অবৃষি জমি লীজ প্রস্তাব মঞ্জুর/প্রত্যাখান করবেন। এরূপ লীজ প্রচলিত বাজার মূল্য অনুসারে নির্ধারিত সালামী ও প্রচলিত হারে ভূমি উন্নয়ন করে প্রদানের শর্তে মঞ্জুর করা যেতে পারে।
বিধি-১১৬। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে পরিচালিত কোন সরকারী প্রতিষ্ঠান; যথা- রেলওয়ে ইত্যাদির ক্ষেত্রে বা সরকারী বিভাগের উন্নয়নমূলক প্রকল্পের জন্য জমি প্রয়োজন হলে বাংলাদেশ রেলওয়ে বা সংশ্লিষ্ট বিভাগ/দপ্তর হতে বাজার মূল্যে নির্ধারিত সালামী পরিশোধ হওয়ার পরই জমি হস্তান্তর করা যাবে।
বিধি-১১৭। উপরোক্ত সকল হস্তান্তর বা লীজের ক্ষেত্রে সরকারী বিভাগ, স্থানীয় সরকার কর্তৃপক্ষ, সাধারণ সংস্থা (Public body), সমিতি বা প্রতিষ্ঠানকে ভূমি মন্ত্রণালয় কর্তৃক সাকারী খাস জমির লীজ বা হস্তান্তর মঞ্জুর না হওয়া পর্যন্ত জমির দখল প্রদান করা যাবেনা।
বিধি-১১৮। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানীর অনুকূলে কোন সরকারী জমি দখল পুনঃগ্রহণ করা হলে যার অনুকূরে জমি পুনঃগ্রহণ করা হয়েছে, তার নিকট হতে পুনঃগ্রহণ ব্যয় আদায় করা হবে।
বিধি-১১৯। জেলা প্রশাসক তার সকল পৌর এলাকার খাস জমির একটি তালিকা প্রণয়ন করবেন এবং এ তালিকায় ব্যবহার উপযোগিতা ভিত্তিতে; যথা- আবাসিক, বাণিজ্যিক, শিল্প বা অন্য কাজের জন্য খাস জমির বিবরণ উল্লেখ থাকবে। ভবিষ্যতে সরকারী ও জনকল্যাণমূলক কাজে ব্যবহারের প্রয়োজন হতে পারে এরূপ জমিও তালিকাতে চিহ্নিত করতে হবে।
বিধি-১২০। উপরের অনুচ্ছেদে বর্ণিত তালিকা জনসাধারণের অবগতি ও আপত্তি দাখিলের জন্য সংশ্লিষ্ট পৌরসভা অফিস, জেলা প্রশাসকের অফিস এবং সহজারী কমিশনার (ভূমি) অফিস লটকিয়ে জারী করতে হবে এবং এক মাসের মধ্যে প্রাপ্ত সকল আপত্তিসহ তালিকাটি বিভাগীয় কমিশনারের নিকট প্রেরণ করতে হবে।
বিধি-১২১। বিভাগীয় কমিশনার আপত্তি পাওয়ার পর এক মাসের মধ্যে উহা যথাযথ শুনানী প্রদান করে নিষ্পত্তি করবেন এবং তালিকা চূড়ান্ত করবেন।
বিধি-১২২। উপরোক্তভাবে পৌর এলাকার খাস জমির তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার পর প্রচলিত সরকারী নীতিমালা অনুযায়ী ভবিষ্যতে সরকারের বা জনকল্যাণমূলক কাজে প্রয়োজন হতে পারে এরূপ চিহ্নিত জমি ব্যতীত অন্যান্য খাস জমি নিলাম/বন্দোবস্ত প্রদান করা হবে। যার নিজের নামে বা পরিবারের সদস্যদের নামে জমি রয়েছে, তিনি ঐপৌর এলাকায় আবাসিক কাজের জন্য জমি নিলাম/বন্দোবস্তপ্রাপ্ত যোগ্য বলে বিবেচিত হবেননা।
বিধি-১২৩। যে উদ্দেশে কোনব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানকে পৌর এলাকার খাস জমি নিলাম/বন্দোবস্ত দেয়া হবে, সেই উদ্দেশ্য বহির্ভুত অন্যকোনভাবে ঐজমি ব্যবহার করলে নিলাম/বন্দোবস্ত বাতিল বলে গণ্য হবে এবং সরকার বিনা ক্ষতিপূরণে উহার দখল গ্রহণ করতে পারবেন।
বিধি-১২৪। পর্যটন শিল্পের উন্নয়নের লক্ষে সরকার হোটেল এর জন্য খাস জমি বরাদ্দের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছেন। আবেদনকারী ব্যক্তি/সংস্থা হোটেল/মোটেলের বিস্তারিত প্রকল্প শয়ন কক্ষেক সংখ্যা, সুইমিংপুল, শপিং ব্যবস্থা, বার, ট্রাভেল এজেন্ট ইত্যাদি সুবিধাদি উল্লেখ করে আর্থিক স্বচ্ছলতা, নাগরিকত্ব সত্যায়নপত্র ইত্যাদিসহ আবেদনপত্র জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে ভূমি মন্ত্রণালয়ে দাখিল করবেন। জেলা প্রশাসক স্তানীয়ভাবে তদন্ত ও পরীক্ষা-নিরীক্ষান্তে জমির নিম্নতম চাহিদা এবং বর্তমান বাজার মূল্য অনুযায়ী সালামীর পরিমাণ এল্লখ করে বিভাগীয় কমিশনারের মাধ্যমে সুপারিশসহ উক্ত আবেদন মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করবেন।
বিধি-১২৫। সরকার কর্তৃক গঠিতকমিটি সকল আবেদন পরীক্ষান্তে কেবলমাত্র নির্বাচিত আবেদনকারীকেই বন্দোবস্ত দেয়া হবে। আবেদনকারীকে কবুলিয়াত সম্পাদনের নকে বছরের মধ্যে নির্মান কাজ আরম্ভ করতে হবে এবং তিন বছরের মধ্যে নির্মাণ কাজ সমাপ্ত করতে হবে। অন্যথায় বন্দোবস্ত বাতিল করা যেতে পারে।
বিধি-১২৬। থানা নির্বাহী অফিসার সহকারী কমিশনার (ভূমি) এবং ভূমি সহকারীগণের সহায়তায় প্রতি বছর বর্ষা শেষে নদী সিকস্তি/পয়স্তি জমির পূর্ণ বিবরণ সংগ্রহ করবেন এবং সিকস্তি জমিতে জমিদারী অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন (১৯৫০) এর ৮৬ ধারা মোতাবেক মালিকের অধিখার রহিত হওয়ায় তাৎক্ষণিকভাবে উহার খতিয়ান সংশোধন করবেন।
বিধি-১২৭। ১৯৮৭-৮৮ সনের নদী সিকস্তি দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত কোন পরিবার বাস্তহারা হলে বাড়ী করার জন্য খাস জমি চাহে কিনা, তা থানা নির্বাহী অফিসার ক্ষতিগ্রস্ত কোন পরিবার বাস্তহারা হলে বাড়ী করার জন্য খাস জমি চাহে কিনা, তা থানা নির্বাহী অফিসার ক্ষতিগ্রস্থ পরিচার প্রধানকে পত্র দ্বারা জানাবেন।
বিধি-১২৮। নদী সিকক্তি বাস্তচ্যুত পরিবার প্রতি সর্বচ্চ পাঁচ কাঠা পল্লী অঞ্চলের অকৃষি জমি বাড়ী প্রস্তুত করার জন্য বন্দোবস্ত দেয়া যেতে পারে। তবে শর্ত থাকে যে-
(ক) তার সাবেক নিজস্ব জৌজায় বা অনধিক ৫ কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে নিকটবর্তী কোন মৌজার খাস অকৃষি জমি বন্দোবস্ত দেয়া যাবে;
(খ) বাস্তচ্যুতের নিজস্ব আবাদী জমির আশে পাশে খাস অকৃষি জমি থাকলে তা বরাদ্দ করা যাবে;
(গ) কেবলমাত্র বাস্তচ্যুত পরিবার প্রধান জমির জন্য আবেদন করতে পারবে। তার কোন উত্তরাধিকারীর অঅবেদন গ্রহণ করা হবেনা;
(ঘ) হাট-বাজারের চতুঃসীমার মধ্যে কোন জমি বাসগৃহের জন্য বরাদ্দ করা যাবেনা;
(ঙ) এ সুবিধা কেবলমাত্র ১৯৮৭ সনের বন্যায় নদী ভাংগা পরিবার প্রধানকে দেয়া হবে।
বিধি-১২৯। বাস্তহারা পরিবার প্রধানের আবেদন থানা ভূমি সংস্কার কমিটির সভায় বিবেচনা করে সিদ্ধান্তগ্রহণ করতে হবে। সভার কার্যবিবরণী পাওয়ারর পর বন্দোবস্ত নথি সৃজন করে থানা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে জেলা প্রশাসকের নিকট প্রেরণ করতে হবে। জেলা প্রশাসক উহা প্রাপ্তির ১০ দিনের মধ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত প্রদান করবেন।
বিধি-১৩০। জেলা প্রশাসক বন্দোবস্তের চূড়ান্ত আদেশ প্রদান করবেন এবং প্রাপক পরিবার প্রধান নামমাত্র এক টাকা সালামী প্রদান করে কবুলিয়ত সম্পাদন করবেন। জেলা প্রশাসক উহা গ্রহণ করে রেজিষ্ট্রী করে দিবেন।
বিধি-১৩১। খাস কৃষি জমিপ্রাপ্ত পুনর্বাসিত ভূমিহীনদের জমিতে দখল বজায় রাখার প্রাকৃতিক ও সামাজিক প্রতিকুলতার মোকাবেলা, প্রাথমিক পুঁজি উপকরণ সংগ্রহ ও সর্বপরি মনোবল বৃদ্ধি ও দলগত চেতনা সৃষ্টির উদ্দেশে যেখানে সম্ভব, সেখানে সমবায় সংগঠনের ভিত্তিতে গুচ্ছগ্রাম সৃজন করার ওপর সরকার বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করছেন।
বিধি-১৩২। উন্নত বাসোপযোগী পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষে পুনর্বাসিত ভূমিহীনদের সমন্বয়ে যেখানে সম্ভব নিম্নোক্ত নির্দেশাবলীর আলোকে এক একটি স্বনির্ভর আদর্শ গ্রাম সৃষ্টি করার প্রচেষ্টা চালাতে হবে-
(ক) যেখানে ২০.০০ একর বা ততধিক পরিমাণ জমি একত্রে পাওয়া যায়, সেখানেই একটি স্বনির্ভর আদর্শ গ্রাম সৃজন করতে হবে;
(খ) অন্যান্য অনুকূল সুবিধা থাকলে ২০.০০ একরের কম জায়গাতেও সৃজন করা যেতে পারে;
(গ) যেস্থানে স্বনির্ভর আদর্শ গ্রাম করার জন্য নির্বাচন করা হবে, তার একটি প্ল্যান থানা কমিটির অনুরোধক্রমে থানা প্রকৌশলী সরজমিনে জরিপ করে প্রণয়ন করে দিবেন;
(ঘ) প্রস্তাবিত জমির একাংশে পরিবার প্রতি ০.০৮ একর জমির ওপর এক একটি বসতবাড়ী থাকবে।
বিধি-১৩৩। জমির প্রাপ্যতা অনুসারে এক একটি স্বনির্ভর আদর্শ গ্রামের অধিবাসীর সংখ্যা নির্ধারণ করতে হবে। প্রতিটি স্বনির্ভর আদশ্য গ্রামের নামের পূর্বে ঠিকানা ব্যবহার করতে হবে এবং নাম নির্বাচনে স্থানীয় গ্রাম, পল্লী বা মৌজার নাম ব্যবহার করতে হবে।
বিধি-১৩৪। সাধারণত এক হতে তিন একর পর্যন্ত অকৃষি জমিতে (প্রয়োজনে কৃষি জমিকে উন্নত করে) পরিবার প্রতি ০.০৮ একর জায়গার ওপর এক একটি বসতবাটি, ক্ষুদ্র, পুষ্করিণী, নলকূপ এবং বড় গ্রাম হলে স্কুল, পাঠশালা প্রতিষ্ঠা করা যেতে পারে। প্রতিটি বসতবাটির জন্য দু'কক্ষের একটি আবাসগৃহ, একটি রান্নাঘর, সংলগ্ন সবজী বাগান ও সেনিটারী লেট্রিন থাকতে হবে।
বিধি-১৩৫। স্বনির্ভর আদর্শ গ্রাম সংলগ্ন এলাকায় বা ঐ মৌজায় খাস কৃষি জমি থাকলে তা পুনর্বাসিত গ্রামবাসীদের মধ্যে বণ্টন করতে হবে। স্বনির্ভর আদর্শ গ্রামের সকল পরিবারকে কৃষি খাস জমি বন্দোবস্ত দেয়া সম্ভব না হলে তাদিগকে অকৃষি পেশা যথা রিক্সা চালনা বা কোন কুটির শিল্প বা ক্ষুদ্র দোকান পাট পরিচালনায় নিয়োজিত করার ব্যবস্থাগ্রহণ করতে হবে।
বিধি-১৩৬। পতিত বা হাজামজা পুকুর, ডোবা গুচ্ছগ্রামের জন্য নির্বাচিত স্থানের আওতাধীন হলে উহা সংস্কার করে এবং প্রয়োজনে পুকুর খনন করে সম্মিলিত ব্যবহার ও মৎস চাষের ব্যবস্থা করতে হবে। কাজের বিনিময়ে খাদ্য ইত্যাদি প্রকল্প সহায়তায় এবং স্থানীয় উদ্যোগে পুকুর খনন করা যেতে পারে।
বিধি-১৩৭। পুকুর ও লেকে হাঁস প্রতিপালন ও গৃহে মুরগী প্রতিপালন স্বনির্ভর আদর্শ গ্রামের একটি অপরিহার্য কার্যক্রম বলে গণ্য করা হবে।
সূত্র: বাংলাদেশের উপজাতিদের আইন- রামকান্ত সিংহ, ২০০৩
সৌজন্যে: প্যান লোকালাইজেশন প্রোজেক্ট