পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন বিল (২০০১)

[জাতীয় সংসদে উত্থাপিত]

 

যেহেতু পার্বত্য চট্টগ্রাম অনগ্রসর উপজাতি অধ্যুষিত অঞ্চল এবং অনগ্রসর অঞ্চলের উন্নয়নের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা বিধেয়; এবং

যেহেতু এ অঞ্চলের উপজাতীয় অধিবাসীগণসহ সকল নাগরিকের রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, শিক্ষা ও অর্থনৈতিক অধিকার সমুন্নত এবং আর্থ সামাজিক উন্নয়ন প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করা প্রয়োজন; এবং

যেহেতু উপরিউক্ত লক্ষসহ বাংলাদেশের সকল নাগরিকের সার্বিক উন্নয়নের লক্ষে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের আওতায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্ব ও অখন্ডতার প্রতি পূর্ণ অবিচল আনুগত্য রেখে পার্বত্য জেলা সংক্রান্ত জাতীয় কমিটি এবং পার্বত্য জনসংহতি সমিতি বিগত ১৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪০৪ বঙ্গাব্দ মোতাবেক ২রা ডিসেম্বর, ১৯৯৭ খৃষ্টাব্দ তারিখে একটি চুক্তি সম্পাদন করেছে; এবং

যেহেতু উক্ত চুক্তি বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রামের জায়গাজমি সংক্রান্ত কতিপয় বিরোধরে দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য একটি কমিশন গঠন ও আনুষঙ্গিক বিষয়ে বিধান করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়; সেহেতু এতদ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হল-

 

১। সংক্ষিপ্ত শিরোনাম : ১) এ আইন পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি-বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন, ২০০১ নামে অভিহিত হবে।

 

২। সংজ্ঞা : বিষয় বা প্রসংগের পরিপন্থী কিছু না থাকলে, এ আইনে-

ক) "আঞ্চলিক পরিষদ" অর্থ পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ আইন, ১৯৯৮ এর ধারা ৩-এর অধীন স্থাপিত আঞ্চলিক পরিষদ;

খ) "কমিশন" অর্থ এ আইনের ধারা ৩ এর অধীন গঠিত পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন;

গ) "চেযারম্যান" অর্থ কমিশনের চেয়ারম্যান;

ঘ) "পার্বত্য চট্টগ্রাম" অর্থ খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি, বান্দরবন পার্বত্য জেলাসমূহ;

ঙ) "পার্বত্য জেলা" অর্থ রাঙামাটি, বান্দরবন ও খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা;

চ) "পুনর্বাসিত শরণার্থী" অর্থ ৯ই মার্চ, ১৯৯৯ইং তারিখে ভারতের আগরতলায় সরকারের সহিত উপজাতীয় শরণার্থী নেতৃবৃন্দের সম্পাদিত চুক্তির আওতায় তালিকাভুক্ত শরণার্থী;

ছ) "প্রচলিত আইন" বলতে পার্বত্য চট্টগ্রামে এ আইন বলবৎ হবার পূর্বে যেসমস্ত আইন, ঐহিত্য, বিধি, প্রজ্ঞাপন প্রচলিত ছিল কেবলমাত্র সেগুলোকে বুঝাবে;

জ) "বিধি" অর্থ এ আইনের অধীন প্রণীত বিধি;

ঝ) "ভূমি" বলতে পার্বত্য জেলাধীন পাহাড় এবং জলে ভাসাসহ সমূদয় জমি বুঝাবে;

ঞ) "সচিব" অর্থ কমিশনের সচিব;

ট) "সদস্য" অর্থ কমিশনের সদস্য;

ঠ) "সার্কেল চীফ" অর্থ চাকমা চীফ বা বোমাং চীফ বা মং চীফ।

৩। কমিশনের গঠন : ১) এ আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন নামে একটি কমিশন থাকবে।

২) নিম্নবর্ণিত সদস্যগণ সমন্বয়ে কমিশন গঠিত হবে, যথা-

ক) বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি, যিনি উহার চেয়ারম্যানও হবেন;

খ) আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান বা তার প্রতিনিধি হিসেবে তৎকর্তৃক মনোনীত উক্ত পরিষদের একজন সদস্য;

গ) সংশ্লিষ্ট পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, পদাধিকারবলে;

ঘ) সংশ্লিষ্ট সার্কেল চীফ, পদাধিকারবলে;

ঙ) চট্টগ্রাম বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার বা তৎকর্তৃক মনোনীত একজন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার।

ব্যাখ্যা : ১) দফা (গ) এবং (ঘ) এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে "সংশ্লিষ্ট" অর্থ বিরোধীয় ভূীম যথাক্রমে যে পার্বত্য জেলা এবং যে সার্কেলের অন্তর্ভুক্ত, সেই পার্বত্য জেলা এবং সেই সার্কেল।

২) কমিশনের চেয়ারম্যান সরকার কর্তৃক নিযুক্ত হবেন এবং তার চাকুরীর শর্তাবলী সরকার কর্তৃক নির্ধারিত হবে।

৩) সরকারের উদ্দেশে স্বাক্ষযুক্ত পত্রযোগে চেয়ারম্যান স্বীয়পদ ত্যাগ করতে পারবেন।

৪) যদি সরকার এমর্মে সন্তুষ্ট হয় যে, চেযারম্যান গুরুত্ব অসদাচরণ কিংবা শারীরিক বা মানিসক অক্ষমতার কারণে তার পদে বহাল থাকার অযোগ্য হয়ে পড়েছেন, তাহলে সরকার যেকোন সময়ে চেয়ারম্যানকে তার পদ হতে অপসারণ করতে পারবে :

         তবে শর্ত থাকে যে, শুনানীর যুক্তিসংগত সুযোগ প্রদান না করে এ উপধারার অধীনে চেয়ারম্যানকে তার পদ হতে অপসারণ করা যাবেনা।

 

৪। কমিশনের কার্যালয় : ১) কমিশনের প্রধান কার্যালয় খাগড়াছড়ি জেলা সদরে থাকবে।

২) সরকার প্রয়োজনবোধ যেকোন পার্বত্য জেলার কমিশনের শাখা কার্যালয় স্থাপন করতে পারবে।

 

৫। কমিশনের মেয়াদ : কমিশনের মেয়াদ হবে চেয়ারম্যান নিয়োগের তারিখ হতে ৩ (তিন) বৎসর। তবে শর্ত থাকে যে, সরকার আঞ্চলিক পরিষদের সহিত পরামর্শক্রমে উহার মেয়াদ বৃদ্ধি করতে পারবে।

 

৬। কমিশনের কার্যাবলী ও ক্ষমতা : ১) কমিশনের কার্যাবলী নিম্নরূপ হবে, যথা-

ক) পুনর্বাসিত শরণার্থীদের ভূমি সংক্রান্ত বিরোধ পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রচলিত আইন ও রীতি অনুযায়ী নিষ্পত্তি করা;

খ) আবেদনে উল্লিখিত ভূমিতে আবেদনকারী বা ক্ষেত্রমত সংশ্লিষ্ট প্রতিপক্ষের স্বত্ব বা অন্যবিধ অধিকার পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রচলিত আইন ও রীতি অনুযায়ী নির্ধারণ এবং প্রয়োজনবোধে দখল পুনর্বহাল;

গ) পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রচলিত আইন বহির্ভুতভাবে কোন ভূমি বন্দোবস্ত প্রদান করা হয়ে থাকলে উহা বাতিলকরণ এবং উক্ত বন্দোবস্তজনিত কারণে কোন বৈধ মালিক ভূমি হতে বেদখল হয়ে থাকলে তার দখল পুনর্বহাল।

        তবে শর্ত থাকে যে, প্রযোজ্য আইনের অধীনে আধিগ্রহণকৃত ভূমি এবং রক্ষিত (Reserved) বনাঞ্চল, কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ প্রকল্প এলাকা, বেতবুনিয়া ভূ-উপগ্রহ এলাকা, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন শিল্প কারখানা ও সরকার বা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের নামে রেকর্ডকৃত ভূমির ক্ষেত্রে এ উপধারা প্রযোজ্য হবেনা।

২) উপধারা (১) এ বর্ণিত কার্যাবলী পার্বত্য চট্টগ্রামে সীমিত থাকবে।

৩) উক্ত কার্যাবলী সুষ্ঠুভাবে সম্পদনের নিমিত্ত কমিশন যেকোন সরকারী বা সংবিধিবদ্ধ সঙস্তার কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় তথ্য, উপাত্ত বা কাগজপত্র সরবরাহের এবং প্রয়োজনে উক্ত কর্তৃপক্ষের যেকোন কর্মকর্তাকে স্থানবীয় তদন্ত, পরিদর্শন বা জরীপের ভিত্তিতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিতে পারবে এবং উক্ত কর্তৃপক্ষ বা কর্মকর্তা উহা পালনে বাধ্য থাকবেন।

৪) কমিশন বা চেয়ারম্যান বা কমিশন কর্তৃক ক্শতা প্রদত্ত কোন সদস্য যেকোন বিরোধীয় ভূমি সরেজমিনে পরিদর্শন করতে পারবেন।

 

৭। কমিশনের বৈঠক, কোরাম ও কার্যপদ্ধতি : ১) এ আইন ও বিধি সাপেক্ষে কমিশন উহার কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ করবে।

২) চেয়ারম্যানের নির্দেশে সচিব কমিশনের বৈঠকের স্থান, তারিখ ও সময় নির্ধারণ করে সদস্যগণকে লিখিতভাবে অবহিত করবেন।

৩) কমিশনের কোন বৈঠকে কোরামের জন্য চেয়ারম্যান এবং অপর দুজন সদস্যের উপস্থিতির প্রয়োজন হবে এবং চেয়ারম্যান কমিশনের সকল বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন।

৪) কোন বৈঠকে বিবেচিত বিষয় অনিষ্পন্ন থাকলে উহা পরবর্তি যেকোন বৈঠকে বিচেনা ও নিষ্পত্তি করা যাবে এবং সংশ্লিষ্ট পূর্ববর্তী বৈঠকে উপস্থিত সদস্যগণের কারও অনুপস্থিতির কারণে বিষয়টির নিষ্পত্তি বন্ধ থাকবে না বা নিষ্পত্তি সংক্রান্ত কার্যক্রম অবৈধ হবেনা।

৫) চেয়ারম্যান উপস্থিত অন্যান্য সদস্যদের সহিত আলোচনার ভিত্তিতে ধারা ৬(১) এ বর্ণিত বিষয়াদিসহ উহার এখতিয়অরভুক্ত অন্যান্য বিষয়ে সর্বসম্মতির ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে, তবে সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া সম্ভব না হলে চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্তই কমিশনের সিদ্ধান্ত বলে গণ্য হবে।

৬) কমিশন দারা ৬(১) এ উল্লিখিত কার্যাবলী সম্পাদনের ক্ষেত্রে উহার সকল সিদ্ধান্ত লিখিতভাবে প্রদান করবে।

 

৮। কমিশনের বৈঠকে সদস্যগণের যোগদানের নিমিত্ত প্রাপ্যভাতা : কমিশনের বৈঠকে যোগদানের জন্য সরকার কোন নির্দিষ্ট শ্রেণীর সদস্যদের জন্য ভাতা নির্ধারণ করতে পারবে এবং তদনুসারে উক্ত সদস্য উক্ত ভাতা পাবেন।

 

৯। কমিশনের অঅবেদন দাখিল : এ আইনের অধীনে ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য সংশ্লিষ্ট আবেদকারী তার দস্তখত বা টিপসহিযুক্ত দরখাস্ত সাদা কাগজে বাংলা ভাষায় লিখিয়া কমিশনের নিকট দাখিল করবেন।

 

১০। আবেদনের প্রতিপক্ষ : ১) ধারা ৯ এর অধীনে দায়েরকৃত প্রতিটি আবেদনে প্রতিপক্ষ হিসেবে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক, অবৈধ বন্দোবস্ত গ্রহীতা এবং ক্ষেত্রমত আবেদনকারীর জানামতে দাবীকৃত ভূমির বর্তমান দখলকার এর নাম ও ঠিকানা উল্লেখ করতে হবে।

২) উক্ত আবেদনে প্রতিপক্ষ হিসেবে উল্লিখিত সকল ব্যক্তির ওপর কমিশন নোটিশ জারী করবে এবং নোটিশের সহিত আবেদনপত্রের একটি কপিও সংযুক্তি করবে।

৩) উপধারা (১) অনুযায়ী প্রতিপক্ষ হিসেবে উল্লেখ করা হয়নি এমন কোন ব্যক্তিও সংশ্লিষ্ট কারণ উল্লেখপূর্বক প্রতিপক্ষ হওয়ার আবেদন করতে পারবেন এবং কমিশন উক্ত আবেদন বিবেচনাক্রমে উক্ত ব্যক্তিকে প্রতিপক্ষভুক্ত করতে পারবে।

 

১১। কমিশন কর্তৃক সাক্ষ্যগ্রহণ : ১) ধারা ৬(১) বর্ণিত কার্যাবলী সম্পাদনের নিমিত্ত কমিশনের কোন কার্যক্রমে সাক্ষ্য গ্রহনের ক্ষেত্রে কমিশন Evidence Act. 1872 (Act 1 of 1872)-এর বিধানাবলী অনুসরণে বাধ্য থাকবে না, বরং সংশ্লিষ্ট পরিস্থিতি অনুসারে কমিশন যেরূপ যথাযথ বিবেচনা করে সেরূপ সাক্ষ্য গ্রহণ ও লিপিবদ্ধ করতে পারে।

২) কোন বিষয়ে সাক্ষ্য গ্রহণের ক্ষেত্রে কোন ব্যক্তি বাংলা ব্যতীত অন্য কোন ভাষায় সাক্ষ্য প্রদান করলে কমিশন একজন অনুবাদকের সহায়তা গ্রহণ করতে এবং অনুবাদকের অনুবাদ অনুসারে উক্ত সাক্ষ্য বাংলায় লিপিবদ্ধ করতে পারবে।

৩) কমিশন লিখিত নোটিশ দ্বারা যেকোন ব্যক্তিকে উহার সম্মুখে উপস্থিত হয়ে সাক্ষ্য প্রদান এবং সকল প্রকার তথ্য ও দলিলপত্রাদি দাখিলের নির্দেশ দিতে পারবে।

৪) কমিশন কর্তৃক কোন ব্যক্তির মৌখিক সাক্ষ্য হুবহু লিপিবদ্ধ করা বাধ্যতামূলক নহে, বরং উহার সারাংশ লিপিবদ্ধ করলেই চলবে।

৫) কমিশনের সম্মুখে সাক্ষ্য প্রদানের ক্ষেত্রে Oaths Act, 1883 (Act X of 1883) প্রযোজ্য হবে।

 

১২। কমিশন কর্তৃক ক্ষমতা অর্পন : কমিশন প্রয়োজনবোধে এবং তৎকর্তৃক নির্ধারিত শর্তসাপেক্ষে উহার চেয়ারম্যান বা অন্য কোন সদস্য বা কোন কর্মকর্তাকে লিখিত আদেশ দ্বারা এ ধারা এবং ধারা ৬(১) এ বর্ণিত কার্যাবলী সম্পাদন ব্যতীত কমিশনের অন্য যেকোন ক্ষমতা অর্পণ করতে পারবে।

 

১৩। কমিশনের সচিব ও অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগ : ১) কমিশনের একজন সচিব থাকবেন এবং তিনি আইন ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ে অভিজ্ঞ সরকারের উপ-সচিব পদ মর্যাদার কর্মকর্তাগণের মধ্য হতে সরকার কর্তৃক নিযুক্ত হবেন।

২) কমিশনের দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালনের নিমিত্তে সরকার প্রয়োজনীয় সংখ্যক অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগের ব্যবস্থা করবে।

 

১৪। আর্থিক ব্যবস্থা : ১) কমিশনের ব্যয় নির্বাহের জন্য সরকার থোক বরাদ্দ হিসেবে প্রয়োজনীয় অর্থ সরবরাহ করবে এবং এতদুদ্দেশে কমিশন সংশ্লিষ্ট বছরের জন্য আর্থিক বিবরণ সরকারের নিকট প্রেরণ করবে।

২) সচিব চেয়ারম্যানের তত্ত্বাবধানে কমিশনের ব্যয় নির্বাহের দায়িত্ব পালন করবেন।

৩) কমিশনের ব্যয় নির্বাহের ক্ষেত্রে চেয়ারম্যান ও সচিব সংশ্লিষ্ট আইনকানুন ও সরকারী নির্দেশাবলী অনুসরণ করবেন।

 

১৫। হিসাব ও নিরীক্ষা : ১) বাংলাদেশের মহা-হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, অতপর মহাহিসাব নিরীক্ষক বলে অভিহিত, প্রতি বৎসর কমিশনের হিসাব নিরীক্ষা করবেন এবং নিরীক্ষা রিপোর্টের একটি করে অনুলিপি সরকার ও কমিশনের নিকট পেশ করবেন।

২) উপধারা (১) মোতাবেক হিসাব নিরীক্ষার উদ্দেশে মহাহিসাব নিরীক্ষক কিংবা তার নিকট হতে এতুদ্দেশে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তি কমিশনের সকল রেকর্ড, দলিল-দস্তাবেজ, নগদ বা ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ, জামানত, ভান্ডার এবং অন্যবিধ সম্পত্তি পরীক্ষা করে দেখতে পারবেন এবং কমিশনের যেকোন সদস্য, কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবেন।

 

১৬। কমিশনের সিদ্ধান্তের আইনগত প্রকৃতি এবং চূড়ান্ততা : ধারা ৬(১) এ বর্ণিত কোন বিষয়ে দাখিলকৃত আবেদনের ওপর কমিশন প্রদত্ত সিদ্ধান্ত দেওয়ানী আদালতের ডিক্রী বলে গণ্য হবে। তবে উক্ত সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কোন আদালত বা অন্যকোন কর্তৃপক্ষের নিকট আপীল বা রিভিশন দায়ের বা উহার বৈধতা বা যথার্থতা সম্পর্কে কোন প্রশ্ন উত্থাপন করা যাবেনা।

 

১৭। কমিশনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন : ১) অন্যকোন আইনে যা কিছুই থাকুক না কেন কমিশনের সিদ্ধান্ত দেওয়ানী আদালতের ডিক্রী বা ক্ষেত্রমত আদেশের ন্যায় কমিশন উহার কর্মকর্তা ও কর্মচারীর মাধ্যমে বা প্রয়োজনবোধে সরকারী কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করতে বা করাতে পারবে।

২) উপধারা (১) এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সকল কর্তৃপক্ষ কমিশনের নির্দেশ পালনে বাধ্য থাকবে।

 

১৮। বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা : এ আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার এ আইন বলবৎ হবার ছয় মাসের মধ্যে সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা বিধি প্রণয়ন করবে।

 

১৯। কমিশনের অবমাননা আদালত অবমাননার শামিল : (১) Penal Code, 1860 (Act XXV of 1860) এর section 220 এবং Code of Criminal Procedure, 1898 (Act V of 1898) এর section 480 এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে কমিশন উক্ত ধারাসমূহের উল্লিখিত দেওয়ানী আদালত বলে গণ্য হবে এবং তদনুসারে কমিশন উহার অবমাননাকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে।

 

২০। সরল বিশ্বাসে কৃত কাজকর্ম সংরক্ষণ : আইন বা প্রবিধানের অধীন সরল বিশ্বাসে কৃত কোন কাজের ফলে কোন ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হলে বা তার ক্ষতিগ্রস্ত হবার সম্ভাবনা থাকলে তজ্জন্য কমিশনের চেয়ারম্যান, সদস্য বা উহার বা কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারীর বিরুদ্ধে কোন দেওয়ানী বা ফৌজদারী মামলা বা অন্যকোন আইনগত কার্যক্রম গ্রহণ করা যাবেনা।

 

কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ

সচিব

 

সূত্র: বাংলাদেশের উপজাতিদের আইন- রামকান্ত সিংহ, ২০০৩

 

সৌজন্যে: প্যান লোকালাইজেশন প্রোজেক্ট