খাস কৃষি জমি বন্দোবস্ত (বিধি ৪১-৭২)

(সূত্র : ভূমি ব্যবস্থাপনা ম্যানুয়াল, ১৯৯০)

 

৪১। কৃষি জমির সুষম বণ্টনের মাধ্যমে জমির সর্বচ্চ ব্যবহার, কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষে "ভূমি সংস্কার" সরকারের একটি মৌলিক অংগীকার। খাস জমি চিহ্নিত করে ভূমিহীন ও প্রায় ভূমিহীন চাষী পরিবারের মধ্যে খাস কৃষি জমি বিতরণ এবং বাস্তুহারা পরিবারসমুহের মধ্যে বসতবাড়ী নির্মাণের জন্য খাস অকৃষি জমি বণ্টন "জাতীয় ভূমি সংস্কার" কার্যক্রমের প্রাথমিক স্তর।

৪২। সরকারী খাস জমি বলতে ব্যক্তি, সংস্থা বা অন্যান্য সরকারী বিভাগের মালিকানা বহির্ভুত ভূমি মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন খাস জমি বুঝাবে এবং নিম্নোক্ত শ্রেণীর জমি ইহার অন্তর্ভুক্ত হবে :

(ক) কালেক্টরের ১নং খতিয়ান এবং ৮নং রেজিষ্টারের অন্তর্ভুক্ত সকল জমি।

(খ) নদী বা সমুদ্রগর্ভ হতে জেগে ওঠা চরের জমি, যা সিকস্তি জমির পুনরাবির্ভাব (পয়স্তি) হোক অথবা সম্পূর্ণভাবে নতুন চরই হোক (জমিদারী অধিগ্রহণ। ও প্রজাস্বত্ব আইনের ৮৬ ধারা)।

(গ) বাংলাদেশ ল্যাণ্ড লিমিটেশন অর্ডার, ১৯৭২ (১৯৭২ সনের ৯৮নং আদেশ) এর ৩ ধারা মোতাবেক পরিবার/সংস্থার মালিকানাধীন ১০০ বিঘার অতিরিক্ত সরকারের নিকট সমর্পণযোগ্য জমি।

(ঘ) সরকার কর্তৃক নিলামে ক্রীত জমি।

(ঙ) জমিদারী অধিগ্রাহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন (১৯৫০) এর ৯১/৯২ ধারা মোতাবেক অধিগ্রহণকৃত জমি।

(চ) মালিকানা ও দাবিদারবিহীন জমি এবং

(ছ) সরকারী বিভাগ বা বিধিবদ্ধ সংস্থার জন্য অধিগ্রহণকৃত জমির মধ্যে যে পরমাণ জমি অব্যবহার্য থাকার কারণে সরকার পুনঃগ্রহণ করেছেন।

৪৩। নিম্মোক্ত শ্রেণীর জমি বন্দোবস্তযোগ্য খাস কৃষি জমির অন্তর্ভুক্ত হবে এবং ভূমি সংস্কার কার্যক্রমের আওয়ায় ভূমিহীনদের মধ্যে বণ্টন করতে হবে-

(ক) ৮নং রেজিষ্টারের ২য় অংশভুক্ত সকল বন্দোবস্তযোগ্য খাস কৃষি জমি।

(খ) জমিদারী অধিগ্রহণ। ও প্রচাস্বত্ব আইন (১৯৫০) এর ৯২ ধারা মোতাবেক পরিত্যক্ত ও বকেয়া করের দায়ে সরকার কর্তৃক নিলামে ক্রীত জমি।

(গ) রাষ্ট্রপতির ১৯৭২ সনের ৯৮ নম্বর আদেশ মোতাবেক ১০০ বিঘার অতিরিক্ত ব্যক্তি বা সংস্থার মালিকানাধীন সমর্পিত জমি।

(ঘ) নদী বা সমুদ্রগর্ভ হতে জেগে ওঠা চরের জমি, যা সিকস্তি জমি পয়স্তিই হোক বা নতুন চরই হোক।

(ঙ) অন্য যেকোন আইনে সরকারের নিকট সমর্পিত জমি।

(চ) ৮নং রেজিষ্টারের ১ম অংশের অন্তর্ভুক্ত জমি যার প্রকৃতি পরিবর্তিত হওয়ায় কালেক্টর কর্তৃক বন্দোবস্তযোগ্য বলে ঘোষিত হয়েছে।

৪৪। প্রত্যেক ইউনিয়ন ভূমি সহকারী তার এলাকার মৌজা সরজমিনে পরীক্ষা করে নীতিমালার ছকে সকলশ্রেণীর খাস জমির একটি বিবরণী প্রণয়ন করবেন। প্রতিটি মৌজার খাস জমির বিবরণসহ খাস জমি চিহ্নিত একটি স্কেচ ম্যাপ সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর নিকট প্রেরণ করতে হবে এবং এ ভিত্তিতে খাস জমি বন্দোবস্তের কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে।

৪৫। খাস জমি চিহ্নিতকরণ ও উদ্ধারের জন্য একজন সার্ভোয়ার ও একজন চেইনম্যানসহ কয়েকজন কর্মাচারী সমন্বয়ে প্রতি মৌজার কাজে একটি দল নিয়োগ করা যেতে পারে। থানা সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার প্রয়োজনীয় কানুনগো, সার্বেয়ার ও চেইনম্যান প্রদান করবেন। মাঠ জরিপ মৌসুমে জরিপ কাজ যাতে ক্ষতিগ্রস্থ না হয়, সেই দিকে রক্ষ রেখে এ ব্যবস্থা নেয়া হবে এবং প্রয়োজনে ব্যবস্থাপনা ও জারিপ সমন্বয় সভায় কোন সমস্যা দেখা দিলে তা নিরসন করা হবে।

৪৬। সহকারী কমিশনার (ভূমি) উক্ত বিবরণী অফিস রেকর্ডের সহিত তুলনামূলক পর্যালোচনা করে এবং কমপক্ষে এক শতাংশ নমুনাস্বরূপ সরজমিনে তদন্ত করে সত্যতা যাচাই করবেন। তিনি সন্তুষ্ট হলে নীতিমালার ছকে খাস জমি পৃথকীকরণ করবেন।

৪৭। কৃষি জমির তালিকা সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন ভূমি অফিস সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ অফিস, থানা পরিষদ অফিস, সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিস ও থানার নোটিশ বোর্ডে লটকায়ে প্রকাশ করতে হবে এবং কপি স্থানীয় থানা পরিষদ চেয়ারম্যান ও সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড সদস্যকে সরবরাহ করতে হয়।

৪৮। সরকারী/আধা-সরকারী প্রতিষ্ঠানের জমির তালিকা থানা নির্বাহী অফিসার প্রতিস্বাক্ষর করে। কালেক্টরের নিকট প্রেরণ করবেন এবং তিনি সমগ্র জেলার তথ্য সংগ্রহ করে উহা প্রতি তিন মাস অন্তর ভূমি মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করবেন।

৪৯। ৪৭ অনুচ্ছেদের নোটিশ জারি হওয়ার ৭ দিনের মধ্যে কারও কোন আপত্তি থাকলে তিনি থানা নির্বাহী অফিসারের নিকট নির্ধারিত কোর্ট ফি প্রদান করে আপত্তি দায়ের করতে পারবেন। থানা নির্বাহী অফিসার ৩০ কার্য দিবসের মধ্যে সিদ্ধান্ত প্রদান করবেন। থানা নির্বাহী অফিসারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত ঘোষণার ১০ দিনের মধ্যে কালেক্টরের নিকট আপীল দায়ের করতে হবে এবং আপীল দায়ের করার ৪৫ কার্যদিবসের মধ্যে উহা নিষ্পত্তি করা হবে এবং কালেক্টরের আদেশ চূড়ান্ত বলে গণ্র হবে। কালেক্টর এ আপীল নিষ্পত্তির দায়িত্ব অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকগণের ওপর ন্যস্ত করতে পারবেন।

৫০। ৪৬ অনুচ্ছেদে বর্ণিত নোটিশ জারী হওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে আপত্তিহীন শ্রেণী পরিবর্তিত জমির ক্ষেত্রে সহকারী কমিশনার (ভূমি) জনসাধারনের ব্যবহারযোগ্য খাস জমিকে পরিবর্তিত অবস্থায় বন্দোবস্তযোগ্য জমিতে শ্রেণী পরিবর্তনের জন্য প্রস্তাব করবেন এবং আদেশের জন্য কালেক্টরের নিকট নথি প্রেরণ করবেন।

৫১। খাস জমি কারো অবৈধ দখলে থাকলে তাকে উচ্ছেদ করার জন্য থানা নির্বাহী অফিসার/সহকারী কমিশনার (ভূমি) জরুরী ভিত্তিতে মমালা শুরু করবনে। কালেক্টরের অনুমোদনক্রমে আইন মোতাবেক অবৈধ দখলদারকে উচ্ছেদ করা হবে।

৫৩। খাস জমি বন্দোবস্তের ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত শ্রেণীর পরিবারসহ ভূমিহীন পরিবার বলে গণ্য হবে :

(ক) যে পরিবারের বসতবাটি এবং কৃষি জমি কিছুই নেই, কিন্তু পরিবারটি কৃষি নির্ভর;

(খ) যে পরিবারের বসতবাটি আছে, কিন্তু কৃষি জমি নেই অথচ পরিবারটি কৃষি নির্ভর, এবং

(গ) যে পরিবারের বসতবাটি ও কৃষি জমি উভয়ই আছে, কিন্তু উহার মোট পরিমাণ ০.৫০ একরের কম অথচ পরিবারটি কৃষি নির্ভর।

'কৃষি নির্ভর' বলতে এরূপ পরিবার বুঝাবে যার এক বা একাধিক সদস্য কৃষি শ্রমিক হিসেবে অন্যের জমিতে নিয়োজিত আছে কিংবা অন্যের জমি বর্গা চাষ করে।

৫৪। খাস জমি বন্দোবস্তের ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত ভূমিহীন পরিবারসমূহকে অগ্রাধিকার দেয়া হবে :

(ক) নদী সিকস্তির ফলে ক্ষতিগ্রস্থ ও সর্বসান্ত পরিচার যার পুরুষ/মহিলা সদস্যগণ অন্যের জমিতে কৃষি মজুর বা বর্গা চাষে নিয়োজিত।

(খ) শহীদ বা পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধা পরিবার, যার কর্মক্ষম পুরুষ সদস্য কৃষি মজুর বা বর্গা চাষে নিয়োজিত।

(গ) সক্ষম প্রাপ্তবয়স্ক পুত্রসহ বিধরা বা স্বামী পরিত্যক্তা মহিলা।

৫৫। জেলা প্রশাসক স্বীয় জেলাধীন সকল থানার মৌজাওয়ারী ভূমিহীনদের নিকট হতে দরখাস্ত আহবানের একটি সময়সূচী ঘোষণা করবেন। নীতিমালার সংযোজনী-৬ এর ছকে দরখাস্তের সহিত পরিবার প্রধান স্বামী/স্ত্রীর তিন কপি যুগল ছবি দাখিল করতে হবে। সহকারী কমিশনার (ভূমি) দরখাস্ত গ্রহণ ও প্রাপ্তি স্বীকার রশিদ প্রদান করবেন।

৫৬। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ভূমিহীনদের নিকট হতে প্রাপ্ত সকল বৈধ খাস জমি বন্দোবস্তের দরক্ষাস্ত অগ্রাধিকার অনুযায়ী নিম্নোক্তভাবে তালিকাভুক্ত করতে হবে :

(ক) সিকস্তির ফলে সর্বসান্ত পরিবার।

(খ) শহীদ বা পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধা পরিবার।

(গ) ক্ষম পুত্রসহ বিধবা বা স্বামী পরিত্যক্তা মহিলা পরিবার।

(ঘ) কৃষি জমি ও বাস্তভিটাহীন পরিবার।

(ঙ) বসতবাটি আছে অথচ কৃষি জমিহীন পরিবার, এবং

(চ) কৃষি ও বসতবাটিসহ ০.৫০ একরের কম জামির মালিক পরিবার।

৫৭। প্রাপ্ত দরখাস্তসমূহের সম্ভাব্য অগ্রাধিকার তালিকা থানা ভূমি সংস্কার কমিটি বিচেনা করবেন। কমিটির সিদ্ধান্ত সর্ব সম্মতি হওয়া বাঞ্চনীয়। মতদ্বৈততার ক্ষেত্রে সভাপতি ব্যতীত সকল সদস্যের সংখ্যাধিক্যের ভোটে সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে।

৫৮। পিতার জমি থাকলে কোন পুত্রের কর্মক্ষম পুরুষহীন বিধবা যিনি নিজে ক্ষেত মজুর নহে, এরূপ ব্যক্তি বা পরিবারের দরখাস্ত বাতিলযোগ্য হবে।

৫৯। প্রতিটি মৌজার খাস জমির একটি তালিকা এবং ভূমিহীন পরিবারের একটি অগ্রাধিকার তালিকা প্রণয়ন করতে হবে। থানা ভূমি সংস্কার কমিটি ভূমিহীনদের অগ্রাধিকার তালিকা অনুযায়ী প্রাপ্ত জমি বন্টনের সুপারিশ প্রণয়ন করবেন। অগ্রাধিকার তালিকাভুক্ত কোন পরিবার বৈধভাবে খাস জমি দখলে থাকলে তিনি ঐভূমি বন্দোবস্ত প্রাপ্তিতে অগ্রাধিকার পাবেন। যে এলাকার জমি বন্দোবস্ত দেয়া হবে, সেই এলাকার ভূমিহীন পরবার অগ্রাধিকার পাবে।

৬০। নির্বাচিত ভূমিহনি পরিবারকে জমি বন্দোবস্ত প্রদানের জন্য স্বামী ও স্ত্রীর যৌথ নামে বন্দোবস্ত কেইস (মামলা) শুরু করতে হবে।

৬১। বন্দোবস্তের জন্য সালামীর হার একর প্রতি এক টাকা মাত্র।

৬২। সহকারী কমিশনার (ভূমি) জমি বন্দোবস্তের কেইস থানা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে তার সুপারিশসহ কালেক্টরের নিকট প্রেরণ করবেন এবং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক পরীক্ষা করে কালেক্টরের অনুমোদন গ্রহণ করবেন।

৬৩। কালেক্টরের অনুমোদনের পর সংশ্লিষ্ট ভূমিহীন পরিবার প্রধান সালামী ও হাল সনের ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ করে নীতিমালার ছকে মুদ্রিতব্য কবুরিয়াত স্মপাদন করবেন এবং কালেক্টর তা গ্রহণ করবেন এবং স্বাক্ষর প্রদান করবেন। এ কবুলিয়াত রেজিষ্ট্রী করতে হবে, রেজিষ্ট্রেশন ফিস প্রয়োজন হবেনা।

৬৪। বন্দোবস্তকৃত জমি কোনক্রমেই বিক্রয় বা কোনরূপ হস্তান্তর করা যাবেনা। তবে উত্তরাধিকার আইন অনুযায়ী তা হস্তান্তরিত হবে এবং নামজারী করা হবে।

৬৫। বন্দোবস্ত প্রদত্ত জমির বিবরণী ও কবুলিয়াতের একটি কপি স্থানীয় সাবরেজিষ্টারের নিকট প্রেরণ করতে হবে এবং সাবরেজিষ্টার এ বিষয়ে একটি রেজিষ্টার সংরক্ষণ করবেন, যাতে এ জমি পরবর্তি বিস্রয় বা হস্তান্তর না হয় তা নিশ্চিত করবেন।

৬৬। কালেক্টর প্রতি মাসে বন্দোবস্তকৃত জমির বিবরণী জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশের জন্য নিয়মিতভাবে ভূমি মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করবেন।

৬৭। কালেস্টর স্বীয় উদ্যোগে বা কোন সুস্পষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে কবুলিয়াতের শর্ত ভংগজনিত কারণে লিখিত কারণ দর্শায়ে যেকোন বন্দোবস্ত বাতিল করতে পারবেন। কালেক্টরের এরূপ বন্দোবস্ত বাতিল আদেশের বিরুদ্ধে কমিশনারের নিকট আপীল দায়ের করা যাবে এবং তার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।

৬৮। কবুলিয়াত রেজিষ্ট্রেশনের পর সহকারী কমিশনার (ভূমি) বন্দোবস্ত প্রাপ্ত ব্যক্তি/পরিবারের নামে নামজারী করবেন এবং খতিয়ানের কপি বন্দোবস্ত প্রাপককে প্রদান করবেন। খতিয়ানের মন্তব্য কলামে "এই জমি উত্তরাধিকারসূত্র ব্যতীত হস্তান্তরযোগ্য নয়" কথাটি লিপিবদ্ধ করতে হবে।

৬৯। স্বামী বা স্ত্রী উভয় নামে বন্দোবস্তকৃত জমির ক্ষেত্রে স্বামী-স্ত্রী বিবাহ বিচ্ছেদ হলে বন্দোবস্ত বাতিল বলে গণ্য হবে এবং জমি খাস হয়ে যাবে। তবে পুনঃবন্দোবস্তের ক্ষেত্রে তাদের সক্ষম পুত্র সন্তান অগ্রাধিকার পাবে। স্বামী প্রথমা স্ত্রীর অনুমতি লয়েও ২য় স্ত্রী গ্রহণ করলে তখন ২য় স্ত্রী বন্দোবস্তকৃত জমিতে কোন অংশ পাবেনা। স্বামী যদি স্ত্রীর প্রতি নারী নির্যাতনমূলক কোন অপরাধ করেন, তবে বন্দোবস্তকৃত জমিতে তার অধিকার রহিত হয়ে যাবে এবং সম্পূর্ণ জমির মালিকানা স্ত্রীর ওপর বর্তাবে।

৭০। বন্দোবস্ত প্রাপক পরিবারের নিজস্ব জমিসহ বন্দোবস্ত জমির পরিমাণ কোন অবস্থাতেই সেচ সুবিধাপ্রাপ্ত এলাকায় ১.৫০ একর এবং সেচ সুবিধাহীন এলাকায় ২.০০ একরের বেশী হবেনা।খাস জমি বন্দোবস্তের ক্ষেত্রে সেচ সুবিধাপ্রাপ্ত এলাকায় ১.৫০ একর, সেচ সুবিধাহীন এলাকায় ২.০০ একর জমির সমান বিবেচিত হবে।

৭১। ২০ একর বা ততধিক খাস জমি একত্রে থাকলে তা ভূমিহীন কৃষক সমবায় সমিতির সদস্যদের সহিত বন্দোবস্ত দিতে হবে। এরূপ ক্ষেত্রে বসতবাড়ীর জন্য স্বতন্ত্রভাবে নির্দিষ্ট স্থানে সদস্য প্রতি অতিরিক্ত অনধিক ৫ কাঠা জমি বন্দোবস্ত দেয়া যেতে পারে।

৭২। ৮নং রেজিষ্ট্রারের ১ম ভাগের অন্তর্ভুক্ত সর্ব সাধারণের ব্যবহারযোগ্য জমির শ্রেণী পরিবর্তনে কালেক্টর বিশেষভাবে সতর্ক থাকবেন। জমির শ্রেণী পরিবর্তনের সময় লক্ষ রাখতে হবে যে, কোন অবস্থাতেই যেন গোচারণ ভূমি বন্দোবস্তযোগ্য জমিতে পরিবর্তিত না হয। গোচারণ ভূমির অভাবে গ্রামাঞ্চলে পশুসম্পদ সংরক্ষণ ও বৃদ্ধির সংকট দেখা দিয়েছে।

 

সূত্র: বাংলাদেশের উপজাতিদের আইন- রামকান্ত সিংহ, ২০০৩

 

সৌজন্যে: প্যান লোকালাইজেশন প্রোজেক্ট